আন্দোলনে সাধারণের অংশগ্রহন ব্যপক পরিলক্ষিত হয়েছে, ভাঙচুর ভালই হয়েছে তবে জ্বালাও-পোড়াও তেমন হয়নি। নেতৃত্বের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে এবং তার ফলে আন্দোলন এলোমেলো ভাবে হয়েছে। আমাদের মত বৃদ্ধদের চেয়ে চেয়ে শুধু ভুল গুলোই দেখতে হয়েছে। আগের মত আর রক্তে আগুন ধরানো জোয়ার ছেলেপুলেদের মাঝে দেখলাম না।
তবে সবাই এখন ক্যামেরার চোখে আন্দোলন ফুটিয়ে তুলতেই ব্যস্ত।
তাদের রক্তে আগুন ধরে শুধু ক্যামেরার ফ্ল্যাশ কিংবা রেকর্ডের উপলক্ষ্য দেখা মাত্র। সহমর্মিতা, প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবী জোরদারের আন্দোলনকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম। ব্যাক্তি প্রতি হিংসামূলক কাজই বেশি করেছে। কিছু রাস্তার ভাংচুর সৈনিকদের দেখলাম বিলবোর্ড, পুলিশ বুথ, কাটাতারের বেড়া, লোহার খুটি, সাইনবোর্ড ভাঙার প্রবণতাই বেশি। যাতে সবাই চলে গেলে এই সম্পদগুলো ভাঙারির দোকানে বেচে দেয়া যায়।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের নিশ্চুপ ভুমিকা কিছুটা হতাশ করেছে। তাদের উচিত ছিল আন্দোলনকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং এই প্রতিবাদ জোরালো করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিজেদের অনেক দিনের দাবী "ক্যাম্পাসে বহিরাগত গাড়ী বন্ধের দাবী জোরদার করা"। তবে ধন্যবাদ দিতে হয় পুলিশের কিছুটা শালীন আচরনের জন্য। ছাত্ররা বিপদে, ফাঁদে পা দেয়া সত্তেও বেচে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্বাক আচরন হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ঝুকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
তারা খুব তড়িঘড়ি করে তৌহিদের লাশ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েই নিজেদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে।
কাটাবন মোড়ে ছাত্রটি যদি পায়ে গুলিবিদ্ধ না হয়ে কোন স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাত করত এবং তার মৃত্যু হত তাহলে এর দায় কে নিত? কেইবা গুলি করলো? কি উদ্দেশ্য গুলি করেছে?
আন্দোলন, প্রতিবাদ, এই হিংস্রতার পথ অনেক নির্মম। আমি দেখেছি যাত্রীবাহী অনেক গাড়ীতে লাঠিসোটার আঘাতে ভীতসন্ত্রস্তদের চোখ। তারা নেমে যাওয়ার আগেই আঘাতে চুরমার হয়ে গেছে বাস, মাইক্রো, প্রাইভেটকার, সিএনজি। যাত্রীদের অনেকেই আহত হয়েছেন, দিগ্বিদিক ছুটেছেন আতংকে, চিৎকার করেছেন ভয়ে, রক্তাক্ত হয়েছেন অনেকেই।
রক্তের বদলা বক্তেই নেয়ার এই প্রবনতা ভয়ঙ্কর।
চাই নিরাপত্তা, চাই সচেতনতা। আর কত মৃত্যু হবে লাইসেন্স বিহীন এই চালকদের হাতে? আর কত রক্ত ঝরলে প্রশাসন মেধাবীদের প্রাণনাশের এই খেলা বন্ধ করবে? দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আইনের সংস্কার চাই? অপরাধের শাস্তির বিধান কঠোর করা হোক যাতে চালকদের টনক নড়ে।
রূপকথার সে গল্পের মত যেখানে রাজা স্বপ্নে দেখেছে পুকুরের জল উঠাতে সাত জন মানুষকে কুরবানী দিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ সে মৃত্যুকুপে পরিণত হয়েছে, এখানে প্রতি বছরতো বটেই, এখন প্রতি মাসেই কাউকে না কাউকে মরতেই হচ্ছে।
আর কত মৃত্যু চাই তোমার? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।