হোমিওপ্যাথি ওষুধ একধরনের জিনিস বটে। কিমাশ্চর্যম জিনিস। অনেকের অনেক দূরারোগ্য ব্যাধিও এই ওষুধে সেরে যায়। হতে পারে সেটা প্লাসিবো, হতে পারে সেটা সত্যিই ওষুধের গুণ। তবে আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে আর্নিকা নামক আঘাত ও আঘাতের ফলে সৃষ্ট ব্যাথা নিরাময়ক ওষুধটি সত্যিই খুব কার্যকর।
আমার নিজের ক্ষেত্রেই এটা কয়েকবার কাজ করেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি ওষুধ খুব ভালভাবে কাজ করে। আসলে হোমিওপ্যাথিতে রোগ নির্ণয় করে সঠিক ওষুধটি বের করাটা একটা চরম কঠিন কাজ। হাজার হাজার লক্ষণ আর একই লক্ষন একাধিক ওষুধে। এর থেকে পার্থক্য করে সঠিক ওষুধ বের করতে খবর আছে।
যত যাই হোক না কেন, আধুনিক মেডিক্যাল বিজ্ঞানই আমাদের শেষ ভরসা। তবে কখনও কখনও "পুরান চাল ভাতে বাড়ে" প্রবাদটি সত্য করার জন্য আধুনিক মেডিক্যাল বিজ্ঞানও ব্যর্থ হয়। যেমনটি হয়েছিল আমার জন্ডিসের ক্ষেত্রে। প্রায় তিন মাস ভুগেছি। বহু বিশ্রাম আর বহু ওষুধ খেয়েছি।
কোন লাভ হয় নাই। শেষ পর্যন্ত এক কবিরাজ মহিলার দাওয়া খেয়ে তীব্র বমি আর পুনঃপুনঃ তরল নির্গমণ করে শরীর পরিষ্কার হয়। বমি আর তরলের রঙ ছিল হলুদ। বমির সাথে বের হয় এক চাকা পুরাতন জমাট বাধা রক্ত। পরের সপ্তাহেই আমি সুস্থ হয়ে উঠি।
অথচ এই মহিলার কথা আমাকে আগেই বলা হয়েছিল। আমি আধুনিক মেডিক্যাল বিজ্ঞানের উপর বিশ্বাস ও ভরসা রেখে, প্রাচীন কবিরাজী বিদ্যাকে ভন্ডামী ও তুচ্ছ জ্ঞান করে যাই নি। আধুনিক মেডিক্যাল বিজ্ঞান যখন আর পারল না, ডুবন্ত মানুষের শেষ ভরসা খড়কুটা হিসেবে তখন ঐ কবিরাজের দাওয়া খেতেই গেলাম।
পৃথিবী রহস্যময়। বিজ্ঞান মানে অবিশ্বাস করা, পরীক্ষা করা, প্রশ্ন করা।
আমি ভুল করেছিলাম মানবজাতির একটা অংশের গড়ে তোলা বর্তমান মেডিক্যাল শাস্ত্রের উপর অগাধ বিশ্বাস রেখে। আমি বিজ্ঞানের পথ থেকে সরে দাড়িয়েছিলাম। অযথাই তিনটা মাস ভুগলাম। প্রশ্নের মুখ থেকে কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না। যতই থাকুকনা কেন তার প্রতিপত্তি।
একসময় এরিষ্টোটলকেও মানুষ ভক্তিভরে পূজো করত, তখন এরিষ্টোটলই ছিল বিজ্ঞান। কখনই পূজো করা যাবে না, এমনকি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে প্রাতপশালী জ্ঞানকেও রাখতে হবে সর্বদা প্রশ্নের মুখোমুখি। যারা বলবে প্রশ্নের দরকার কী, প্রায় সবটুকুই তো প্রমান হয়ে গেছে, বাকীটুকুও হয়ে যাবে, তারা সেই পূজারির দল যারা বিজ্ঞানের পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করেছে মানব জাতির ইতিহাসে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।