আগামী ১৫ বছরের মধ্যে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের ক্ষমতা দখলের টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছে। দুটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এধরণের একটি রিপোর্ট বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা বিভাগকে বিষয়টি জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিদেশি সংস্থাদের দেয়া রিপোর্টে জামায়াত তাদের লক্ষ্য পুরণে কি ধরণের কর্ম-কৌশল নিয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে। তারা তাদের রিপোর্টে আরো উল্লেখ করেছে, পরিস্থিতি বুঝে দলটি তাদের কর্ম কৌশলে পরিবর্তন আনতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে বিদেশি সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ শব্দটি বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় তৎকালীন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোটে থেকে জামায়াত আন্দোলন করে। সরকার অবশ্য তার এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে। কিন্তু ইসলামী দল হিসেবে দাবিদার জামায়াত এর আগে তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ‘আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা’ লাইনটি বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেয়। সেই সাথে গঠনতন্ত্রের বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে আল্লাহ শব্দটি দলটি বাদ দিয়েছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে এমন ৩৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জামায়াতের নেতা ও দলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এরমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক, বীমা, গার্মেন্ট, একাধীক ঔষুধ উৎপাদনকারী কারখানা , আধুনিক হাসপাতাল, পরিবহন সেক্টর ও ব্যাংকের আদলে সমবায় সমিতিসহ একাধিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই লাভজনক।
রিপোর্টে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দারা তার কিছুর সত্ত্বতাও পেয়েছে। তবে স্পর্শকাতর বলে সূত্র তা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।
বিদেশি গোয়েন্দাদের রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, প্রয়োজনে জামায়াত বিলুপ্ত হওয়া ৪ দলীয় জোটের পরিধি বেড়ে ১৮ দলীয় জোট থেকেও বেড়িয়ে আসতে পারে। যদিও বর্তমানে বিএনপির সাথে দলটির টানপোড়ন চলছে বলে রিপোর্টটিতে দাবি করা হয়েছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, সরকারি অফিসে জামায়াত সমর্থকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এমন কি সরকারে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে কৌশলে তারা এখনও ঘাপটি মেরে রয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের জন্য একটি হুমকি স্বরূপ।
সরকারের পরিবর্তন হলেও ওই সরকারের জন্য বিষয়টি শুভকর হবেনা।
জামায়াতের মহিলা ফ্রন্ট যেটি ছাত্রী সংস্থা নামে পরিচিত তারা বাড়ি গিয়ে প্রথমে ধর্মের কথা বলে। এক পর্যায় শুরু করে দলীয় প্রচারণা। এরও আগে তারা ধর্মীও বইয়ের নামে মওদুদির বই সরবরাহ করে। তাদের টার্গেট থাকে ৫ থেকে ৮ বছরের শিশু।
এছাড়া সামাজিক যেকোন কাজে তাদের অংশ গ্রহণ থাকে ব্যক্তি পর্যায়ে। দলীয় পরিচয়টি তারা গোপন রাখার চেষ্টা করে। রিপোর্টে বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয়েছে, তারপরেও দলটির ছাত্র ফ্রন্টে (ছাত্র শিবির) দিনদিন বাড়ছে। গ্রাম পর্যায়ে এর সংখ্যা বেশি।
জামায়াত ও শিবিরের সর্বনিম্ন পদ সাথী থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতার সাথে যোগাযোগ থাকে প্রায় সার্বক্ষণিক।
কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নেয় তা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সারাদেশে তাদের পদমর্যাদা অনুযায়ি তা নিমিশেই পৌঁছে যায়। এমন কথাও রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে।
তাতে আরো বলা হয়েছে, জামায়াতের তাত্ত্বিক ও সমরিক দুটি শাখা দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তাদের রয়েছে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে প্রশিক্ষণ শিবির। আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি জঙ্গী সংগঠনের সাথে তাদের রয়েছে অর্থনৈতিক ও অস্ত্র লেনদেনসহ রাজনৈতিক সম্পর্ক।
এ মাসের প্রথমদিকে এ রিপোর্টটি বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আসে বলে সূত্র বলেছে।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রপ্রতি মন্ত্রী অ্যাড. শামছুল হক টুকু কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এধরণের একটি রিপোর্টের কথা তিনি শুনেছেন বলে টাইমস ওয়ার্ল্ডকে বলেন।
জামায়াতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ টাইমস ওয়ার্ল্ডকে বলেন , রিপোর্ট সম্পর্কে তার কাছে কোন তথ্য নেই। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে যে কোন দলই ক্ষমতায় যেতে চায়।
এটা অন্যায় কিছু নয়। তিনি আরো বলেন ১৫ বছরের কোন টার্গেট নেই। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এর আগেও তো আমরা ক্ষতায় যেতে পারি যদি জনগণ চায়।
তথ্য সূত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।