অপেক্ষায় আছি সেই পলিনেশিয়ান তরুণীর যার বাম কানে সাঁজানো লাল জবা... মানুষের জীবনে আত্মবিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু কখনো কখনো আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরে। এমন অবস্থায় জীবনযাপন বেশ কষ্টকর। আমার জীবনে চারটা ছোট ছোট ঘটনা আমাকে ভিষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল যার ধাক্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি!
১.
আমি তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। সম্ভবত ৩য় বর্ষের শেষের দিকে।
হঠাৎ করেই জন্ডিসের কবলে পরলাম। সুস্থ্য হতে সব মিলিয়ে ৫ মাস সময় লাগলো। মনোবল গেলো ভেঙে! সেই যে মনের ভেতর ভয় ঢুকে গেলো সে ভয় আর কাটাতে পারিনি। এখনো ভয়ে ভয়ে থাকি, ঔষধ খেতে গেলে লিভার ফাংশনে কোন প্রভাব আছে কিনা তা ভেবে দেখি। প্যারাসিটামল থেকে দূরে থাকি।
জ্বর-মাথা ব্যাথায় এসপিরিন খাই
২.
একবার বাস দূর্ঘটনায় পরলাম। কারওয়ান বাজার থেকে বাসে উঠেছি, ফার্মগেটে এসে সেটা বেশ কায়দা করে সামনের বাসে ধাক্কা দিলো। আমি বাসের মেঝেতে পরে গেলাম। বাম পায়ের উপরের দিকে এখনো ফোলা আছে, ব্যাথাও আছে। দু বছর হয়ে গেল।
বাস দূর্ঘটনার ভয়টা এখনো যায়নি। পারতপক্ষে বাসে উঠিনা। ভয়ের মাত্রাটা কতটুকু তা বুঝতে নিচের ঘটনাটা হয়ত সাহায্য করবেঃ
ঈদে গাজীপুর যাচ্ছি। বাস চলছে। বাসে বসে আমি ভয়ে অস্থির।
ড্রাইভার অন্য কোন বাসকে ওভারটেক করতে গেলেই ভয় লাগছে। মনের ভেতর থেকে কে যেন বলছে বাসটা ব্রেক ফেল করেছে
৩.
তখন আমি একটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টে কাজ করি। বৃষ্টির দিন, সিএনজিতে করে বেইলি রোডের দিকে যাচ্ছি। বাংলা মোটর এসে মলম পার্টির খপ্পরে পরলাম। চোখে মলম টলম দিয়ে নামিয়ে দিল পরীবাগের ওদিকে।
এক ভদ্রলোক হলি ফ্যামিলিতে নিয়ে গেল আর এক বন্ধুর হাত ধরে ঘরে ফিরলাম। চোখের সমস্যা হয়নি, মোবাইল কিনতে পেরেছিলাম এবং ছিনতাই হয়ে যাওয়া টাকাও কোন সমস্যায় ফেলেনি। শুধু এই ঘটনাটা বিরাট একটা ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে মনে। সন্ধ্যার পর বা দিনের বেলায়ও একা সিনজিতে উঠিনা। একদিন সন্ধ্যার পর কলিগের সাথে সিএনজিতে উঠেছি।
তাতেও ভয় লাগছে। রাতে রিকশায় করে বাসায় ফিরতে ভয় লাগে। কী এক দূর্বিষহ যন্ত্রনা! বোঝানো সম্ভব নয়
৪.
এই ঘটনাটা লিখবোনা। কিন্তু এটাই আমাকে একদম ভেঙে দিলো! শুধু এটা জানি মধ্যাকর্ষণ বলকে উপেক্ষা করা কঠিন। উপরে একটা পাথর ছুড়ে মারলে সেটা নিচে এসে পরে।
নাথিং গোস আনপেইড!!
=============================================
ব্লগে দেখতে দেখতে ৬ বছর হয়ে গেছে। কি আশ্চর্য! ৬টা বছরে কত কত মানুষের দেখা পেয়েছি, কারো সাথে সামনা সামনি দেখা হয়েছে। কাউকে কাউকে অন্তর্জালের দুনিয়াতেই চিনি। তবু সবাই কত আপন।
হামা, রানা ভাই, ফাহাদ, অমিত, মেঘু, বৃত্তদা, প্রমা, সবাক, পারভেজ আলম, সোহান, রাতমজুর, শয়তানদা, দুরন্ত স্বপ্নচারী, জাহিদুল হাসান, নাহোল, চাঁদ সায়েম, বাঁধন, সমুদ্র কন্যা, চয়ন, মোরশেদ ভাই (লাস্ট সামুরাই), কৌশিক, অর্ফিয়াস, একরামুল হক শামীম, শরৎ, লাবনী, জানা, আরিল এদের সাথে সামনা সামনি দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে বা ফোনে যোগাযোগ হয়েছে।
অনেকগুলো ভার্চুয়াল চরিত্র গভীর মমতা দেখিয়েছে। ত্রিশোংকু, ধুলোবালিছাই, নাজনীন, শায়মা, পিংকি, পাকাচুল, মোটামানুষ, আহাদিল, কাউন্সেলর, মেঘনা পাড়ের ছেলে, নার্ডি বয়, পুরাতন, কল্পনাবিলাসী, ভালো পোকা, রেজোয়ানা, কালীদাস, দূর্যোজী, আউলা, চানাচুর, স্বদেশ হাসনাইন, তাঁজা কলম, জুল ভার্ণ, বাদ_দেন, এরশাদ বাদশাহ, সুরন্জনা, আ উ এ সৎকারবিহীন, জেরী, ঘুমন্ত আমি, রোবোট, বোকা মানব, স্তদ্ধতা' এদের নাম মনে পরছে! ফিউশনের সাথে ইভটিজিং বিরোধী ক্যাম্পেইনে একসাথে কাজ করেছি। একদম প্রথম দিকে চোর, ধুসর গোধুলী, তীরন্দাজ এরা অনেক মমতা আর ভালোবাসা দিয়েছেন। ব্লগে আমার কয়েকজন কলিগ আছেন, একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আছেন, আছে খুব কাছের এক বন্ধু!
সবার জন্য ভালোবাসা। জীবনে যেমন কিছু ঘটনা মনোবল ভেঙে দেয় তেমনি অনকে কিছুই থাকে জীবনটাকে চালিয়ে নেয়ার জন্য।
সামহোয়ারইন তাই আমার জন্য অনেক কিছু! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।