অ আ ক খ প্রতি বছর সরকারী ভাবে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয় । কিন্ত এই বছর থেকে আর তা সরকারি প্রটোকলে পালিত হবে না । বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী দেশে আদিবাসী বলতে কিছু নেই, সংবিধানে দেশের উপজাতিদের বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে "ক্ষুদ্র নৃত্বাত্তিক জনগোষ্ঠি" নামক শব্দ মালা, কিন্তু দুঃজনক ভাবে মিডিয়া এই ব্যাপারে নিরব তারা আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করেই যাচ্ছে, এট পরিহার করা উচিৎ, সরকারের এব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া দরকার । যাক আমি আসল কথায় আসি, ছোট বেলা থেকে পাঠ্য পুস্তকে আমার চাকমা,মারমা,মগ মণীপুরি ইত্যাদি ক্ষুদ্র নৃত্বাত্তিক জনগোষ্ঠিকে উপজাতি হিসাবে জেনে এসেছি, এবং সভ্য সমাজে তাদের উপজাতি নামে পরিচিত করা হত । কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে হঠাৎ করেই উপজাতিরা আদিবাসী হয়ে গেল, অবশ্য এক শ্রেনীর মিডিয়া এই প্রচারণায় সব সময় জড়িত ।
এখন দাবি ওঠেছে উপজাতিদের আদিবাসী হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে! এখন চলুন আগে দেখি "আদিবাসী" শব্দের মানেটা কি? উইকিতে দেওয়া সংজ্ঞাঅনুযায়ী
"কোন এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন জনবসতি ও তাদের সংস্কৃতিকে বোঝাতে আদিবাসী পদটি ব্যবহৃত হয়, আধুনিক জনগোষ্ঠীর জৈব ও সামাজিক প্রভাবজাত নয় এমন জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলা হয়"
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের পাহড়ি উপজাতিরা কি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীব জনগোষ্টী আর বাঙ্গালীগণ বহিরাগত ! ।
ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলে না, ইতিহাস সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন যে মুন্ডা নৃগোষ্ঠীর মানুষদের (মুন্ডা, ওঁরাও ইত্যাদি) এদেশে নিয়ে আসা হয়েছে বিভিন্ন কাজের শ্রমিক হিসেবে সর্বপ্রথম সেন রাজাদের সময়কালে। চাকমারা এসেছে আরাকান প্রদেশে বর্মী আগ্রাসনের সময়, সময়কাল অষ্টাদশ শতাব্দী।
তাহেল আমার কেন তাদের আদিবাসী বলবো ? বাংলাদেশের কোন কোন মহল থেকে আদিবাসী বিষয়ক ২০০৭ সালের জাতিসংঘের ঘোষণারা কথা বলে থাকেন আর সেই অনুযায়ী আমাদের নাকি উপজাতিদের আদিবাসী বলতে হবে? তারা এখানে অস্ট্রেলিয়া এবং ল্যাটীন আমেরিকার দেশ সমূহের উদারণ দিয়ে থাকেন কিন্তু এই সকল দেশ সমূহে আসলে তারা আদিবাসী কারণ ইওরোপিয়ানরা কোলোনিয়াল যুগে ল্যাটীন আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় আসে আর তাই সেখানে উপজাতিরাই আদিবাসী সুতুরাং বাংলাদেশ এখানে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ।
বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত দেশের 'উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্র্রদায়'-এর জন্য সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরির ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য কোটা সুবিধা রয়েছে যা আমাদের সাথে বৈষম্য বলাই চলে ।
তারপর কেন এত মিথ্যা আদিবাসী জিকির ?
উপজাতিদের নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে সংবিধানে বাঙালি জাতিয়তাবাদ সংযুক্ত করায় যা মোটেও উচিৎ হয় নি, পৃথিবীর কোন প্রগতিশীল দেশের সংবিধানে কোন বিশেষ রেইস ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ সংবিধানে স্থান হয় নি, তাই সংবিধানে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ সম্পূর্ন অনাকাঙ্খিত । কিন্তু এই নিয়ে যারা আদিবাসী শব্দ নিয়ে সোচ্চার তারা কোন কথা বলেন নি এবং বলতেছে না?
প্রকৃত পক্ষে আমার মতে সংবিধানে বাঙ্গালদেশী পরিচয়ই থাক কোন বিশেষ জাতিয়তাবাদ বা ধর্মের নাম থাকার দরকার নেই । আদিবাসী দরকার নেই উপজাতি ও দরকার নেই আমারা সবাই বাংলাদেশী ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।