আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই! আমি চলচ্চিত্র বানাই না, শুধু দেখি। ইদানিং দেখারও সময় পাই না। তবু টুকটাক দেখি। কিছু কিছু মুভি মনে দাগ কাটে, কিছু কিছু মুভি মেজাজে দাগ কাটে।
কেনো যেনো মনে হয় এই বছর মেইনস্ট্রিম থেকে বেশ কিছু মুভি অস্কারে যাবে যদিও ভালো ভালো মুভি গুলো সব মুক্তি পাবে সেপ্টেম্বর থেকে।
তবে অস্কারে কোন মুভি যাবে, কোন মুভি জিতবে সেটা বলা কষ্টকর। দেখা গেলো আপনি যেই লিস্ট করলেন সেখান থেকে খুব বেশি ৩-৪ টা বাকি সব কোথা থেকে কে নমিনেশন দেবে কে জিতবে সেটা বলা আমার মতো লোকের পক্ষে কষ্টকর। তবু মুখ যখন আছে তখন বলেই ফেলি!
The dark knight rises
আইএমডিবি রেটিং ৮.৮
ব্যাটম্যানের এই ছবিটা সবার লিস্টেই আছে। আর কেউ না পাক ক্রিস্টোফার নোলান পাবে।
এই মুভির সমালোচনা করার মতো সাহস আমার নাই। থ্রিডি তে মুক্তি পায়নি বলে আফসোস আছে মনে।
কাহিনী সংক্ষেপ:
হার্ভে ডেন্ট মারা গেছে আট বছর। তার মৃত্যুর দায় মাথায় নিয়ে ব্যাটম্যান নিজেকে গৃহবন্দি রাখে পুরোটা সময়। এই আট বছর শহরের আইনশৃঙ্খলা অভূতপুর্ব ভালো থাকে।
কিন্তু ব্যাটম্যানের ব্যাবসা মার খেয়ে যায়। কাহিনী শুরু হয় ছোট একটা চুরি থেকে। ব্যাটম্যানের মায়ের গলার হার চুরি করা হয়। কিন্তু ব্যাটম্যানের মায়ের গলার হার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো না, ছিলো তার আঙ্গুলের প্রিন্ট চুরি করা। কাহিনী এখান থেকেই এগোয়।
আলোচনা: কাহিনীটা ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম দু ভাগ ঘোরে ভিতর থাকতে হয়। কিন্তু তারপর যা হয়, যেমন পুরো শহর আটকে যাবার পর থেকে বিচার সালিশ, বন্দী পুলিশদের মুক্তি দেয়া, শহরটাকে রক্ষা করা তদুপরী ব্যাটম্যানের শহর রক্ষা সব যেনো আগে থেকেই বুঝা যাচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো কাহিনীকার প্রথম দিকে যতটা না চেষ্টা করেছেন শেষের দিকে তড়িঘড়ি করে ফেলেছেন। ব্যাটম্যানের কোমড়ের ইন্জুরী থেকে ফিরে এসে ওখান থেকে মুক্তি পেতে যতগুলো দড়ির চাপ স হ্য করতে হয়েছে সেগুলো হিসাবে বাকী পারফরমেন্স গল্পের সাথে যায় না! তবু বলতে হয় এই ছবি বার বার দেখা যোগ্য এবং এর উপ সংহার দর্শকের মনে একেকটা জগৎ তৈরী করতে সক্ষম!
ভালো প্রিন্ট নাই তাই ডাউনলোড লিংক নাই।
ভালো প্রিন্ট ছাড়া কেউ যদি এই মুভি দেখে বুঝতে সে দুনিয়ার সবচেয়ে বড়......বাকীটা আপনারা বুঝে নিয়েন!
Moonrise Kingdom
আইএমডিবি: ৮.৩
পুচকা পুচকির ভালোবাসার গল্পতে ব্রুস উইলিসকে দেখে প্রথমে টাস্কি খাই। তবে মুভিটা শেষ পর্যন্ত দেখে মনে হয়েছে এরকম ভাবে কেউ ভাবে নাই, কেউ ছবি বানাবে সেটাও চিন্তা করেনি!
আলোচনা:
একটা ১২ বছরের এতিমের প্রেম কাহিনী, কমেডি মেশানো রোমান্টিক টাইপ কাহিনী। জা্মুরী স্কাউটে ক্যাম্পিং করতে গিয়ে একটা মেয়েকে ভাগায়। মেয়েটা অবশ্য ওর সাথে ছিলো না। ইংল্যান্ডের আরেক কোনায়।
তারা একটা জায়গায় আসে, মিলিত হয়। কিছু দিন কাটায়। জায়গাটার নাম দেয় Moonrise Kingdom। যখন বাসায় ফিরে মেয়েটি তখন সে একটু সমস্যায় পড়ে। ওর বাবা মা ওকে রাখতে চায় না।
ছেলেটার বেচেইন কন্ডিশন দেখে আর নিজেদের দুঃখের কথা মনে করে ক্যাম্পের লীডার যে কিনা ছেলেটার উপর মহাক্ষ্যাপা ছিলো তারা সবাই মিলে ছেলেটিকে আবার সাহায্য করে মাইয়া ভাগানোর। পুচকা পোলাপানের এই ভাগাভাগির কাহিনি, ভালো লাগছে।
এর ডাউনলোডানোর ভালো কোনো প্রিন্ট নাই। নিজের রিস্কে দেখতে পারেন কিন্তু সীন সিনারীর মজা পাইবেন না!
The Sessions
আইএমডিবি: ৫.৯
আইএমডিবির রেটিং কম হইলেও ছবিতে একটু কমেডি আছে। আইএমডিবিট রেকর্ড কম হওনের কারন মনে হয় ছবিটা একটু বড় হইয়া গেছে।
আলোচনা:
ছোটবেলা থেকে পোলিওতে আক্রান্ত একজন মানুষ মধ্য বয়সে শখ হলো তার কুমারীত্ব খোয়াবে। সমস্যা হলো নিজের মধ্যে ধার্মিক বোধ আর তার চেয়ে বড় সমস্যা সে মাথা ছাড়া আর কিছুই নাড়াতে পারে না। প্রথমে চার্চে যায়। ফাদারের সাথে বাতচিত করে। কিন্তু সমস্যা হলো ফাদারের সাথে তার যখনই কথা হয় হাসি আটকে রাখা দায়।
প্রথম প্রথম ফাদার একটু রক্ষনশীল থাকলেও যখন সে দেখলো একটা মানুষ যারা পুরোটা জীবন এভাবে বিছানায় শুয়ে কাটায় দিলো তারও সুন্দর একটা মন আছে আকাঙ্খা আছে। ছবিতে এই ব্যাপারটাই সুন্দর সুন্দর মিউজিকে ফুটায় তুলছে। কখনো সাখ্রিয়াটিস্ট কখনো সারোগেট সেক্স ওয়ার্কার....তাদের মধ্যকার কথা অনুভূতি দেখলে মনে হবে দর্শকও যেন এই মুভির একটা অংশ য়ে গেছে।
এটারও ভালো প্রিন্ট পাইলাম না! কষ্ট কইরা সিনেমা হলে দেইখা আসতে হইছে!
The Best Exotic Marigold Hotel
আইএমডিবি: ৭.৩
প্রথম ট্রেইলার দেইখাই মনে হইছিলো এইটা দেখুম না, জীবনেও না। ভারতের কোনো কিছু নিয়া চরম এলার্জী।
তাও দেইখা ফেললাম। বলতে কষ্ট হইতেছে তাও এই ছবিটা খারাপ না!
আলোচনা:
এই ছবিটা আসলে কি কমু ড্রামা টাইপের মুভি। কোরিওগ্রাফি ভালো লাগছে কিন্তু সিনেমাটোগ্রাফী ভালো লাগে নি। ৭ জন বৃদ্ধ বয়স্ক ব্রিটিশ মানুষ জয়পুরে যায় ঘুরতে যদিও ঘুরার পিছে কাহিনী আছে। যেহেতু ইন্ডিয়ান কালচারের উপর বেজ করে সেহেতু আর কিছু লিখতে ভালো লাগছে না, কারন ইন্ডিয়ার প্রতি আমার চরম এলার্জী!
ডাউনলোডের লিংক থাকলেও দিমু না, ট্রেইলার দেখেন।
Beasts of the Southern Wild
আইএমডিবি: ৭.৭
চোখে পানি আইসা পড়ছে, পিচ্চি মাইয়াটার অভিনয় দেইখা! কোনো বড় আর্টিস্ট নাই।
আলোচনা:
৬ বছরের পিচ্চি যারা একটা দ্বীপে বসবাস করে নাম বাথটাব। সেখানে ওর বাবা ওকে বাচতে শেকাহয় কিভাবে কষ্টকর পরিস্হিতি মোকাবেলা করতে হয় সেটা শেখায়। ওরা জানতো যে ঝড় আসছে, সাগর ফুসে উঠছে। মেরুঅন্ঞ্চলের বরফ গলে গেলে যে বিশাল ঢেউ এসে দ্বীপটাকে খেয়ে ফেলবে তখনকার জন্য প্রস্তুত হতে চায়।
ওরা এমনি দরিদ্র, এই দ্বীপটাই ওদের ঘর বাড়ি, যদি এটাও চলে যায় তাহলে ওদের আর কিছুই থাকবে না। একসময় জ্বলোচ্ছাস শুরু হয়, ওর বাবা অসুখে পড়ে। পিছিয়ে পড়া জনপদ জানে না এ রোগের চিকিৎসা কি! যখন সাহায্য আসে তখন আর হাত বাড়ায় না, ওরা ফিরে যায় ওর মায়ের খোজে! পর্তিটা ঘটনা যেমন মাছ ধরা, কাকড়াকে কানে নিয়ে সাগরের গর্জন শোনা অথবা আতশবাজীর স্ফুলিঙ্গ ৬ বছরের পিচ্চির চোখে ভেসে ওঠা....আবেগে ভরিয়ে তুলবেই! অসাধারন একটি ছবি, ডকুমেন্টারী, জীবন গাথা!
আমি ইউটিউবে পুরা ক্লিয়ার দেখেছিলাম। এখন নাই!
Being Flynn
আইএমডিবি: ৬.৪
এই মুভিটা দেখার পর মনে হয় আমিও লেখক হয়ে যাই। যদিও শেষ পর্যন্ত দেখলে মনে হয় জীবনটা এত সুন্দর না, এত ভাবালু না যে সেগুলোকে শব্দে বন্দি করি!
আলোচনা:
পিতা পুত্রকে ঘিরে এই মুভি।
বাবা নিজেকে বিশাল একজন লেখক মনে করে পুত্র লেখক হতে চায় এমন কিছু যদিও যে কয়টা লেখা হয়েছে সবগুলো পুরোদস্তুর ফ্লপ। আবার পিতা একসময় জেলে ছিলেন চুরির দায়ে। পুত্র লেখার উপাদান হিসেবে নিজের বাবাকে বেছে নেয়। জীবনে নানা চড়া উৎড়াই জটিলতা অতীত সবকিছুই যেনো গ্রাস করে। তবু জীবনটাকে গড়তে চায়, বাবা ট্যাক্সি চালায়, ইলেক্ট্রিসিয়ানের চাকরী থেকে পুত্র নতুন চাকরী খুজতে বের হয়ে যায়।
কাহিনী এভাবে এগিয়ে চলে!
ভালো প্রিন্টের লিংক এখানে।
আপাতত এ কটাই। আরো কয়েকটা ছবির নাম মনে দেয়া যেতো। লেখা বড় হবে তাই সাহস হলো না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।