ভাল নাই। জীবন নিয়ে ভয়ে আছি। বুঝলেন ভাই একটু বিপদে আছি।
রিক্সায় বসে ভবিষ্যত জীবনের কথা ভাবছিল হাজীবাবু। কথা শুনে বললো কেন কি হইছে?
আমরা মাটি কাটার কাম করি।
বললো রিক্সাওয়ালা।
হাজীবাবু ঢাকায় এসেছে সৌদীআরবের টিকিটের খোঁজ খবর নিতে। ওর বাবা সৌদী আরবে মারা গেছে তাই ও এখন সৌদী আরবে যাবে। ওখানে ওর বাবার রেখে যাওয়া কিছু সম্পত্তির টাকা পাওনা আছে তা সে নিয়ে আসবে। ছোট বেলায় সৌদীতে বাবার সাথে হজ্জ করাতে ওর নাম হাজীবাবু হয়ে গেছে।
সবাই ওকে এই নামেই ডাকে। এই জন্য ঢাকায় আসা। ঢাকায় পড়াশুনার ফলে ওর অনেক বন্ধু বান্ধব আছে। আত্বীয় স্বজনও আছে। মালীবাগ ওর চাচার বাসাতেই ছিল।
আজই দিনাজপুর চলে যাবে।
ওদিকে রিক্সাওয়ালা বলে যাচ্ছে “কয়েকদিন আগে মাটি কাটতে গিয়া আমার শ্বশুর ক্ষেতে একটা জিনিষ পাইছে। খোদাই করা ইংরেজীতে লেখা। জিনিসটার অনেক পাওয়ার। লোহাও টানে।
চুম্বকের মতো।
খাইছে ব্রিটিশ পিলার না তো? এর কথা ও আগেও শুনেছে। ব্রিটিশ পিলার, কষ্ঠি পাথরের মূর্তি পাওয়া গেলে অনেক দামে বিক্রিও করা যায়। ফরেনাররা এসে কিনে নিয়ে যায়। হাজীবাবু রিক্সার সিটে আরেকটু আগাইয়া মনোযোগ দেয় রিক্সাওয়ালার কথায়।
দেখতে কেমন?
ক্রেষ্টের মতো লম্বা আর গোল। ঘারো পিতল কালার। ১ ফুটের মতো লম্বা হইবো। চিকচিক করে।
কয়দিন হইছে পাইছেন?
বেশীদিন না।
আর অনেকে কয় ওইডা নাকি ব্রিটিশ পিলার।
শুনে হাজী বাবুর মনে হলো সে এমন জিনিসই খুঁজছে। আশার আলো দেখতে পেল। চোখগুলো চকচক হয়ে উঠলো।
ভাই চাউল দিলে একদম পুড়াইয়া ফালায়।
বলে রিক্সা চালাতে চালাতে ওর দিকে তাকালো ৩৫ বছরের মতো বয়স্ক রিক্সাওয়ালা।
চাউলগুলা নিয়া আইছিলাম দেখবেন।
কই দেখি?
বেলী রোডের সামনে রিক্সা থামাইয়া রিক্সাওয়ালা বললো নামেন।
হাজীবাবু নামতেই সে সিটের নিচ থেকে একটা পলিথিন বের করে তার ভেতর থেকে কিছু কালো চাল বের করে হাজী বাবুর হাতে দেয়।
চাউলগুলা হাতে নিয়ে একটা চাল মুখে নিয়ে চিবিয়ে দেখলো।
হু চালই। পুড়ে কেমন কালা কালা হয়ে গেছে।
আপনি কি আর কাউরে বলছেন?
না ভাই কারে কই। আপনারে দেইখা মনে অইলো কয়া যায় তাই আপনেরেই কইলাম।
সত্যি?
মিথ্যা কমু কেন? কইলে কি আপনে লইয়া যাইবেন?
আবার রিক্সায় উঠতেই রিক্সা চালু হলো।
তা আমারে কি জিনিসটা দেখাইতে পারবেন?
হ পারুম চাইলে আইজকাই পারুম।
কেমনে ?
আমার লগে দেশে চলেন।
দেশ কই?
কিশোরগঞ্জ কটিয়াদি থানা ফুলের হাট স্কুলের লগে আমার শ্বশুড় বাড়ি। চলেন কাইলকা আইসা পইরেন।
আচ্ছা আমি যাবো চলেন।
সারা রাত ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ। তারপর কিশোরগঞ্জ থেকে ফুলবাড়ি আসলো ওরা। আসতে আসেতে দুপুর হয়ে গেল।
টিনের তৈরী রিক্সাওয়ালার শ্বশুরবাড়িতে বসে খাওয়া দাওয়া করলো। ওর বউ মুরগি রান্না করেছিল।
খেতে খেতে অনেক কথা। কিন্তু তারা জিনিসটি আর দেখাচ্ছে না। মনে মনে হাজীবাবু অর্ধৈয্য হয়ে গেল।
এক সময় বাসার সবাই চলে যাওয়াতে সে ঘরের খাটে একাই বসে রইলো। প্রায় ঘুমিয়েই পরেছিল সে।
বিকালের পরপর সন্ধার দিকে এক লোক গলায় মাফলার পেচাঁনো। ঘরে এসে তাকে বললো ভাই আসেন। বাবু তার পিছু পিছু চলতে লাগলো।
কয়েকটি বাড়ি তারপর দুটি মাটির রাস্তা পাড় হলো। সন্ধা হয়ে গেছে তখন।
রাস্তা ঠিকমতো দেখা যায় না। পথ দেখে চলতে বাবুর কষ্ট হচ্ছিল। ভাবছিল কই নিয়া যায়। আবার কোন বিপদে পড়ে নাকি? বাবু এসব ভাবতে ভাবতে হাটছিল। এক সময় একটি বাড়ির উঠানে এসে পড়লো তারা।
উঠানে বেশ কয়েকজন লোকজন। সবাই খুব চুপচাপ গম্ভীর। কেউ কোন কথা বলছে না। ইশারায় ইশারায় কথা বলে। বিষয়টা যে অনেক জটিল গোপন তা পুরোপুরিই বোঝা যাচ্ছিল।
তখন চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আরোও আধ ঘন্টা পরে দুইজন লোক এসে তাকে একটি অন্ধকার ঘরে নিয়ে মুখ থেকে মাফলার সরিয়ে বললো এইটা দেইখা কি অইবো। ঘরে একটি কুপি জ্বলছে।
হাজীবাবু তার দিকে তাকিয়ে বললো আপনারা চিন্তা কইরেন না কাকা। আমার বন্ধু এই ব্যবসা করে।
ভালো দাম পাওয়া যাইবো। আমি এর বিক্রির ভালো ব্যবস্থাও করে দিবো।
লোকটি বললো আপনি শহরের মানুষ যা ভালো বুঝেন করেন। কিন্তু আমাগো ঠকাইয়েন না। বলে লোকটি খাটের নিচ থেকে একটা শোয়ানো মাটির কলস খুব সাবধানে বের করে তার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে কাপড়ে পেচানো কিছু একটা বের করলো।
বললো আসেন দেখেন।
বাবু নিচে বসলে সে বললো নেন ব্লেড লন। বাবু ব্লেডটি সামনে ধরতেই টান দিয়ে তা জিনিসটি টেনে নেয়। লোকটি আবার তা ছাড়িয়ে দুরে রেখে আবার বললো নেন চাউল নেন। সে নিজেই কিছু চাউল নিয়ে জিনিসটির কাছে নিতেই চাউল গুলো মনে হলো চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে গেল।
আবার মাটিতে ঝড়ে পড়লো। কুপির আলোতে আধো অন্ধকারে তা দেখে বাবু খুশি হয়ে উঠলো। সে নেড়ে চেড়ে ভালো করে দেখতেই লোকটি তা নিয়ে ভালভাবে পেঁচিয়ে আবার জায়গা মতো রেখে দিল।
বাবু চালগুলো পকেটে রেখে দিল পরে ভাল ভাবে দেখবে বলে। খুশিতে ওর মন আটখানা।
এবার বুঝি ভাগ্য তার সহায় হয়েছে।
আচ্ছা আমি বাড়িতে গিয়ে টাকা ম্যানেজ করে আপনাদেরকে এক লাখ টাকা দিব। আর জিনিসটা বিক্রি করে যা আসবে তার অর্ধেক আপনাদের অর্ধেক আমার। কি ঠিক আছে ? আপনারা রাজি?
হু রাজি তবে কিন্তু কাকা আপনি আমগোরে ঠকাইয়েননা। আমরাতো আর জানবো না যে আপনি কত বেচছেন।
নানা ঠকানের তো প্রশ্নই আসে না। আমি হাজী মানুষ। তাতাড়ি বলে উঠলো হাজী বাবু।
ঠিক আছে।
বাবু জানে এটি কোটি টাকার নিচে বিক্রি হয়না।
কথার্বাতার পর সে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেল। এতো রাতে ট্রেন নাও পেতে পারে তাই রিক্সাওয়ালা লোকটি তাকে বাস স্টপিজ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেল।
হাজীবাবু তার দিনাজপুরের বাড়িতে এসে একটি জমি বিক্রি করে দিল। এটি তার সৌদীআরবের প্লেনের টিকিটের ভাড়া। কয়েকদিনের মধ্যেই আবার ঢাকায় এসে সে কিশোরগঞ্জ চলে আসলো।
মালীবাগ থেকে সে তার ২০ বছর বয়সের সুমন নামের ভাইগ্নাকেও সঙ্গে নিয়ে আসলো।
বাসে আসতে আসতে কত স্বপ্ন সে দেখছে। সে কয়েকজনের সাথে এরইমধ্যে কথাও বলে এসেছে। তার এক বন্ধু তাকে বললো যে একটা চা বাগানের মালিক নাকি এগুলা কিনে বিদেশে বিক্রি করে। হাজীবাবু এটি পেলে প্রয়োজনে সে সেই চা বাগানের মালিকের সাথে কথা বলিয়ে দিবে।
বাবু ভাবছে চা বাগানের মালিক ছাড়া কি এতো দামী জিনিস কেউ কেনাবেচা করতে পারে। আহ স্বপ্নের ব্রিটিশ পিলার। ব্রিটিশরা খুব আচ্ছা আদমী ছিল। আচ্ছা যদি সব ঠিকঠাক মতো হয় তবে ওই চা বাগানের মালিকের সাথে মিটিং করবে কোথায়? নিশ্চয়ই সোনারগাঁ হোটেলে। কিন্তু সমস্যা হলো যে ওই সব পাচঁ তারকা হোটেলের আভিজাত্য তার ঠিক সইবে না।
কিন্তু বাধ্য হয়ে তাকে তাই করতে হবে। তার একটু মন খারাপও হলো। কি আর করা।
কিন্তু ফুলবাড়ি গ্রামে রিক্সাওয়ালার শ্বশুড়বাড়িতে এসে সে কাউকেই দেখতে পেলনা। বাড়ির উঠানে হাজীবাবু আর ভাইগ্না সুমন বসে রইলো।
প্রায় অনেক পরে রিক্সাওয়ালা ও তার বউ বাড়িতে আসলো। আবার মুরগী দিয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে অপেক্ষা করতে লাগলো।
সন্ধার সময় এক লোক এসে তাকে নিয়ে গেল। ভাইগ্নাটিকে এই বাসাতেই থাকতে বলে গেল। বললো বেশী লোক গেলে ঝামেলা আছে।
এরই মধ্যে নাকি গ্রামের অনেকের জানাজানি হয়ে গেছে।
লোকটির পিছনে পিছনে আসতে আসতে সে একবার পড়েও যেতে ধরলো। পুরো অন্ধকার চারদিক। একটি কলা বাগানের পাশের এক ক্ষেতের কিনারে এসে অপেক্ষা করতে লাগলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই আরো দু জন লোক এসে বললো টাকা দেন।
তার একটু কেমন সন্দেহ হতে লাগলো। সে একটু ইতস্ত করাতে লোকটি তার হাতেই পলিথিনে মোড়ানে একটি জিনিস দিয়ে বললো নেন। সে হাতে নিয়ে খুলে দেখতে গেলে একজন বলে উঠলো ভাই এখানে দেইখেন না। ঝামেলা আছে। তাড়াতাড়ি করেন।
তাছাড়া সে দেখে অনেক কিছু পেচানো। লোকটি বললো যে এটি নিয়ে তো বাসে যেতে পারবেন না। এর আর্কষনে বাস চলবে না। আর ট্রেনও বন্ধ হয়ে যেতে পারে তাই ভাল করে কার্বন কাগজ দিয়ে পেচানো আছে। কথা শুনে সে নিশ্চিন্ত হয়ে টাকা দিয়ে দিল।
রিক্সাওয়ালার সেই বাড়িতে এসে ভাইগ্নাকে নিয়ে রেল ষ্টেশনে চলে আসলো। তবে এত ভারি কেন। তার কেমন যেন সন্দেহ হওয়াতে প্রায় জোড় করেই হাসিমুখে সেই রিক্সাওয়ালাকেও রেল ষ্টেশন পর্যন্ত নিয়ে আসলো। ট্রেন যখন ছাড়লো ঠিক তখন সে রেলের টয়লেটে গিয়ে তাড়াতাড়ি জিনিসটি খুলে দেখতে চাইলো। পলিথিনের উপর পলিথিন।
কার্বনের উপর কার্বন দিয়ে পেচানো মোড়ক খুলতে খুলতেই অনেক সময় লেগে গেল। ততক্ষনে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। সে খুলে দেখলো কিছু মাটিতে একটি গাছের ডাল দিয়ে সুতা দিয়ে বেধে দেওয়া। তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। দুশ্চিন্তায় সে দৌড়িয়ে ভাইগ্নাকে এসে বললো সুমন আমি শেষ, তাড়াতাড়ি লাফদে বলেই সে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়লো।
সুমনও কিছু না বুঝে ট্রেন থেকে লাফ দিতে গিয়ে দেখে ট্রেন অনেক জোড়ে ছুটছে। তারপরও সাহস করে রেল লাইনের পাশের এক ঝোপঝাড়ে লাফ দিল। পা কিছুটা ছিড়ে রক্ত বের হতে লাগলো। নিরব রেল লাইনের সমান্তরালে বাবু ছুটছে। অন্ধকার রেল লাইনে রিক্সাওয়ালাও দৌড়–চ্ছে।
পেছনে হাজীবাবু। যেভাবেই হোক ধরতে হবে।
বাবু দৌড়িয়ে রিক্সাওয়ালাকে ধরে ধামাধাম কয়েকটি ঘুসি থাপ্পড় লাগাতে মেরে বলতে লাগলো তোরা এটা আমাকে কি দিলি আমি এখন কোন মুখে বাড়ি যাব। তার চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি ঝরতে লাগলো।
রিক্সাওয়ালা বলছে ভাই আল্লার দোহাই লাগে আমি এগুলো কিছু জানি না।
জানলে কি আমি ষ্টেশন পর্যন্ত আসতাম নাকি। কন ভাই আমি সত্যিই কিছু জানি না।
তাহলে দৌড় দিলি কেন। বলে আরো জোড়ে চড় থাপ্পড় মারতে লাগলো বাবু। তার ভাইগ্না সুমন শক্ত করে রিক্সাওয়ালার হাত চেপে ধরে আছে।
অন্ধকার চারদিক। তিনটি মানুষ রেললাইনে জীবনের বোঝাপড়া করছে।
ষ্টেশনের পাশের একটি টিনশেড হোটেলের দোতালার এক ডাবল বেডের রুমে উঠলো সবাই। মাঝে বাবু আবার নেমে
একটি ব্লেড কিনে নিয়ে আসলো। গেট লাগিয়ে ব্লেড বের করে বললো আমি তোকে এখন মেরে শেষ করে ফেলবো।
বাবুর চোখ থেকে নোনা পানির দাগ তখনো মিলিয়ে যায়নি।
রিক্সাওয়ালা ভয় পেয়ে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো ভাই আপনি চিন্তা কইরেননা আমি সকালে যেমনেই হোক আপনের টেকা আর নইলে পিলারটা নিয়া দিমু। এই যে আমি আমার পোলার কসম খাইতাছি। না অইলে আমার পোলা মইরা যাইবো। কিন্তু বাবু কিছুতেই বিশ্বাস করেনা আবার চড় মারে।
শেষে রিক্সাওয়ালা ওযু করে বিছানায় দাড়িয়ে নামায পড়ে। কোরআন শরীফ ধরে তার বাচ্চার মরার কসম খায়।
ভোরের আলো ফুটে উঠতে উঠতেই তিনজন ফুলেরহাটের দিকে রওয়ানা হয়। হাফ হাতা পড়া বাবু শীতে কাবু হয়ে যায়। সুমন তার শরীরে জড়ানো চাদরটি মামাকে দেয়।
পথে এক লোক খেজুর গাছ থেকে রস পারছে। স্কুল পার হয়ে তারা এক সময় বাড়ির কাছে আসলে রিক্সা ওয়ালা বলে ভাই আপনারা দাড়ান আমি আসছি বলে বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
সময় যায় আধা ঘন্ট এক ঘন্টা অস্থির বাবু বাড়িতে ঢুকে দেখে সুনসান বাড়ি। কেউ নেই। বাইরে এসে সুমনের কাধে হাত রেখে সে ভেঙ্গে পড়ে।
জীবন বুঝিবা এখানেই শেষ।
সূর্যের কিরন জ্বালাতন করার সময়ই তারা দেখে কয়েকজন লোক আসছে। একজন বাবুকে জোড়ে জোড়ে দুই চড় মেরে বলে খানকির পুত দুই নাম্বারি ব্যবসা করেতে আইসস। একথা বলেই তার হাতে ধরা বিদ্যূতের তার দিয়ে পেচানো লাল চাবুক দিয়ে সাটাসাট মারতে থাকে। অন্য দিকে আরজন একইরকম চাবুক দিয়ে ভাইগ্না সুমনকে একটা বারি মারলে সে হাত দিয়ে আটকিয়ে দুরে সরে যায়।
তারা বলতে থাকে গ্রামের লোক সব এক লগে লইয়া গন ধোলাই দিয়া বাইর করুম তগরে। পুলিশ দিয়া ধরাইয়া দিমু যাহ ভাগ। তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে ঠেলতে থাকে। পিছনে চাবুকের বারিও চলছে।
হাটতে হাটতে বাবু কান্না করতে থাকে।
ঐ এলাকা থেকে বের হয়ে তারা এক সময় চিন্তা করে থানায় যাবে। আবার এই ভয়ও পায় যে তাদেরকেই আবার না জেলে ভরে।
বাসে আসতে আসতে বাবু কান্না থামাতে পারে না। ভাইগ্নার কাধে হাত রেখে বলে সুমন এই ঘটনা কাউকে বলিছনা। আমি খুব শীগ্রই এদের ব্যবস্থা করবো।
তার চোখ দিয়ে পানি বের হতে থাকে। সে বলতে থাকে আমি এখন কোন মুখ নিয়া বাসায় যাবো। আমার যে শেষ পুঞ্জিও শেষ। এখন তো আর সৌদীও যেতে পারবোনারে সুমন। বাবার কবরটাও জিয়ারত করতে পারবো না।
আমি একদম শেষরে। আস্তে আস্তে বারবার একই কথা বলতে থাকে।
বাস খুব জোড়ে চলছে। কটিয়াদি থানা পাড় হয়ে গেল। পিছনে পরে রইলো স্বপ্নের ব্রিটিশ পিলার।
বাতাসের তোড়ে আশাহত হাজীবাবুর চুলগুলো উড়ে উড়ে যাচ্ছে। তার উদাসি বাদামি রঙের চোখ দিয়ে তখনো পানি গড়িয়ে পড়ছে। বাসে গান বাজছে একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর রে মন আমার কেন বাঁধলি দালান ঘর রে মন আমার কেন বাধলি দালান ঘর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।