https://www.facebook.com/tanvir.mh আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এখন সামরিক শাসন চলছে। হুট করে এক নিয়ম বের করবে আর শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ছোট ছেলেমেয়েদের মারধর করবে। বাহ বাহ।
নাকি সবাই বলবে এটাই তো ভালো এর থেকে ভয়াবহ হবার যোগ্যতা আছে এই দেশের যে কোন সরকারের যে কোন বাহিনীর।
এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট কয়েকদিন আগেই বের হল।
তারা এখন কলেজে ভর্তি হয়েছে মাত্র। মেডিক্যালের ভর্তির বিষয়ে তারা জানতে চায় অনেক কিছুই। কারণ তারা এখনও জানেনা এই নিয়ম তাদের উপরেও বর্তাবে। অনেকে গোল্ডেন প্লাস পায়নি,অনেকে শুধু একটা বিষয়ে প্লাস পায়নি। তারাও কিন্তু মানসিক ভাবে প্রস্তুত মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা দিবে নিজেকে ভালো করে প্রস্তুত করছে।
কিন্তু তারা কি জানে শুধু একটা বিষয়ে প্লাস পায়নি বলে সে মেডিক্যালে পড়ার স্বপ্ন আর দেখতেই পারবেনা? সে যখন এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তখন কি তাকে এই নিয়মটা জানানো উচিত ছিলনা? তাদেরকে কেন আমরা হতাশ করে দিবো এই কলেজে পড়ার সময়েই?
হা ৩মাস পড়ে যে পরীক্ষা দেয়া হয় তাতে অনেক ভালো ছাত্র বাদ পড়ে যায়। ১২ বছরের সাধনা এই ৩ মাসের কোচিং সেন্টারের দ্বারা মুখস্থ বিদ্যার কাছে অকেজো হয়ে দাড়ায়।
“আর ভর্তি পরীক্ষা নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
১২ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভায় মেডিকেল কলেজসমূহে পরীক্ষাবিহীন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তির নতুন সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আবেদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক— দুই পরীক্ষা মিলিয়ে কমপক্ষে জিপিএ ৮ থাকতে হবে। জিপিএ ৭ প্রাপ্ত বিদেশী শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক নিম্নোক্ত ভাষ্য প্রদান করেন—
এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় যারা ভালো করেছে, তাদের আর নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দরকার নেই। এতে কোচিং বণিজ্যের রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে। গত বছরের পরীক্ষার্থীরাও এবার আবেদন করতে পারবে।
এ প্রক্রিয়ায় ভর্তি করা হলে গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। কারণ যারা ভাল, তারা তো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকেই ভাল করেছে।
”
সিদ্ধান্ত হল ভর্তি পরীক্ষা হবেনা। যাদের রেজাল্ট ভালো তারাই নাকি চান্স পাবে। আচ্ছা মন্ত্রী মহোদয় ২ হাজার জন কে আপনি কিভাবে বের করবেন এত হাজার হাজার এ প্লাসের মাঝখান থেকে?আপনার কথা শুনে মনে হল এ প্লাস পেয়েছে ৬হাজার ,৩ তাসের খেলা খেলে ১ জন কে নিয়ে নিবেন। আজকের প্রথম আলোতে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ১২ টি মানদণ্ডে বাছাই করার একটা নকশা দেখলাম।
১>এসএসসি ও এইচএসসিতে সমান জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওই দুটি পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় ছাড়া যাঁরা এগিয়ে থাকবেন তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন।
২>শিক্ষার্থী কোন বছর এইচএসসি পাস করেছেন, সে ক্ষেত্রে ২০১১ সালের চেয়ে ২০১২ সালে উত্তীর্ণরাই অগ্রাধিকার পাবেন।
৩>এইচএসসিতে চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে জিপিএতে ভালো করা প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৪>এসএসসি ও এইচএসসিতে চতুর্থ বিষয়সহ যাঁরা ভালো করেছেন তাঁরা অগ্রাধিকার ঠিক করার পরবর্তী ধাপে গুরুত্ব পাবেন।
৫>এইচএসসিতে চতুর্থ বিষয়সহ কারা ভালো করেছেন।
৬>এর পরও জিপিএ সমান হলে এইচএসসির পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের গ্রেড পয়েন্টের (জিপি) যোগফল গুরুত্ব পাবে।
৭>তাতেও না হলে এইচএসসিতে জীববিদ্যার জিপি দেখা হবে।
৮>তারপর এইচএসসিতে ইংরেজির জিপি।
৯>এতেও সমান হলে এসএসসির পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যার জিপির যোগফল গুরুত্ব দেওয়া হবে।
১০>তারপর এসএসসির জীববিদ্যা
১১> তাতেও সমাধান না হলে এসএসসির ইংরেজির জিপি দেখা হবে।
১২>সবশেষ মানদণ্ড হিসেবে রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীর বয়স।
এ ক্ষেত্রে যাঁর বয়স বেশি তিনিই অগ্রাধিকার পাবেন।
অনেক ভালো লাগলো। কিন্তু এত কষ্ট করে উপরের ১১ টি পয়েন্ট বের করার কি দরকার ছিল?পত্রিকার কাগজের জায়গাটা শুধু শুধু ভরে গেলো আর আপনারাও চিন্তা করে অনেক ক্যালরি খরচ করলেন।
গোল্ডেন এ প্লাস যারা পেয়েছে তাদের সংখ্যা জেনে আপনারা এই কাজটি করেছেন? হাজার হাজার গোল্ডেন এ প্লাস পাইপ লাইনে বসে আছে আর আপনারা কথা বলতে আসছেন কে ইংরেজিতে এ প্লাস পেল আর কে জীববিজ্ঞানে এ প্লাস পেল। হাস্যকর।
কিন্তু শেষ পয়েন্ট তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১১টা পয়েন্টেও যদি ড্র হয় কারণ আপনারা জানেন ড্র হবেই তখন বয়স দেখে ভর্তি করে দিবেন। সবাই মিষ্টি নিয়ে বাসায় আসবে আমার ছেলের বয়স বেশি আমার ছেলে ডাক্তার বলে বিজয় উল্লাস করবে। কি সুন্দর একটা মুহূর্ত।
এই তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীদের মানদণ্ড বিচারের প্রক্রিয়া? মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের অনূর্ধ্ব ১৯ বাচাই হচ্ছে।
এই পয়েন্টগুলী যদি অব্যাহত রাখতে চান তাহলে অন্তত ৩টি বছর আসুন আমরা অপেক্ষা করি। হটাত করে একটা নিয়ম বের করে লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের জীবনটাকে নিয়ে খেলবেননা। কোচিং সেন্টারের উপর ক্ষোভ ছোট ছোট বাচ্চাদের উপর দেখাতে পারেন না।
আর ৮০ পেলেই এ প্লাস,২০ টি নাম্বার কেন জমিয়ে রেখেছেন?কে সত্যিকারের মেধাবী তা জানার আর কোন উপায় রইলনা। যে ৯৫ পাচ্ছে সেও এক যে মুখস্থ করে ৮০ পাচ্ছে সেও এক।
৮০>৮৫
৮৫>৯০
৯০>৯৫
এভাবে গ্রেড গুলীকে উপরে নেয়া উচিত তা না হলে বয়স দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা কেন তারপর বাবার বয়স দিয়েও ভর্তি করাতে হবে সামনের সময়ে।
আমাদের গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। তাই একটু সময় নিন। হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন সমাধান আসবেনা। গায়ের জোরে অনেক কিছুই করতে পারবেন।
পুলিশ দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করে দিতে পারবেন। এই বছর যারা এইচএসসি দিলো গতবছর যারা দিয়েছে তাছাড়া যারা এখন কলেজে পড়ছে তারা কেউ বিষয়টা আগে থেকে জানতোনা। তাদের সাথে বড় একটা অবিচার হবে যদি এইবার থেকেই এই নিয়মটা প্রয়োগ করেন। অন্তত ৩ টা বছর সময় নিন। এক সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ হবে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ হবে, শিক্ষার্থীরা শুধু ৮০ পাবার জন্য পড়বেনা, তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী নাম্বার পাবে জাতীয় পরীক্ষা গুলীতে এটাই আমাদের সবার চাওয়া।
তানভীর মাহমুদুল হাসান
২৯/৮/২০১২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।