মুভি ক্রিটিক ব্লগ (প্রথম বাংলা মুভি ব্লগ) ★★★★★ © ২০০৭ - ২০১৩ ওয়েবসাইট: www.saifsamir.com শুরুটা হয়েছিল ব্লগেই। তারপর ফেসবুকে আমার একটি প্রশ্ন। অতঃপর আলোচনা বা বিতর্ক। উঠে এসেছে অনেক কিছু। আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া পাঠকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার প্রয়োজন অনুভব করলাম।
আলোচক- বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনীর হাসান, বিজয় কী-বোর্ডের ডেভেলপার ও আইটি লেখক মোস্তাফা জাব্বার, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাভেদ মোর্শেদ, প্রযুক্তি উৎসাহী বদিউল আলম, ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি উৎসাহী লুবনা ইয়াসমিন, আইটি লেখক মোহাম্মদ গোলাম নবী ও চলচ্চিত্র পর্যবেক্ষক সাইফ সামির।
ফেসবুক টাইমলাইন থেকে:
Mohammad Golam Nabi : আমার কাছে একজন জানতে চেয়েছেন। আমি জানি না। আপনি জানেন কি?: `ভাই, আশা করি ভালো আছেন। আপনার কাছে একটা কথা জানতে চাচ্ছিলাম।
র্যাপিডশেয়ার আর স্টেজভ্যু থেকে মুভি ডাউনলোড করা কি লিগ্যাল? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো। আগাম ধন্যবাদ। '
Jabed Morshed: Simply, NO.
Bijoy Bangla [মোস্তাফা জাব্বার]: কপিরাইট আইনে এ ধরনের কোন কাজের সংজ্ঞা নেই। তবে সাধারণভাবে যা বলা আছে তাতে যে কোন সূত্র থেকে লাইসেন্সবিহীন ব্যবহার কপিরাইটের লঙ্ঘন। লঙ্ঘন বিষয়টি অধ্যায় ১৩, ধারা ৭১-এ বলা আছে।
৭২ ধারায় কোনটি লঙ্ঘন নয় তার বিবরণ রয়েছে। সমালোচনা, শিক্ষা এসব ক্ষেত্রে লঙ্ঘন হয়না। আইনটি দেখতে পার;
Click This Link
মোহাম্মদ গোলাম নবী: Saif Samir: আশা করি উত্তর পেয়েছো।
Badiul Alam Shufol: র্যাপিডশেয়ার হল ফাইলহোস্ট আর স্ট্যাজভু হল স্ট্রিমিং মুভি/টিভি শো দেখার সাইট। এই দুইটা সাইটের উদ্দেশ্য হচ্ছে পারসোনাল ফাইল/ভিডিও শেয়ারিং।
এখন, যদি মুভি/টিভি শো শেয়ার/নামানো হয় রেপিডশেয়ার/স্ট্যাজভু দিয়ে তবে অবশ্যই সেটা ইলিগাল হবে।
কিছুদিন পূর্বে এই জিনিস নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় হয়ে গেছে। হলিউডের মুভি প্রযোজকরা একাট্টা হয়ে সাইবার লকার দের (যেমনঃ ফাইলসনিক, হটফাইল, মেগাআপলোড, রেপিডশেয়ার ইত্যাদি) বিরুদ্ধে লড়ছে। এক রেপিডশেয়ার এর বিরুদ্ধে এখন ৩৫ টি মামলা রয়েছে।
ইতিমধ্যে SOPA+PIPA এর মাধ্যমে আমেরিকা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল যদিও এই বিল গুগল/উইকি এবং আরো বড় বড়
সাইটের বাধার মুখে ভেস্তে যায়।
তারপরও তাঁরা ফাইলসনিক, ফাইলসার্ভ, অরন এর মত বিশাল ফাইল শেয়ারিং সাইট বন্ধ করতে বাধ্য করেছে। কিন্তু রেপিডশেয়ার জার্মানী মালিকানাধীন হওয়ায় খুব বেশি কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না ওদের বিরুদ্ধে।
আর মুভির ব্যাপারে, পুরো মুভি শেয়ার করতে হলে অবশ্যই মালিকের পারমিশন নিতে হবে, এছাড়া কোন ভাবেই অনলাইন মুভি শেয়ারিং বৈধ হতে পারে না।
গোলাম নবী: মোরশেদ তোমাকে ধন্যবাদ। নেক্সট টাইম এই ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে তোমার নাম অন্তর্ভুক্ত করব।
গোলাম নবী: জব্বার ভাই, আপনাকেও ধন্যবাদ।
Saif Samir: ধন্যবাদ গোলাম নবী ভাই। যারা উত্তর দিয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ। কপিরাইট হোল্ডারদের অনুমতিপ্রাপ্ত সাইট ছাড়া অন্য
সাইট থেকে কপি রাইটেড (পাবলিক ডোমেন নয়) মুভি ডাউনলোড করা শুরু থেকেই অবৈধ বলেই জানি। এই বিষয়ে আমার মতামত প্রকাশ করায় একটি ব্লগিং সিন্ডিকেট - যারা নিজেরা এই পাইরেসিতে উৎসাহদাতা, তারা আমাকে জ্ঞান দান করেন যে রেপিডশেয়ার/স্টেজভ্যু থেকে মুভি ডাউনলোড বৈধ! আমি একটু অবাক হয়েছিলাম! তবে কি আমার জানায় ভুল ছিল? ভাবলাম বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তাই গোলাম নবী ভাইকে প্রশ্নটি করেছিলাম। উনি গুরুত্বসহকারে বিষয়টি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করায় কৃতজ্ঞ।
মি. বদিউল, এই বছরের জানুয়ারিতে মেগাআপলোড Stop Online Piracy Act (SOPA) ও Protect IP Act
(PIPA) -এর আওতায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জানি। সাইটির প্রতিষ্ঠাতাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। Motion Picture Association of America (MPAA) ও Recording Industry Association of America এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছে।
সংস্থা দুটি এখনও অনলাইনে মুভি পাইরেসির বিরুদ্ধ লড়ছে।
টরেন্ট সাইটগুলোর ব্যাপারে মতামত কি?
আলোচ্য বিষয়ে কারও আরও কিছু শেয়ার করার থাকলে জানাবেন প্লিজ। ধন্যবাদ।
বদিউল আলম: টরেন্ট হচ্ছে আন্ডারগ্রাউন্ড সাইবারলকার। তবে টরেন্টগুলা নির্দিষ্ট কোন সার্ভার এ আপলোড করা হয় না বলে MPAA or RIAA খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না এদের বিরুদ্ধে।
যদি ক্ষমতার জোরে মিনিনোভা বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
যেখানে thepiratebay, isohunt এর মত ফ্রি সাইট বিদ্যমান তখন টরেন্ট দমানো অনেক কঠিন। যাই হোক, লিগালিটির কথা বললে, টরেন্ট থেকে নামানো সম্পূর্ণ অবৈধ হবে। কারণ মুভির প্রযোজক কখনোই শেয়ারিং কে সাপোর্ট করে না। আপনি যদি ঐ মুভির লিগাল দর্শক হতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে পে করতে হবে।
Torrent and Filehost have same objective to provide pirated content to its user with differnt a cover. Nothing else. Torrents and Filehosts both are moneywhore, they are using the term of sharing instead of moneymaking. As you have known Megaupload and its sister sites earn more than 175 million dollar within a short time. whatever Kim doctom have lost all his earning because of last incident. and Filesonic and other lead filehost provider is now trying to hide their ass to russia or a country where they dont care much about DMCA. @Saif Samir
জাভেদ মোর্শেদ: টরেন্ট শেয়ারের সবচেয়ে বড় সাইট হলো সুইডেন ভিত্তিক Pirate Bay । এর নামে মামলার শেষ নাই । মূল মালিক সবাই আন্ডার গ্রাউন্ডে । তবে কপিরাইটে সাথে ভৌগলিক অবস্থানের একটা সম্পর্ক আছে । তাই অনেকে ট্রাস বর্ডার এলাকায় এইসব সার্ভার সেটআপ করেন ।
Pirate Bay তো এককাঠি সরেশ । তারা পরিকল্পনা করছে আকাশে সার্ভার বসাতে ।
Click This Link
Pirate Bay plans sky-high flying proxy servers • The Register
Munir Hasan: কপিরাইট সবসময় লোকাল ইস্যু। কাজে কোন দেশে ফাইনাল ব্যবহার হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে সেটি আইন লংঘন করছে কিনা। এক দেশের কপিরাইট অন্য দেশেও কার্যকরী হবে কিনা সেটা নির্ভর করে দেশ দুইটার মধ্যে এব্যাপারে কোন চুক্তি আছে কী না, উভয় দেশ বার্ন কনভেনশন সই করেছে কীনা, তারা গ্যাটের অন্তর্ভুক্ত কিনা, ট্রিপস কোন ভাবে সেখানে প্রযোজ্য কী না- এরকম অনেক বিষয়।
মোর্শেদ সম্প্রতি ইউরোপ থেকে এসেছে বলে তাড়াতাড়ি না বলেছে, আমি হলে বলতাম না!
জাভেদ মোর্শেদ: হা হা ।
Lubna Yeasmin: যার যা কপি করার এখনই করে নিতে পারেন বাংলাদেশ ২০১৩ পর্যন্ত exemption period পাচ্ছে তৃতীয়
বিশ্বের গরীব দেশ হিসেবে।
যে কোনো কাজের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। বিশেষ করে যেগুলো “Intellectual Property Law “ এর অধীনে পড়ে।
কোনো সৃষ্টিশীল মানুষই চাইবে না তাঁর কষ্টের কর্মের ফল অন্য কেউ ভোগ করুক বিনা পরিশ্রমে এবং বিনা পয়সায়।
মুনীর হাসান: "কোনো সৃষ্টিশীল মানুষই চাইবে না তাঁর কষ্টের কর্মের ফল অন্য কেউ ভোগ করুক বিনা পরিশ্রমে এবং বিনা পয়সায়। "
- এই লাইনটার সঙ্গে কপিরাইটের কোন সম্পর্ক নাই। নাই বলে মৃত্যুর পর ৫০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত কপিরাইট থাকে! কপিরাইটের পুরো ব্যাপারটা একটা বিশেষ ধরনের বাণিজ্য।
http://techprithibi.com/admin/819
ওপেন সোর্স, কপিরাইট, পাইরেসি এবং নানা রকম বিভ্রান্তি-১ |মুনির হাসান
লুবনা ইয়াসমিন: আমি বলতে চেয়েছি যেগুলো “Intellectual Property Law “ এর অধীনে পড়ে। কপি রাইট নিয়ে
particularly কিছু বলতে চেষ্টা করিনি।
ঠিক মত বোঝাতে না পারার জন্য দুঃখিত।
মোস্তাফা জাব্বার: লুবনার তথ্যটি সঠিক নয়। বাংলাদেশ কেবলমাত্র ঔষধের প্যাটেন্টে ২০১৬ অবধি রেয়াত পাবে। এটি আরও বাড়তে পারে। তবে কপিরাইটে কোন রেয়াত পাবেনা।
বাংলাদেশে সকল কপিরাইট ২০০০ সালের আইনের আওতায় আসবে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লিখিতভাবে এটি নিশ্চিত করেছে।
মুনীর হাসান: পৃথিবীর সকল সৃজনশীল মানুষ মনের আনন্দে, নিজের আনন্দে এবং অপরকে ঋদ্ধ করার জন্য তাদের কর্মটি সম্পাদন করেন। ফালতু কিছু টাকা পয়সার জন্য হাত নষ্ট করে না।
Jabed Morshed: কপিরাইট মানেই কিন্তু টাকা পয়সার মামলা নয় ।
ওপেন সোর্সের কপিরাইটগুলো কিন্তু সুন্দর উদাহরণ । বেশির ভাগ ওপেন সোর্সের কপিরাইটগুলোতেই কেবল মাত্র মূল টিম বা ব্যক্তির অবদান স্বীকার করতে হয় ।
মোস্তাফা জাব্বার: কিন্তু এখনও আমাদেরকে ডঃ জাফর ইকবালের বই রয়্যালটি দিয়েই পড়তে হয়-সুবিনের বইটি আমাকে কিনতেই হয়-এর ওয়েবলিঙ্ক নষ্ট হয়ে আছে। ধনবাদি সমাজে টাকা পয়সার বিষয় নাই-শেষ কমিউনিষ্ট মুখে এটি বলতে পারে-বাস্তব অনেক কঠিন।
মুনীর হাসান: সুবিনের বই এখন গুগলে
Click This Link
কম্পিউটার প্রোগ্রামিং
মুনীর হাসান: অথবা তার সাইটে
Click This Link
কম্পিউটার প্রোগ্রামিং: কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বইয়ের ইন্টারনেট সংস্করণ।
জাভেদ মোর্শেদ: জাফর স্যারের অনেক বই আমরা জাফর স্যারের নেতৃত্বে ওয়েবে দিয়ে দিয়েছি । আর সুবিন ভাইয়ের কয়েক চ্যাপ্টার অনলাইনে আছে । বাকিটাও হয়তো আগামী বছরই ওয়েব আসবে ।
http://www.mzibooks.org/
Books of M. Zafar Iqbal
মোস্তাফা জাব্বার: ৩ দিন খোজে ওর ওয়েবসাইটে পাইনি cpbook.subeen.com-এ নাই। জাফর ইকবাল এখনও প্রকাশকের
কাছ থেকে রয়্যালটি নেন
মোস্তাফা জাব্বার: আমি মনে করি তারা সঠিক কাজ করেন।
এটি তাদের অধিকার এবং প্রাপ্য।
মুনীর হাসান: জব্বার ভাই : রয়্যালটি আর কপিরাইট এক নয়! আমার সব বই আমি সৃজনী সাধারণ (Creative Commons) লাইসেন্সে বের করি। এর মানে হল বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যে হেক এটি প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু যে প্রকাশক আমার বই বাণিজ্যিকভাবে
প্রকাশ করেছে তার কাছ থেকে আমি ১৫% রয়্যালটি নেই। এটি নিতে আমি কোন আপত্তি দেখি না।
রয়্যালটির টাকা নেওয়া বা না নেওয়ার মধ্যে কপিরাইটতো সীমিত না!
মোস্তাফা জাব্বার: মুনির একে কি ব্যবসা বলে? ‘এটি কি ফালতু কিছু টাকা পয়সার জন্য হাত নষ্ট করা’?
সাইফ সামির: Munir Hasan স্যার, একটা বিষয় পরিষ্কার করবেন? ধরুন কেউ বাংলাদেশে বসে আমেরিকার কপিরাইটেড
ইন্টেলেকচুয়াল সম্পদ যেমন একটি মুভির মালিকের পারমিশন ছাড়াই, তাদেরকে কোন প্রকার ফি প্রদান করা ছাড়াই, কোন শেয়ারিং সাইট থেকে ডাউনলোড করে উপভোগ করছে, সেক্ষেত্রে এটি কি এক কথায় অবৈধ হবে না? এই ফাইনাল ব্যবহারকারীকে কিন্তু মুভিটির
সত্ত্বাধিকারীরা ফ্রিতে ভোগ করার অধিকার বা অনুমতি দিচ্ছে না।
লুবনা ইয়াসমিন: নির্মাণের চেয়ে সৃষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে মানুষ যা রচনা করে, তাকে বলা হয় মেধা সম্পদ বা বুদ্ধি বৃত্তিক সম্পদ।
১৮৮৬ সালের বার্ন কনভেনশনে স্রষ্টা তার সৃষ্টি থেকে কত বছর অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করবেন তার নির্ধারণ করা আছে। বার্ন কনভেনশনের বিধান অনুযায়ী সাহিত্য ও শিল্পকলাধর্মী কাজের জন্য স্রষ্টার জীবনকাল এবং তার মৃত্যুর পর স্রষ্টার বৈধ উত্তরাধিকারীগণ অতিরিক্ত পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন। বার্ন কনভেনশনে এই মেয়াদ পঞ্চাশ বছর হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ মেয়াদ স্ব স্ব জাতীয় আইন দ্বারা নির্ধারিত।
বাংলাদেশের আইনে অর্থনৈতিক অধিকারঃ স্রষ্টার জীবন কাল + ষাট বছর। আমেরিকার আইন অনুযায়ীঃ স্রষ্টার জীবনকাল + সত্তর বছর। মেক্সিকোর আইন অনুযায়ীঃ স্রষ্টার জীবন কাল + নিরানব্বই বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্রষ্টার নৈতিক অধিকারের মেয়াদ কখনই সময় দ্বারা নির্ধারিত নয়। যে কারণে শেক্সপিয়ারের রচনা শেক্সপিয়ারের নামে শত সহস্র বছর ধরে গঠিত হচ্ছে।
অন্য কথায় বলতে গেলে নৈতিক অধিকারের মেয়াদ সভ্যতার সমান বয়সী। নৈতিক অধিকারের বিষয়ে একটি তথ্য স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, বার্ন কনভেনশনে নৈতিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হলেও ট্রিপস এগ্রিমেন্ট কিন্তু নৈতিক অধিকারের বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।
সুত্রঃ বুদ্ধি বৃত্তিক সম্পদ ও কপিরাইটঃ পরিপেক্ষিত বাংলাদেশ, মোঃ মনজুরুর রহমান, রেজিস্টার, কপিরাইট অফিস। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
নিন্মের লিঙ্ক দুটি যদি কারো কোনো উপকারে আসে ভাল লাগবে।
Click This Link
Click This Link
মুনীর হাসান: জব্বার ভাই : আমি খুব পরিষ্কার করে বলেছি। কাজটা করার সময় টাকার চিন্তা মাথায় থাকে না বেশিরভাগ লোকেরই। পরে সেখান থেকে টাকা পাইলে পাবে সেটা নিয়েও আপত্তি থাকে না। টাকাটা যদি কেবল সৃজনশীলতার একমাত্র প্রণোদনা হতো তাহলে মোনালিসার সৃষ্টি হতো না!
মোস্তাফা জাব্বার: আমি কোনভাবে বুঝিনা কপিরাইট ছাড়া রয়্যালটি আসে কোথা থেকে। আর মেধাসম্পদ থাকলে তার আর্থিক মূল্য থাকবেনা কেন? ব্যবসা খুব পাপের জিনিষ? অধিকার খুব অন্যায়? বাড়ির দাম থাকলে বই-এর দাম থাকবেনা কেন?
মুনীর হাসান: অন্যায় হবে কেন? ব্যবসা খারাপ হবে কেন? কিন্তু সমস্যাটাতো ব্যবসার না।
সমস্যাটা হলো ফিলসফির। পশ্চিমা কপিরাইটের ধারণার মূল বিষয় হলো টাকা ছাড়া সবই অর্থহীন। কিন্তু আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের সুর দেখেন! গগন হরকরার সুরের ছায়ায় কিন্তু রবীন্দ্রনাথ করেছেন এবং তাতে প্রাচ্যের কপিরাইটের ধারণার কিন্তু ব্যত্যয় হয় নাই।
মোস্তাফা জাব্বার: আমাকে বোঝাও মুনির হাসান তার বইয়ের রয়্যালটি নিলে ওপেন সোর্স আর আমি নিলে কপিরাইট? কারও সম্পদ কেউ নাম বদলে দিলে ওপেন সোর্স? দুঃখজনকভাবে এসব বুঝিনা।
মুনীর হাসান: জব্বার ভাই : এখানে দ্বন্দ্বটা রয়্যালটির নয়।
আপনি আপনার বই পাবলিক ডোমেইনে দেওয়ার পরও প্রকাশকের সঙ্গে চুক্তি করে রয়্যালটি পেতে পারেন। আবার কপিরাইট আপনার কাছে রেখেও সেটা পেতে পারেন। এটার মধ্যে বিরোধ কেন দেখছেন। কপিরাইট হলো সোজা কথায় আপনি তাকে কপি করতে দিচ্ছেন কিনা। বিনিময়ে আপনি যদি টাকা নাও নেন তাহলেও কপিরাইট আপনার থাকবে।
এবং একইভাবে কেহ যদি আমার সৃজনী সাধারণের বই প্রকাশ করে তাহলে সেটার লিমিটেড সত্ত্ব আমার থাকবে।
আমি আগেই বলেছি কপিরাইটটা সোজাসুজি বোজানোর না। তত্ত্বাবধায়ক আমলে এক আমলাকে আমি বুঝাইতে পারি নাই যে শেকসপীয়রের বই-এর কোন কপিরাইট এখন নাই। তার মানে এই নয় যে, আমি তার নাটককে আমার নামে চালাতে পারবো।
মুনীর হাসান: কারো সম্পদতো কেহ নাম বদলাতে পারবে না যদি না যার সম্পদ সে অনুমতি দেয়।
এটটাতে কোন সমস্যা নাই। ওপেন সোর্সেরও না। পশ্চিমা কপিরাইটেরও না।
সাইফ সামির: Lubna Yeasmin, চলচ্চিত্রও নিশ্চয় মেধা সম্পদ বা বুদ্ধি বৃত্তিক সম্পদ।
মোস্তাফা জাব্বার: কিন্তু এসব ঘটছে এবং তার কোন প্রতিকার নাই।
যাহোক, আমরা সকলের মেধাসম্পদকে সম্মান করি এটাই বড় কথা হোক। কপিরাইট পশ্চিমাদের হলে ওপেন সোর্স কি পুবের?
মোস্তাফা জাব্বার: পশ্চিমের গণতন্ত্র চলে, অর্থনীতি চলে, মেধাস্বত্ত্ব আইন চলবেনা? আমরা আসলে স্ববিরোধী কাজই করি।
মুনীর হাসান: ওপেন সোর্স আমাদের জব্বার ভাই। হরিধান সহ আমাদের হাজার ধানের প্রজাতি হচ্ছে বড় উদাহরণ।
মুনীর হাসান: saif samir : তোমার প্রশ্নটি সহজ।
কিন্তু উত্তরটা জটিল। লম্বা কথা আজ লিখতে চাই না। কয়েকদিন পরে একটু মনে করায় দিলে ব্যাখ্যাটা করে দিবো।
লুবনা ইয়াসমিন: ওপেন সোর্স, কপিরাইট, পাইরেসি এবং নানা রকম বিভ্রান্তি-১ মুনির হাসান লেখাটি পড়লাম। একটি কবিতার লাইন মনে পড়ে গেল “ ইস্ দুনিয়ামে কিত্না চিজ হ্যায় বিকনেকো জমিন ছে জমির ত্যক্”
সাইফ সামির: উনার লেখাটি আমিও পড়েছি, কিন্তু আমার নিজস্ব ভাবনা হলো- ভিনদেশি মেধাসম্পদের পাইরেটেড কপি যখন আমাদের এখানে বিকোয় তখন সেটাকে যেমন বৈধ (সে যে অর্থেই হোক, নৈতিক বা আইনি) মানি না তেমনি আমাদের মেধাসম্পদ যদি ভিনদেশে পাইরেটেড হয় তখন সেটাকেও বৈধ (সে যে অর্থেই হোক, প্রচার বা প্রসার) বলে মানবো না।
কিন্তু এটা ঠিক, সৃষ্টির স্বাদ আস্বাদনে মানব জাতি বৈধ-অবৈধ মানে না। কিন্তু স্রষ্টার প্রাপ্য প্রদানে অবজ্ঞা বা অনীহাও পাপতুল্য মনে হয়। তাই বিষয়টা আমি স্রষ্টার উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি, তার ইচ্ছাটাই আমার কাছে মুখ্য। তিনি হয়তো অর্থের দাবিদার কিংবা আনন্দের ভাগীদার অথবা দুটোই।
ওপেন সোর্স ও মানবসম্পদ ভিন্ন গল্প।
গোলাম নবী: আবেগ দিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলতে পারেন। কারণ আবেগ প্রকাশ একটি নিজস্ব বিষয়। পেটে দানাপানি থাকলে আবেগ বেগবান হয়। সেসঙ্গে রাতে ঘুমানোর জায়গা থাকলে আবেগে আরো বেশি বেগবান হয়। একজন সৃষ্টিশীল মানুষের জীবনে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা তাকে তার কাজের প্রতি ডেডিকেটেড করে।
সৃষ্টিশীল মানুষ যদি সংসারী মানে সংসারের প্রতি দায়িত্বশীল হন, এবং তার সৃষ্টিকর্ম থেকে যদি উপার্জনের নিশ্চয়তা না থাকে তখন তার সৃষ্টিশীলতা ব্যাহত হয়। আমরা যদি বাংলা ভাষার দুই দিকপালের জীবন পর্যালোচনা করি তাহলে কিছুটা হলেও এটা উপলব্ধি করতে পারব। রবীন্দ্রনাথ জমি কিনে, বাড়ি তৈরি করে তারপর লিখতে যেতেন। সৃষ্টিশীলতা তার রক্তে মিশে থাকার পরও তিনি যে জীবন যাপন করার সুযোগ পেয়েছেন সেটা না পেলে কি হতে পারত সেটা অনুমান করতে সৃষ্টিশীল হওয়ার দরকার হওয়ার কথা নয়। কারণ সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
আবার আমরা যদি কাজী নজরুলের জীবনের দিকে তাকাই তাহলে দেখব তিনি সৃষ্টিশীল মানুষ হওয়ার পরও ফরমায়েসী লেখা লিখেছেন।
মেধাসম্পদ বিষয়টি যথেষ্ট জটিল একটি বিষয়। এটি শুধুমাত্র সৃজনশীলতা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না। একটি মানুষের জীবন অনেক ঘাত প্রতিঘাতে ভরা, তার পুরোটাই মেধাসম্পদ, কপিরাইট ইত্যাদি বিষয়ের সঙ্গে জড়িত।
একটি আইন কতোটা সার্বজনীন করা যায় সেই চেষ্টা থাকা উচিৎ।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইন যারা প্রণয়ন করেন তারা বিস্তৃত পরিসরে দেখতে পারেন কিনা সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।
বাংলাদেশের রাজনীতি এখন বিনিয়োগ ক্ষেত্র। ফলে, এখানে মানবিক ও কল্যাণের বিষয়গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত। কপিরাইট আইন নিঃসন্দেহে এর বাইরে হওয়ার সুযোগ নেই।
শেষ কথাটি হলো দেশ ও দেশের মানুষ।
আমরা কতোটা বেশি তাদেরকে রাখতে পারলাম। নাকি নিজেদের ও গ্রুপের স্বার্থকে দেখছি।
সাইফ সামির: আমরা যতোই আবেগী বা ভাববাদী হয় না কেন, শিল্পীর জীবনে অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। অর্থ ছাড়া সৃষ্টিশীলতা খালি পেটে মারা যাবে। যে সব শিল্পী অবশ্য ইতোমধ্যে বৈভবের সংসারে আছেন তারা ভিন্নভাবে ভাবতেই পারেন।
মেধাসম্পদ আইন ভৌগলিক রেখা ভেদে সার্বজনীনই হওয়া উচিত। ধনী দেশের মেধাসম্পদ ভোগের মূল্য পরিশোধ না করার জেদ বা শুধু চুরি করেই ভোগের বাসনা ঐ মেধাসম্পদ মালিকের প্রতি অমানবিক আচরণের সমতুল্য। ভোক্তার পক্ষ থেকে মানবিক আচরণ লাভ ধনী-গরীব নির্বিশেষে সৃষ্টিশীল ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। এই অধিকারকে আপনি ব্যবসা বলতে পারেন বা সৃজন কর্মের রয়্যালটি পরিশোধ।
১৫.০৮.১২
_______
নোট: ১।
কয়েকটি দৃষ্টিকটু টাইপো ঠিক করে দেয়া ছাড়া সম্পূর্ণ আলোচনাটি অবিকৃত রাখা হয়েছে।
নোট: ২। DMCA (Digital Millennium Copyright Act)
নোট: ৩। TRIPS (Trade-Related Aspects of Intellectual Property)
নোট: ৪। উল্লেখিত ব্লগার সিন্ডিকেটের পরিচয় প্রকাশ করলাম না।
সিন্ডিনায়ক বা তারা অভদ্র হতে পারে, সাইফ সামির না। উপরের সুস্থ মিথস্ক্রিয়া থেকে তারা আশা করি শিখতে পারবে, কিভাবে ভদ্রভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক বিতর্ক করতে হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।