রোগব্যাধি সম্পর্কে জানার মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক ব্যাবস্থা সবাইকে জানিয়ে দেয়া। গ্রামীণ ব্যাংক –-----সুদের হার বিশ্লেষণ ।
১৯৮৩ সালে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর পর থেকে সম্প্রসারণ এখনও চলছে। বর্তমানে ২৫৬৫ টি শাখা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে । ত্রিশ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মরত আছে ।
সুদের হার নিয়ে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সমালোচনাও চলছে । তাই সকলের কাছে বিষয়টা পরিষ্কার করার জন্য আমার এই চেষ্টা ।
গ্রামীণ ব্যাংক –এ ৫ ধরণের ঋণ চালু আছে ।
(১) সহজ ঋণ
(২) গৃহ ঋণ
(৩) উচ্চ শিক্ষা ঋণ
(৪) সংগ্রামী (ভিক্ষুক) সদস্য ঋণ
(৫) কেন্দ্র ঘর নির্মাণ ঋণ ।
এবার প্রতিটি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক ।
১। সহজ ঋণ
যদি কেউ ১০০০ টাকা ঋণ নেন তাহলে ৪৪ কিস্তিতে তাকে ঋণ + সুদ পরিশোধ করতে হবে ১১০০ টাকা । অর্থাৎ ১০০০ টাকার সুদ ১০০ টাকা ।
প্রতি হাজারে কিস্তি ২৫ টাকা , ৪৪ কিস্তিতে পরিশোধ । হিসাব এ রকম---
আসল ১০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে ( ১* ২৫*৪৪)= ১১০০ টাকা ।
আসল ২০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (২*২৫*৪৪ ) = ২২০০ টাকা ।
আসল ৩০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (৩*২৫*৪৪) = ৩৩০০ টাকা ।
আসল ৪০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (৪*২৫*৪৪) = ৪৪০০ টাকা ।
আসল ৫০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (৫*২৫*৪৪) = ৫৫০০ টাকা ।
...................................................................................................
আসল ১০০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে ( ১০*২৫*৪৪) = ১১০০০ টাকা ।
আসল ২০০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (২০*২৫*৪৪) = ২২০০০ টাকা ।
আসল ৫০০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (৫০*২৫*৪৪) = ৫৫০০০ টাকা ।
আসল ১০০০০০ টাকা হলে পরিশোধ করতে হবে (১০০*২৫*৪৪) = ১১০০০০ টাকা ।
কিন্তু অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রতি হাজারে ২৫ টাকা করে ৪৬ কিস্তি নেয় । ব্র্যাক ,আশা প্রতি হাজারে ১৫০ টাকা সুদ নেয় ।
আর গ্রামীণ ব্যাংক নেয় প্রতি হাজারে ১০০ টাকা ।
২। গৃহ ঋণ
সদস্যদের ঘর বানানোর জন্য এই ঋণ দেওয়া হয় । ২৫০০০ টাকা দেওয়া হয়। যাতে গরীব মানুষ ঝড় বৃষ্টিতে কষ্ট না পায় ।
সুদের হার ৮% । এই ঋণ চার বছরে পরিশোধ করতে হয় ।
৩। উচ্চ শিক্ষা ঋণ
সদস্যের ছেলেমেয়েদের এই ঋণ দেওয়া হয় । ৪ বছরের কোর্সের জন্য ১০০০০০ টাকা ।
মাস্টার্স কোর্সের ৩০০০০ টাকা । মোট ১৩০০০০ টাকা । শিক্ষাকালে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে না । সুদ চার্জও করা হবে না । ৫ বছর পর সুদ চার্জ করা হবে ।
এক্ষেত্রে সুদের হার ৫% ।
৪। সংগ্রামী (ভিক্ষুক) সদস্য ঋণ
যারা ভিক্ষা করে তাদেরকে এই ঋণ দেওয়া হয় । ৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা বা ক্ষেত্রবিশেষ ৫০০০ টাকা দেওয়া হয় । ফেরি ব্যবসা করে যাতে ভিক্ষুক ধীরে ধীরে ভিক্ষাবৃতি ত্যাগ করে ।
এই ঋণের কোন সুদ নাই । অর্থাৎ সুদ মুক্ত ঋণ ।
৫। কেন্দ্র ঘর নির্মাণ ঋণ ।
এটাও সুদ মুক্ত ঋণ ।
সদস্যদের ঘর ছোট । তারা যাতে সকলে ভালভাবে বসতে পারে সেজন্য এই ঋণ দেওয়া হয় । সকল সদস্য মিলে এই ঋণ পরিশোধ করে । সপ্তাহের কিস্তির দিন বাদে অন্যদিন তারা সেখানে সামাজিক অনুষ্ঠান
করতে পারেন ।
কাউকে কখনো জোর করে ঋণ দেওয়া যায় না।
সবাই নিজের ইচ্ছায় ঋণ নেয় । গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে কোন ঘুষ দিতে হয় না । সার্ভিস চার্জ দিতে হয় না । কোন কিছু বন্ধক রাখতে হয় না । শুধু ১০ টাকা মূল্যের রেভিনিও স্ট্যাম্প লাগে , যা সরকারের আয় ।
এখানে সরকারী স্কেলে বেতন দেওয়া হয় । যাবতীয় আর্থিক সুবিধা অন্যান্য সরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মত । কিন্ত কারও ঘুষ খাওয়ার কোন সুযোগ নাই । প্রমোশন পেতেও ঘুষ দিতে হয় না । বদলীর জন্য ঘুষ দিতে হয় না ।
পেনশনের টাকা তুলতে কোন ঘুষ দিতে হয় না ।
যদি কারও জানার আগ্রহ থাকে ,আপনার আশে পাশে যে কোন শাখায় চলে যান । দেখবেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা শাখা ব্যবস্থাপক গ্রামের শিক্ষা বঞ্চিত মানুষের কল্যানে কীভাবে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। আর আপনার জানার জন্য যা দরকার তাও পাবেন ।
সবশেষে একটা কথা বলি –বিদেশীরা এই ব্যাংক দেখতে আসেন , কিন্ত আমাদের দেশের যারা অন্যের সমালোচনা করে দিন কাটান তারা আসেন না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।