আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইচছা

সেপ্টেমবরের কোন একদিন হবে হয়ত, তারিখ মনে পরছে না। তবে বারটি মনে আছে ,সোমবার। ক্লাস ছিল না । দুপুর বেলা , মন জানি কেমন কেমন করছিল। মা ভাত খাবার জন্য ডাক দিল।

ইচ্ছা করেই সাড়া দিলাম না। মার কাছে গেলাম , গিয়ে বললাম ,৫০০ টাকা দাও তো। মা আমার দিকেব এমন ভাবে তাকাল যে, মনে হল, আমি তাকে খুন করার কথা বলেছি। আমি বুঝলাম কাজ হবে না। তাই চুপচাপ আমার প্লান -বি তে চলে গেলাম।

হুড পান্জাবিটা পড়ে নিলাম আর ভাত বেশি করে খেয়ে নিলাম । মানি-ব্যাগে আছে ২০০ টাকা। বুঝলাম আজকে হিমুর ভাব নিয়ে যাব শাপলার কাছে। একটু ভড়কে দিলে আপনাআপনি টাকা ঢালতে শুরু করবে। বাসা থেকে বের হয়ে হেটে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত গেলাম।

বাসের জন্য দাড়িয়ে আছি । হঠাৎ একটা কালো গাড়ি সামনে এসে দাড়াল । একটা মেয়ে গ্লাস খুলে বলল, " এই অমি,কেমন আছ?" আমার মুখ মেয়েটাকে দেখে শুকিয়ে কাঠ হয়ে কাঠ হয়ে গেল। এ হচ্ছে ইশিতা। তার সাথে চিটাগাংগে রাতজাপন করেছিলাম।

এর পর তার সাথে আর যোগাযোগ রাখি নি। ইশিতা বলল,"আস, গাড়িতে । "আমি বুঝলাম না কি করবে। পুলিশে দিবে নাকি। ভয় ভয় মন নিয়ে গাড়িতে উঠলাম।

ইশিতার পাশে বসলাম। ইশিতা বলল, "চল, আমার বাসা্য় চল", আমার অবস্হা তো আরও খারাপ হতে লাগল। কারন মনে হতে লআগল যে, ওর বাবার কাছে নিয়ে বললে, যে আমি তার কন্যার সাথে কি করেছি তাহলে তো আমি শেষ। গাড়ি চলছে ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে। শ্যামলীর বিরাট বড় একটি বাংলো মত বাড়ির ভেতর গাড়ি ঢুকল।

ইশিতা নামল, আমিও নামলাম। দুজনে বাড়ির ভেতর ঢুকলাম। ঢোকার পথেই দুটি বিদেশী কুকুর। সম্ভবত ব্রিটিশ বুলডগ। দেখেই মন কেমন জানি কেপে উঠল।

ইশিতা সাদা সালোয়ার কামিজ পড়া ছিল , ও আমাকে বলল,"অমি, বস। আমি চেন্জ করে আসছি। তোমাকে চা দিতে বলছি। " ও ভিতরে চলে গেল। এক বুড়ো মত ভদ্রলোক আসল একটা খাবারের ট্রলি নিয়ে।

আমার খাবারের দিকে চোখ যেতেই মাথা ঘুরে গেল। চা তো আছেই সাথে পাঁচ-ছয় রকমের বিস্কিট,কাবাব,পায়েস আরও অনেক কিছু। পেট ভরে খেয়ে নিলাম। যাকে বলে আত্তি ভরে খাওয়া। ইশিতি একটা সাদা শাড়ি পরে আসল।

আমি বললাম,"তুমি কি সাদাকে তোমার জীবনের অংশ বানিয়র ফেলেছ নাকি?",ইশিতা খুব গম্ভীর ভাবে বলল, "সেটা তো তোমার ভালই জানার কথা। আমি কেন এই রূপে?" আমি কিছুই বুঝলাম না, তবুও বিভ্রান্তের মত না হয়ে হাসি মুখে ওর দিকে তাকালাম। ও মুখটা আরও কালো করে বলল,"খাওয়া তো শেষ,এখন কি করবে? বেডরুমে যাবে? আমি রেডি আছি। "আমি হতবাক হয়ে তিকিয়ে রইলাম। ও বলল, "কি হল, কিছু বলছ না যে।

" আমি উঠে দাড়িয়ে বললাম,"আমি আসি," ইশিতা হাসল এবং আমার সাথে সাথে দরজা দিয়ে বের হল । আমি গেটের দিকে খুব মনমরা হয়ে হেটে যাচ্ছি। এমন সময় শুনতে পেলাম কুকুরের গর্জন। ইশিতা ওর পোষা বুলডগ আমার পিছে ছেড়ে দিয়েছে। কোন কিছু না ভেবে দিলাম ভো দৌড় ।

গেটের সামনে এসে দিলাম একটা লাফ। লাফ দিয়ে গেট পার হয়ে গেলাম। কুকুরগুলোকে গেট খুলে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি কোন কিছু চিন্তা না করে শুধু দৌড়াচ্ছি। এমনসময় মোবাইল বাজা উঠল।

শালা ফোন করেছে। ইচ্ছা করছে মোবাইল ছুড়ে ফেলে দিতে। একটা সি এন জি পেয়ে গেলাম। লাফ দিয়ে উঠলাম। বললাম,"২০০ টাকায় যতদূর যাবেন চলুন।

তাড়াতড়ি। " নামলাম মহাখালীতে । ড্রাইভার এখানে নামিয়ে দিয়ে গেছে। ছলে এলাম সম্পূর্ন উল্টো জায়গায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।