কমনসেন্স সৃষ্টিকর্তার দেয়া একটা উপহার, সকলে ইহা নিয়ে পৃথিবীতে জন্মায় না কাজ কর্ম না থাকলে যা হয় আর কি, লেখে ফেললাম একটা. The Artist Imdb 8.2 Reviewer Rating: 9.5 Release Date: 20 January 2012 (USA) ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই, ছোটো সে তরী আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি। শ্রাবণগগন ঘিরে ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে, শূন্য নদীর তীরে রহিনু পড়ি— যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী॥ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সোনার তরী" কবিতাটা মোটামুটি সকলেই পড়েছেন এখানে, কবিতার ভাব ছিল এই, "সমাজ ও সময় উভয়েই এগিয়ে যায়. সাথে করে নিয়ে যায় মানুষের কর্মকে, কর্মকৃত মানুষকে নয়." মোটামুটি সেই থিমেই সাজানো এই মুভিটি. George Valentin নামের একজন সাইলেন্ট মুভি আর্টিস্টের গল্প, ১৯৩০ এ সবাক চলচিত্রের প্রত্যাবর্তন ও মুক চলচিত্রের অবসানকালে টিকে থাকা একজন ভুলে যাওয়া অভিনেতা. যার কর্মের চাহিদা আর সমাজে গ্রহনযোগ্য না. প্রয়োজনে সমাজ তার কর্মকেই উপভোগ করেছে. কিন্তু কালের প্রেক্ষাপট ফেলে গেছে তাকে একলা তার পুরানো জগতে.... মুভির ট্রেইলারটি দেখতে এইখানে গুতা মারুন... কেউ যদি এক কথায়ে মুভিটি সম্পর্কে বলতে বলে তবে আমি বলব অসাধারণ, অসাধারণ ও অসাধারণ. ১৯২৭ সাল হতে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত সাইলেন্ট মুভি আর টকি মুভির এই কনফ্লিক্টটি তুলে ধরা হয়েছে আরেকটা সাইলেন্ট মুভির মাধ্যমে. জ্বি হ্যা, এই মুভিটাও একটা সাইলেন্ট মুভি, মুভি ইন্ডাসট্রি থেকে মূকচলচিত্র বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার একাশি বছরের মধ্যে মুভি ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছে অনেক পরিবর্তন, কালার প্রিন্ট, এইচডি, ব্লুরে, থ্রিডি এরকম লেটেস্ট সব প্রযুক্তির ভিতরে আবার নতুন করে প্রাচীন সাদাকালো সাইলেন্ট মুভি বানালে দর্শক মহলে কেমন রেসপন্স পাবে এটাই ছিল এই "The Artist" বানানোর সময়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন. কিন্তু অস্কারপ্রাপ্ত ফরাসী ডিরেক্টর ও এই মুভির লেখক Michel Hazanavicius অনেক আশাবাদী ছিলেন. তার প্রচেস্টায়ে এই মুভি দর্শকদের কাছ থেকে অনেক সারা পায়. Best Motion Picture of the Year, Best achievement in Directing, music, costume সহ মোট পাঁচ পাঁচটি ক্যটাগরিতে অস্কার পেয়ে মুভিটি Imdb টপ ২৫০ এ ১৭৪তম অবস্থান ধরে রেখেছে. এছাড়াও মুভিটি বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়ায়ে ১০৯ টি পুরস্কার পেয়েছে. তবে একদম যে পারফেক্ট ছিল মুভিটি তাও না, সাইলেন্ট মুভি হওয়ায়ে মুভিতে স্ক্রিন ক্যাপশন আছে অনেক, কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথার সময়ে ডায়ালগগুলো স্ক্রিনে দেখানো হয়. সমস্যা বললে বলতে হবে ক্যাপশনগুলো হলো ফরাসী ভাষায়ে, আর বেশ কিছু সিন এ ক্যাপশন দেওয়া হয় নি যেখানে ক্যাপশন দেওয়াটা দরকার ছিল. (সাবটাইটেল রেকমেন্ডেড) মুভির ডিরেকশন, কস্টিউম সিনেম্যাটোগ্রাফির পাশাপাশি মুভির যেটা সবচেয়ে আকর্ষনীয় লেগেছিল সেটা হলো কাস্টিং ক্রু. মুভির মেইন চরিত্র ভ্যালেন্টিন, এককালের হাসিখুশি একটি মুখ, মুখে হাসি লেগেই থাকতো, কিন্তু পারস্পরিক কারণে মন দেহ সব ভেঙ্গে পরে. হতাশ এই অভিনেতার রোলে অভিনয় করেছেন ফরাসী অভিনেতা Jean Dujardin. মনে হয় এই রোলের জন্য তার চেয়ে পারফেক্ট আর কেউই ছিল না. চুলের ছাট, মুখভঙ্গি, হাটাচলার ইস্টাইল দেখলে আপনি বলতেই পারবেন না কোন কালের মুভি দেখছেন, দেখতে পুরাই ক্লাসিক এক্টরদের মত লাগছিল. মুভিটি দেখাকালে শুধু দুজার্দিনের দিকেই আপনার চোখ আটকে যাবে. চলাফেরায়ে চার্ম, আর তার হাসি? যেকোনো মেয়ে ফিদা হয়ে যেতে পারে তার হাসি দেখে. এরকম অসাধারণ অভিনয়েরই জন্য জিন দুজার্দিন ২০১১ সালে Best Performance by an Actor in a Leading Role এ অস্কার পান. ভ্যালেন্তিনকে এসিস্ট করেছে রাইসিং মুভি স্টার Peppy Miller, যে একজন এক্সট্রা হিসেবে মুভি ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে ও ভ্যালেন্তিনের সাথে অভিনয়ের ভিতরেই সুযোগ পেয়ে যায় আরও উপরে উঠার, এই রোলে অভিনয় করেছে গর্জিয়াস Bérénice Bejo. পুরো মুভিটা মূলত এই দুইজনের কাহিনী নিয়েই. দেখতে পাবেন চোখে পানি আনা ট্রাজেডি, ঠোটে হাসি আনা কমেডি আর হৃদয় পূর্ণ করা রোমান্স. মাত্র $15,000,000 বাজেটের মুভিটি মোটমাট আয় করে $44,667,095. ২০১১ সালের মুভি অফ দি ইয়ার নির্বাচিত হয় এই মুভিটি. দেরী না করে চটজলদি দেখে ফেলুন মুভিটি. জানেন তো, ভালো জিনিস বেশিদিন ফেলে রাখতে নেই.
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।