আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হারাধনের ধুতি কেলেঙ্কারি [নেহায়েতই রম্য পোস্ট]

কত কিছুই তো লিখলাম !! গ্রামের নাম সুবাসপুর। নামে সুবাস থাকিলেও সেই গ্রামের এক কলঙ্ক ছিল। কোন এক কারণে সেই গ্রামে প্রতিদিন মাঝরাত্তিরে ব্যাপক কটু গন্ধ পাওয়া যাইত, কিন্তু কেহ এর কোন উৎস খুঁজিয়া পাইত না। এর হেতু কি তাহা নিয়া লোকমুখে যা শোনা যায় তা হল এই- এই সুবাসপুরেই বিবাহ করিয়াছিল হারাধন। একদা নতুন বিবাহের পর প্রথমবারের মতন হারাধন শ্বশুরালয়ে গমন করিল।

। তো প্রথম রাত্তিরে হারাধন শাশুড়ির হাতের রান্না ভরপেট খেয়ে ঘুমাইতে গেল। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় অতিমাত্রায় আহারের ফলে তাহার উদরে ব্যাপক মাত্রায় আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত সম বেদনা শুরু হইল; সেকি জ্বালা !!! তাতে যেন উদরের বায়ু আটকে রাখা হারাধনের জন্য দুষ্কর হইয়া পড়িল। নতুন জামাই, প্রথম রাত্রেই শ্বশুরালয়ে আসিয়া বায়ুত্যাগ আরম্ভ করিয়াছে, তাতে লোকজন কি মনে করিবে তাহা নিয়াই হারাধন ব্যাপক চিন্তিত হইয়া গেল । কোনমতে টুঁ শব্দটি না করিয়া পাশের বউকে না জাগাইয়া পা চাপিয়া হাঁটিয়া সদর দরজা খুলিয়া প্রকৃতির কোকিলকণ্ঠী ডাকে সাড়া দিবার জন্য বাহির হইয়া গেল।

উঠোনে পা রাখিয়াই হারাধন,“আঃ” !!! করিয়া সকল বায়ুচাপ মুহূর্তেই হাওয়ায় মিলাইয়া দিল ! অতঃপর উঠোনের কোণে বাঁশবাগানের মুখে নবনির্মিত একখানা শৌচাগারে দৌড় লাগাইল ! সেই গ্রামেই থাকিত এক বদ্ধ পাগল; তার আসল নাম ছিল জগা !! কিন্তু লোকে তাহাকে াগা পাগলা বলে ডাকিত; কারণ সে নাকি প্রতি মাঝরাত্তিরে মানুষের শৌচাগারের আশপাশে ঘোরাঘুরি করিত, ফাঁকা থাকিলে উহাকে ভর্তি করিয়া ব্যবহারের অযোগ্য করিয়া ভাগিয়া যাইত !! সেই রাতেও াগা পাগলা তার কুকর্মসম্পাদনের নিমিত্তে বাহির হইয়াছিল। পথিমধ্যে হারাধনের শ্বশুরালয়ের নিকটে আসিয়া উপস্থিত হইল । এদিকে প্রকৃতির ডাকে হারাধন এমনই মগ্ন হইয়া পড়িয়াছিল যে তাহার সাথে থাকা ঘটিটি যে জলশূন্য তাহা বেমালুম ভুলিয়া গেল। হঠাৎই তাহার চক্ষে পড়িল, বাঁশের আগায় ঝোলানো তাহার নতুন কেনা ধুতিটি লাপাত্তা !! হারাধন এমনই চমকাইয়া উঠিল যে আরেকটু হইলেই শৌচাগারে ব্যাপক দুর্ঘটনা ঘটিয়া যাইত ! ঠিক এমন সময় হারাধনের কানে আসিল –- -“ ওখানে কে রে” ? -“আজ্ঞে আমি” ! -“আমি কে?” -“আজ্ঞে হারাধন, এই বাড়ির নতুন জামাই”! -“তা এখানে কি করা হচ্ছে?” সব নিশ্চুপ, কোন সাড়াশব্দ নেই। -“ জলের টান পড়েছে বুঝি?” জগা শুধায়।

হারাধন ঘটির দিকে তাকাইয়া চমকাইয়া উঠে, ভয়ে তাহার সারা শরীর কাঁপিতে থাকে ! -“ তোমার ধুতিটি আমি নিলাম, আমার পছন্দ হইয়াছে” - “ না না না, তবে আমার কি হবে? ” হারাধন আরেকবার চমকাইয়া ওঠে ! -“ সে আমি কি জানি ??” ধমকাইয়া ওঠে জগা! -“ আমাকে বাঁচাও, নইলে শ্বশুরবাড়িতে আমার ইজ্জত থাকিবে না” ! -“ তা তো দেখতেই পাচ্ছি, উঠোনে তো কাল দুপুরের আগে কেউ নিঃশ্বাস নিতে পারিবে বলে তো মনে হয় না !” আবার সব চুপ !! -“ তোমার ধুতি আর জল আমি দিতে পারি, তবে এক শর্তে” ! -“ কি শর্ত” ? - “ আমার সাথে গান গাইতে হবে”! - “ কি গান” ? তখন জগা সুর করিয়া গাইয়া উঠিল - “ সেদিন দু’জনে েগেছিল বনে, **বার পানি ছিলো না” !! -“ না না এ আমি গাইতে পারব না” ! লজ্জিত হারাধন বলিয়া ওঠে। - “ তবে থাক তুমি ধুতিছাড়া, জল ছাড়া চলিবে কেমনে ?” - “ আচ্ছা , আমি রাজি, তবে তাড়াতাড়ি আমাকে ছাড়িয়া দিবে কিন্তু, কেমন?” -“ সে দেখা যাবে, গাও” ! হারাধন তখন কর্কশ কণ্ঠে গাহিয়া ওঠে; জগা চিৎকার দেয়- “আরও জোরে, নয়ত ধুতি পাবে না” হারাধন বিকট সুরে কেঁদে ওঠে – “ সেদিন দু’জনে েগেছিল বনে, **বার পানি ছিলো না” !! জগা পলাইয়া যায়, আর হারাধনের সে রাতে কি হইয়াছিল তা কেউ বলতে পারে নাই, তবে তাহাকে আর কোনও দিন সুবাসপুরে দেখা যায়নি ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।