আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাপ্লাবন (চিরায়ত পুরান অবলম্বনে )

আমি কে যে বারবার অন্ধকারে হারিয়ে আবার আলোতে ফিরে আসি মানবসৃষ্টির একটি গল্প চালু আছে পুরানে । পন্ঞ্চযুগের গল্প বলা হয়েছিল মানুষ এসেছিল লৌহ প্রজাতি থেকে । অন্য এক জায়গায় আরেকটি গল্পে বলা হয়েছে মানুষ এসেছিল প্রস্তর প্রজাতি থেকে । এই কাহিনীর শুরু মহাপ্লাবন থেকে । একটা সময় সারা পৃথিবীর মানুষ এতো পাপী হয়ে উঠেছিল যে জিউস সিদ্ধান্ত নিলেন যে মানুষ প্রজাতিকেই ধ্বংস করে দিবেন ।

তিনি ঠিক করলেন অসীম পৃথিবীর উপরিভাগে ঝড় এবং ঝঞ্ঝাকে মেশাবেন এবং মানুষের জন্য আনবেন চরম সমাপ্তি । তিনি প্লাবন পাঠালেন । জিউস এর ভাই পসাইডন সমুদ্র দেবতাকে অনুরোধ করলেন তাকে সাহায্য করতে । দুজন মিলে ঝরালেন অনবরত মূষলধারে বৃষ্টি ,সমস্ত নদী জলের ধারা খুলে দিলেন এবং ডুবিয়ে দিলেন সমস্ত পৃথিবীর মাটি । পুরো পৃথিবীর মাটি এবং পাহাড় ডুবে গেলো পানিতে শুধু কনোমতে জেগে রইলো পার্নাসাস নামক পাহাড়ের চুড়া ।

এই পাহাড়ের আশ্রয় নিয়ে প্রানে বাচতে পারলো দুজন মানুষ । নয় দিন নয় রাত্রি বৃষ্টি চলল । ঐ পানাসার্স পাহাড়ের চুড়ায় ভেসে আসলো একটি কাঠের বাক্স । ঐ কাঠের বাক্সের ভেতরে ছিল দুজন জীবিত মানুষ । একজন পুরুষ ,আরেক জন নারী ।

তাদের একজনের নাম ডিউক্যালিয়ন যিনি হচ্ছেন প্রমিথিউসের পুত্র এবং আরেকজন হচ্ছেন পাইরা যিনি এপিমিথিউস ও প্যানডোরার কন্যা । তিনি জানতেন মহাপ্লাবন আসবে তাই পুত্রকে এবং পুত্রবধুকে কাঠের আলমারীর বানিয়ে ভেতরে রসদ এবং খাদ্য নিয়ে সেখানে ডুকতে বলেছিলেন । জিউস মানবজাতিকে ধ্বংস করতে চাইলেও তাদের বেচে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হননি কারন তারা দুজনেই ছিল ধর্ম ভীরু এবং পুজা অর্চনা করত । যখন বাক্সটি স্থলভূমিতে এলো তখন বাক্স থেকে তারা দুজন বের হয়ে এলো । তখন সারা পৃথিবীর কোনদিকে প্রানের চিহ্ন নেই শুধু তারা দুজন ছাড়া ।

চারিদিকে কেবল জল আর জল । জিউসের দয়া হলো তিনি বন্যার জল শুষে নিলেন আস্তে আস্তে সমুদ্রের ভাটার মতো নদী দুরে চলে গেল । তারা দুজন পাহারের চুড়া থেকে নেমে এসে একটি কর্দমক্ত এবং শ্যায়লা ভরা মন্দির দেখতে পেলেন । তারা সেই মন্দিরে দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জানালেন । তারা প্রার্থনা করলেন নির্জন পৃথিবীতে তাদের সাহায্যের জন্য ।

তখন সেখানে এক অলৌকিক শব্দ তাদের কানে এলো "তোমদের মস্তক আবৃত কর এবং তোমাদের পিছনে ছুড়ে মারো তোমাদের মায়ের হাড়। " এই আদেশ শুনে পাইরা ভীত হয়ে বললো এই সাহস আমাদের নেই ! ডিউক্যালিন চিন্তা করতে লাগলো এই বানীর পিছনে কি আছে হঠাত্‍ তার কাছে কথাটির মানে স্পষ্ট হলো । তিনি স্ত্রীকে বললেন , পৃথিবী হচ্ছেন সবার মাতা । তার হাড় হচ্ছে সমস্ত পাথর । এই পাথর পিছনে ছুড়লে তাদের অন্যায় হবে না ।

তারা একটি করে পাথর মাটিতে ছুড়ে আর একটি করে পাথর রুপ নেয় মানুষের । এদের নাম হলো প্রস্তর মানব । এই মানব গোষ্ঠির ছিল প্রচন্ড সহ্যক্ষমতা । নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে এই ধরনের মানুষেরই তখন প্রয়োজন ছিল । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।