গাড়ি থেকে নেমে মূল ভবনের দিকে হাটতে লাগলাম আমি, গাজ্জালী ও ডঃ বাদায়ুনী। বাগানের বা দিক থেকে একটা ডাক আসল (গাজ্জালীকে ডাকা হল)। তাকিয়ে দেখি পাইপ দিয়ে গাছে পানি দিচ্ছেন আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব, বিনয়ী সেই মহামানব। হ্যাঁ, ডঃ মাহাথির মোহাম্মদ ...
কফি চাষ বিস্তারিত :
শীতপ্রধান প্রতিটি দেশেই কফির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কফি গাছ দেখতে অনেকটা বেলি ফুলের গাছের মতো।
তবে তা উচ্চতা ও ঘেরের দিক থেকে বেশ বড়। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৬শ' ফুট ওপরে যে কোন মাটিতে কফি চাষ করা সম্ভব। তবে পাহাড়ি, উপত্যকা ও ঝরণার পাশের জমি এবং যেসব জমিতে লবণাক্ততা নেই সেসব জমি কফি চাষের উপযোগী। এছাড়া রাবার বাগানের ফাঁকে ফাঁকে লাগানো যাবে কফির চারা। বাড়ির আঙ্গিনা, ফুলের টব কিংবা বাড়ির ছাদেও কফির চাষ সম্ভব।
চারা রোপণের দুবছরের মধ্যে কফির গোটা সংগ্রহ করা যাবে। কফির গোটাগুলো দেখতে অনেকটা গমের মতো। তবে তা আকারে একটু বড়। বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বছরে দুবার গাছ থেকে গোটা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। একটি কফি গাছ থেকে প্রায় ৩০/৩৫ বছর ধরে ফল পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কফি চাষের ক্ষেত্রে প্রতিটি গাছের জন্য খরচ হবে মাত্র এক থেকে দেড়শ' টাকা। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে আধা কেজি বা তারও বেশি কফির গোটা বা ফল পাওয়া যাবে।
কফি গাছ থেকে শুধুমাত্র পানীয় কফিই নয়, একে সহায়ক হিসেবে নিলে এ কফি গাছের অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে মধু ও শ্যাম্পুও তৈরি করা যাবে। মধু চাষের জন্য কফি বাগানে কয়েকটি কফি গাছের মধ্যেকার খোলা নির্দিষ্ট স্থানে একটি কাঠের তৈরি মৌমাছির জন্য বিশেষভাবে ছোট আকারে তৈরি বিশেষ বাক্স বসাতে হবে। কফি গাছে ফুল এলেই মৌমাছিরা সেখানে আসবে।
ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে কাঠের তৈরি ওই বাক্সে তারা বাসা বাঁধবে। একটি কফি গাছের ফুল থেকে প্রতিবারে একশ' গ্রাম মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ওই গাছের উপকরণকে প্রক্রিয়া করে উন্নতমানের 'শ্যাম্পু' তৈরি করা যাবে। যা করতে পারলে উন্নত মানের শ্যাম্পুর জন্য আর বিদেশমুখি হতে হবে না। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে কফির কেজি তিন হাজার টাকা থেকে আট হাজার ২শ' টাকা পর্যন্ত।
খুব অল্প সময়ে কফি তৈরি করা যায়। কফির বিনগুলো শুকিয়ে গুড়ো করে তাৎক্ষণিক তৈরি হয়ে যায় কফি। এ কফি বাজারের সাধারণ কফির চেয়ে বহুগুণ সুস্বাদু। কারণ বাজারের কফিতে নানা কেমিক্যাল ও প্রিজারবেটিভ থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আর নিজেদের চাষকৃত উন্নতমানের এ কফি স্বাস্থ্য ভালো রাখবে।
খাগড়াছড়ি সদর উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. নাছির আহাম্মদ চৌধূরী জানান, অল্প সময়ে কফি চাষের ফলন পাওয়া যায়। টানা ৩০ বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম কফি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। ঢাকার একটি দৈনিক থেকে জানা গেছে, ৫ বছর আগে ভারতের দার্জিলিং থেকে অ্যারাবিয়ান জাতের দুটি কফির চারা নিয়ে এসেছিলেন কক্সবাজার জেলার জাহানারা এগ্রো ফার্মের পরিচালক জাহানারা ইসলাম । পরীক্ষামূলকভাবে একটি চারা বাড়ির আঙ্গিনায় তিনি রোপণ করে শুরু করেন কফি চাষের অগ্রযাত্রা।
তিনি তার টবের মধ্যে রাখা কফির চারার পরিচর্যা করে আস্থাবান হয়ে উঠতে থাকেন এ চাষের ব্যাপারে। অবস্থা ভালো দেখে সাধারণ প্রক্রিয়ায় ওই দুটি চারা থেকে আরো কিছু চারা উৎপাদন শুরু করেন তিনি। পর্যায়ক্রমে এ প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৫ হাজার কফির চারা উৎপাদন করা হয়েছে ইতোমধ্যেই।
কফি চাষের সম্ভাবনা নিয়ে কয়েকটি দৈনিক প্রতিকার প্রতিবেদন
দেশেই হবে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ
জুমচাষ ছেড়ে কফি চাষ করেছে বম আদিবাসীরা
রামগড়ে কফি চাষে সফল কৃষক নুর হোসেন। পাহাড়ের ভুমি কফি চাষের উপযোগি -ডঃ মহব্বত উল্যাহ
কফির চারা সংগ্রহ করার জন্য ঢাকার খামারবাড়ি যোগাযোগ করা যেতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।