আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রামীন ব্যাংক ও তার পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংকটির ধ্বংসের বীজ কি তার গঠনতন্ত্রেই?

লিখি না, পড়ি.... ০৪/০৮/২০১২ তারিখের প্রথম আলোর খবরঃ "সব ব্যাংকেই এমডি নিয়োগোর ক্ষমতা পর্ষদের হাতে। কেবল গ্রামীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। " প্রশ্ন হল-গ্রামীন ব্যাংকের পর্ষদে আছে কারা? আর অন্য ব্যাংকের পর্ষদেই বা কারা? ১২ জনের মধ্যে ৩ জন সরকার মনোনীত আর ৯ জন ব্যাংক সদস্য, অশিক্ষিত গ্রামীন মহিলা। তারা এমডি নিয়োগসহ ব্যাংকের অন্যান্য আর্থিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখে কি? এ আলোচনার আগে দেশের এরুপ একটি প্রতিস্ঠানেরক বিষয়ে আপনাদের জানাব, যা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। আর.পি.সি.এলঃ দেশে পল্লী বিদ্যুত সমিতি (PBS) নামে ৭০ টির ও বেশী বিদ্যুত বিতরনী প্রতিষ্ঠান আছে।

যারা পিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুত কিনে সমিতির মাধ্যমে বিতরন করে। আর সমিতি গুলোকে নিয়ন্ত্রন করে সরকারের পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বা (REB)। ৯৪/৯৫ সালে (REB) একটি উৎপাদন কোম্পানী গঠন করে, নাম- রুরাল পাওয়ার কোঃ লি বা (RPCL) । যেখানে প্রথমে বিনিয়োগ করে ৫টি স্বচ্ছল PBS । পরে আরও প্রায় ১০ টি সমিতি যোগ দেয়।

আপনারা জানেন যে সমিতির প্রত্যেক গ্রাহকই সমিতির সদস্য তথা মালিক আর সমিতির জিএম, এজিএমসহ সব কর্মচারী হল তাদের সারভেন্ট। সেই মোতাবেক সব সমিতিতেই নির্বাচন হয়। আর নির্বাচিত ১৫ জন ব্যাক্তি পদাধিকার বলে RPCL এর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। সমিতিতে সাধারনত উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতা বা কলেজের শিক্ষক বা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা অত্র এলাকার কোন গন্যমান্য ব্যক্তি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। আর তারা এলাকার যত গন্য মান্য বা করিৎকর্মা লোক হন না কেন বিদ্যুত ব্যবসা তাদের বোঝার কথা না।

RPCL এর বোর্ড মিটিংএর সময় তারা ঢাকায় আসেন, RPCL এর গেস্ট হাউসে থাকেন আর টিএডিএ নিয়ে জামাই আদরের ঢাকা ট্রিপ শেষ করে বাড়ী ফিরে যান। RPCL ময়মনসিংহে প্রথম বিদ্যুত কেন্দ্র করার পর তা পরিচালনার দায়িত্ব দেয় একটি ওএন্ডএম (O&M) কোম্পানী কে। কোম্পানীটি ২ বছরের মধ্যেই ঐসব মহামতি পরিচালকদের হাত করে ফেলে । আর কেয়ার টেকার হয়ে মালিকের উপর কতৃত্ব করতে শুরু করে। RPCL এর ২য় ও ৩য় পর্যায়ের কাজে এর রক্ত চুষে RPCL কে দেউলিয়াত্বের পথে নিয়ে যায়।

তবে (O&M) কোম্পানী টি শেষে এক মহা ভুল করে ফেলে। তা হল -জোট সরকারের সময়ে সব ব্যবসায়ী বা ব্যবসা প্রতিষ্টান যখন হাওয়া ভবন এ হাওয়া দিয়ে চলছিল তখন তারা হাওয়ার বিপরীতে চলে যায়। ফলাফল - ২০০৫ সালের ৩ ই আগস্ট সরকারের নির্দেশে RPCL O&M কোম্পানী কে ময়মনসিংহ প্লান্ট থেকে বের করে দেয়। এর পর আরও কাহিনি আছে। সেদিকে না যাই।

বর্তমানে RPCL আর দশটা সরকারী কোম্পানীর মত ভাল মন্দ মিলিয়ে চলছে। গ্রামীন ব্যংকঃ আসা যাক গ্রামীন ব্যংকে। দেশে আর সব ব্যাংকে পর্ষদ সদস্যরা উল্লেখযোগ্য সংখক শেয়ারের মালিক। ব্যাংক সহ অন্যান্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ব্যাংকের লাভ-ক্ষতির সাথে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত।

তারা ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখে এবং সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু গ্রামীন ব্যাংকের অবস্থা তা নয়। ঐ ৯ জন সদস্যের কেউ স্বতন্ত্র মতামত দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। তারা শুধুই রাবার স্ট্যাম্প! বেকুব আওয়ামী সরকারের কথা কিছু বলতে চাই না। তবে ৭০/৭৫ বছরের পর মানুষ সাধারনত কর্মক্ষম থাকে না।

ধরে নিই সরকার ডঃ ইউনুস কে স্বপদে ফেরত আনল। আর যদি ডঃ ইউনুস পর্ষদ কে বলে আগামী ৬ মাস পর আমি অবসরে যাব, আপনারা একজন এমডি নির্বাচন করেন। তাহলে ঐ পর্ষদ কি এমডি বাচাই করতে পারবে? সহজ উত্তর হল - না। কারন তারা সর্বদা ডঃ ইউনুসকে পীর মেনে শুধুই রাবার স্টাম্পের কাজ করেছে! ডঃ ইউনুস কি এমন কোন ব্যবস্থা করেছে যে তার অবর্তমানে তার প্রান প্রিয় ব্যাংক টি ভাল ভাবে চলতে পারবে? সিস্টেম বিল্ডআপ না করে গেলে, অন্য কেউ কি ডঃ ইউসুস এর মত করে ব্যাংক টি চালাবে এমন ভাবা কি অবান্তর নয়? অন্য কেউ RPCL এর O&M কোম্পানীর মত নয় জন রাবার স্টাম্প মহিলা কে ব্যবহার করে ব্যাংকের চৌদ্দ টা বাজাবে না তার গ্যারান্টি কি? তাহলে কি ব্যাংক টির ধ্বংসের বীজ তার গঠনতন্ত্রেই ? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.