খাই দাই ঘুমাই
কবে আসছে পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি?
পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রক হিসেবে হরমোন ইনজেকশনের প্রচলন থাকলেও এতে অনেকেই আগ্রহী নন। সহজ সমাধান হতে পারে জন্মনিয়ন্ত্রক পিল বা বড়ি। এ ধরনের বড়ির প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছেন গবেষকেরা। দীর্ঘদিন ধরেই গবেষকেরা পুরুষের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় সফলতার মুখ দেখতে পারেননি তাঁরা।
তবে বিশেষ একটি ওষুধ নিয়ে ইঁদুরের ওপর চালানো সাম্প্রতিক একটি পরীক্ষায় সফল হয়েছেন তাঁরা।
গবেষকদের দাবি, পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন তাঁরা। ইঁদুরের ওপর গবেষণায় সফলতার পর এখন পুরুষের ওপর এ বড়ির কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডানা-ফারবার ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও বেলর কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকেরা পুরুষের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি তৈরিতে কাজ করছেন।
গবেষকেরা বলেন, নারীর ক্ষেত্রে কয়েক দশক ধরেই জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হিসেবে পিল বা বড়ির প্রচলন রয়েছে।
কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে কার্যকর তেমন কোনো বড়ি তৈরি করা এখনো সম্ভব হয়নি। ‘সেল’ সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাপত্রে তাঁরা বলেন, ‘জেকিউ১’ নামের একটি ড্রাগ তাঁদের জন্য আশার আলো নিয়ে এসেছে। এ ড্রাগটি তাঁরা ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন। ‘জেকিউ১’ ব্যবহারে ইঁদুরের স্বাভাবিক যৌনজীবনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কিন্তু তাঁরা যা চাইছিলেন, সে বন্ধ্যাত্ব প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছে।
তাঁরা দেখেন, ড্রাগটির ব্যবহারে পুরুষ ইঁদুরের সাময়িকভাবে শুক্রাণু তৈরির হার কমে যায়। এই ড্রাগটি শুক্রাণু তৈরিতে ব্যবহূত প্রোটিনের ওপর কাজ করে। এ ড্রাগটি নেওয়া বন্ধ করলে আবারও শুক্রাণু তৈরির হার স্বাভাবিক হয়ে আসে।
গবেষকেরা আশা করছেন, এ ড্রাগটি মানুষের ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে পারবেন তাঁরা। তবে নিরাপদ ও কার্যকর করতে এ ড্রাগটির নিয়ে আরও পরীক্ষা চালাবেন তাঁরা।
শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যালান পেইসি জানিয়েছেন, পুরুষের জন্য এ ধরনের বড়ি প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রক হিসেবে ইনজেকশন বা ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়া কমানোর জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। বড়ি তৈরির নতুন এ পদ্ধতি খুবই আশাব্যঞ্জক। যেহেতু কোনো প্রতিষ্ঠান এ ধরনের বড়ি তৈরি করতে পারেনি, তাই সবার জন্যই বড়ি তৈরির পথ খোলা আছে।
এর আগে শুক্রাণু উত্পাদনে সক্ষম এমন একটি জিন আবিষ্কার করেছিলেন এডিনবার্গের গবেষকেরা।
ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে শুক্রাণু তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘কাটনাল১’ নামের একটি জিনের সন্ধান পেয়েছিলেন তাঁরা। তাঁরা ‘কাটনাল১’ প্রতিরোধ করে এমন ওষুধ তৈরির চেষ্টা করছিলেন।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, একই কৌশল মানুষের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যাবে এবং কোনো ধরনের স্থায়ী ক্ষতি ছাড়াই শুক্রাণু তৈরি বন্ধ করা সম্ভব হবে। মানুষের ওপর প্রভাব ও বড়ির কার্যকারিতা পরীক্ষার পরই বাণিজ্যিকভাবে তৈরি শুরু হতে পারে পুরুষের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি, এমনটাই আশা তাঁদের। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।