আমি অন্ধ্........মূর্খ....জ্ঞানহীন....
---জ্বী আসেন । বসেন। বলুন আপনার কি সমস্যা।
- আমার.................................................।
-- ও।
এটা কোন সমস্যাই না। আমি আপনাকে দুইটা ওষুধ দিচ্ছি। সেবন করতে থাকুন।
--এই- (কম্পাউন্ডারকে) দুই বেলার জন্য পুঁড়িয়া আর গুলি দাও।
-- ডাক্তার সাহেব।
কতদিনের মধ্যে আমার প্রবলেমটা সলভ হবে ?
- কোন চিন্তা করবেন না। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে আপনার অসুখ সেড়ে যাবে। ১০০% সিউর।
-- ঠিক আছে। কত দিতে হবে ?
- বেশী না।
মাত্র পঞ্চাশ (৫০) টাকা।
মনে মনে ভাবি আমার এত বড় কঠিন সমস্যা মাত্র ৫০ টাকায় ১০০% ভালো হয়ে যাবে ? কোন মহাফাপড়ে পড়লাম। উপরওয়ালাই ভালো জানেন।
- এই নিন আমার কার্ড। এখানে একটা সিরিয়াল নাম্বার আছে।
যদি কোন সমস্যা হয় তবে আমাকে ফোন দিবেন।
-জ্বী। মনে মনে ধন্যবাদ জানিয়ে "ফাহিম হোমিও হল" থেকে বেড়িয়ে আসলাম।
৭৫ ঘন্টা পর।
-হ্যালো ডাক্তার সাহেব।
আমি ........... সিরিয়াল নাম্বার ৯৮৬১। আমার সমস্যাটা তো সলভ হইলো না।
- জ্বী। ও তাই । ঠিক আছে আপনি একটু কি আমার চেম্বারে আসতে পারবেন ?
-জ্বী।
আমি আগামী ৩০ মিনিটের মধ্যেই আসতেছি।
-------
- -আসলে যে ওষুধ টা দিয়েছি তাতেই তো সেড়ে যাওয়ার কথা। ঠিক আছে। আপনাকে একটু হাই পাওয়ারের ওষুধ দিচ্ছি। এটা সেবন করুন।
এইবার অসুখ না সেড়ে যাবে কোথায়।
-- ডাক্তার সাহেব গত ওষুধেও তো আপনি একই কথা বলেছিলেন। এইবার সাড়বে তো ?
--১০০% সাড়বে। আগেরটা ছিল প্রাথমিক ডোজ। এইটা দ্বিতীয় ডোজ।
এটাতে সাড়বেই।
--তা কতদিনের মধ্যে সাড়ার সম্ভাবন আছে ?
--৭২ ঘন্টার মধ্যে সেড়ে যাবে।
--যদি না সাড়ে তবে কি আরও কোন ওষুধ দিবেন?
এইবার একটু বিরক্ত হয়ে.....
-আরে ভাই আমি ডাক্তার । আমি বলছি ১০০% সাড়বে । না সাড়লে আমি রিস্ক।
---জ্বী ঠিক আছে। তা প্রাইস টা কত ?
--১১০ টাকা।
১১০ টাকা দিয়ে খয়েরি কালারের কিছ তরল সমেত মোটামোটি সাইজের একটা বোতল নিয়ে ডাক্তার চেম্বার থেকে বের হলাম।
৭০ ঘন্টা পর অসুখের কোন প্রকার উন্নতি না দেখে ফোন দিলাম।
-হ্যালো ডাক্তার সাহেব।
--জ্বী । ও....ভাই। কি খবর ?
--ডাক্তার সাহেব..... আমার কোন পরিবর্তন নাই। আগের চেয়ে এখন তো আরও খারাপ।
---ঠিক আছে আপনি একটু আমার চেম্বারে আসেন।
ডাক্তার সাহেবের চেম্বারে গিয়ে দেখি চেম্বার ফাকা। ডাক্তার নাই। কম্পাউন্ডার বাইরে বসে চা খাচ্ছে। আমাকে দেখে একটা ক্লোজআপ হাসি দিয়ে বল্ল -
ডাক্তার সাহেব একটু বাজার করতে গেছে। আপনাকে বসতে বলছে।
আমি আবার ডাক্তার এর মোবাইলে ট্রাই মারলাম। বন্ধ।
পাক্কা ৪৭ মিনিট পর ডাক্তার সাহেব তার চেম্বারে পদার্পন করলেন।
ইতিমধ্যে আরও জনা পাচেঁক রোগী লাইন দিয়ে বসে আছে।
আমাকে একটু বসতে বলে উনি অন্য রোগী দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
আমার সুযোগ যখন আসলো -- তখন...
---আসলে এই ওষুধ টা তো ১০০% কাজ করার কথা। কিন্তু কেন যে হলো না বুঝতে পারছি না।
-আচ্ছ- আপনার হার্টের কোন প্রবলেম আছে ?
--না।
--ডায়বেটিকস আছে ?
--না।
--গ্যাসট্রিক আছে ?
--না।
ডাক্তার সাহেব কিঞ্চিত চিন্তিত।
--মাথা ঘুড়ায় ?
--না।
তাহলে তো ওষুধ টা কাজ করার কথা ছিল। আচ্ছ ঠিক আছে কোন চিন্তা করবেন না--আমি আপনাকে অন্য আর একটা ওষুধ দিচ্ছি- তবে এটার দামটা একটু বেশি। আর এটা আমার কাছে এই মুহুর্তে নাই।
অন্য যায়গা থেকে এনে দিতে হবে।
-- ঠিক আছে। দাম কোন প্রবলেম না। অসুখ সাড়বে তো ?
--- এইটাতে সাড়বেই সাড়বে। আমার নিজেরও হয়েছিল।
আমি ঐ ওষুধটাই সেবন করে সুস্থ হয়েছি।
--তাইলে আমাকে আগের দুইটা ওষুধ দিলেন কেন ? আমাকে তিন নম্বরটাই দিতেন।
---নারে ভাই । এইটা সবাইকে দেওয়া যায় না।
--কত দাম?
--৭৪০ টাকা।
--ঠিক আছে। এই নিন ৭০০ টাকা। ওষুধ টা কতক্ষন পর পাবো ?
---আপনি ১ ঘন্টা পর আসেন। আমি আনিয়ে রাখছি।
---------------------
--ডাক্তার সাহেব।
এটাতে সাড়বে তো ?
--আগের ওষুধগুলো ছিলো হোমিও প্যাথির । এটা দেখেই বুঝতে পারছেন এটা এলোপ্যাথি। সো এটাতে সাড়তেই হবে।
আমাকে কাচের ছোট শিশির মধ্যে সিডাক্সিন আকারের চারটা ট্যাবলেট দিয়ে ডাক্তার সাহেব আমাকে আসতে বললেন।
---ডাক্তার সাহেব- আনুমানিক কতক্ষণের মধ্যে অসুখটা সেড়ে যাবে ?
--২৪ ঘন্টার মধ্যে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
২৪ ঘন্টা পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।