বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ প্রোফেসর আশরাফি যে অচিরেই এক ভয়াবহ সঙ্কটের আবর্তে পড়তে যাচ্ছেন সেটি কিন্তু আমরা কেউই কল্পনা করিনি। ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টে ফ্লাইং সসার ধ্বংস (!) করার পর মাসখানেক কেটে গেছে। প্রোফেসর আশরাফি সঙ্গত কারণেই আজকাল বেশ খোশ মেজাজেই থাকেন।
বাইরে বেরুনোর সময় বুক পকেটে ছ'টা স্বর্ণের মেডেল লাগানো বিশেষ একটি কোট পরেন। কোটটা তিনি থাইল্যান্ড থেকে অর্ডার দিয়ে আনিয়েছেন।
প্রোফেসর আশরাফির ডায়েটও আমূল বদলে গেছে। এতদিন তিনি ভেজিটেরিয়ান ছিলেন। পানীয় বলতে খেতেন কেবল লেবুর শরবত।
এখন তিনি যা পাচ্ছেন তাই গিলছেন। মাশাল্লা তিনি খেতেও পারেন বটে। আজকাল এক সিটিং-এ উড়িয়ে দিচ্ছেন দু- তিনটে বেজিং ডাক। দেখে আমরা থ । একদিন খেতে খেতে প্রোফেসর আশরাফি বললেন, আমি পণ করেছিলাম যতদিন না কপালে নেইম অ্যান্ড ফেইম জুটছে তত্দিন নিরামিষভোজী থাকব।
আমার পণটি যখন ফুরোলো। প্লেটে মোঘলাই জুটল। বলে সে কী ঠা ঠা হাসি! যেন সাবমেশিনগানের গুলি।
আরও মজা হল এই যে তিনি সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব আর তানিয়া তাবাসসুম কে ভিন্ন ভিন্ন কারণে ল্যাবে একসেস দিয়েছেন। সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব একসেস পেয়েছেন ছোটবড় বত্রিশটি পত্রিকায় (প্রবাসী এবং অন লাইন পত্রিকাসহ) প্রোফেসর আশরাফির জমকালো ইন্টারভিউ ছাপিয়ে।
তানিয়া তাবাসসুম একসেস পেয়েছে চ্যানেল ফর্টি নাইনে প্রোফেসর আশরাফির জীবনের ওপর তথ্যচিত্র নির্মাণের উদ্যেগ নিয়ে।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব এবং তানিয়া তাবাসসুম প্রায়ই ল্যাবে আসছেন। শান্ত আর আমি তো রোজই যাচ্ছি। রোজই আড্ডা বসছে, খানাপিনা হচ্ছে । এখনও অবশ্যি প্রোফেসর আশরাফির গোমর ফাঁস করিনি।
আজ অগস্টের প্রথম সপ্তাহের সোনাঝরা ঝরঝরে দিন। আজই কিনা বিনা মেঘে বজ্রপাত হল! অনিবার্য কারণে বুয়েট বন্ধ থাকায় আমি আর শান্ত প্রোফেসরের ডেরায় বেলা সাড়ে এগারোটার মধ্যেই পৌঁছে গেছি। আমি থাকি ইন্দিরা রোড। আর শান্তরা থাকে তেজকুনি পাড়া। ও আমাকে ওর বাইকে তুলে নেয়।
তারপর মানিক মিঞা এভেনিউ দিয়ে (সংসদ ভবনটা ডাইনে) রেখে আমরা পৌঁছে যাই মিরপুর রোডের আরং এর পাশে ‘স্পেস গার্ডেন’-এ। আগেই বলেছি যে প্রোফেসর আশরাফির ডায়াটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এবং সদ্যই আবিস্কৃত হয়েছে যে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব আর তানিয়া তাবাসসুম এরা দুজনই রন্ধনশিল্পে তুমুল এক্সপার্ট। দুজনেই মুগলাই কুজিন, থাই, চাইনিজ, এমনকী সাউথ ইনডিয়ান রান্নায় সিদ্ধহস্ত। কাজেই প্রতিদিন ল্যাবে যে এলাহি ইনতেজাম করে রাজসিক খানাপিনা হচ্ছে, তাতে এদের অবদান অসামান্য।
ল্যাবে পা দিয়েই শুনলাম আজ সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব রাঁধছেন আঙ্গুরি পোলাউ, জালি কাবাব এবং বোরহানি । তানিয়া তাবাসসুম রাঁধবে চিকেন সাসলিক, সবজি সালাদ এবং জাফরানি পায়েস। এই মুহূর্তে তারা দু'জন কিচেনে। কিচেন থেকে ভেসে আসছে মশলাদার সুঘ্রান। আমি ঘড়ি দেখলাম।
মাত্র বারোটা বাজে। তার মানে মহাভোজের আরও দেড়ঘন্টা বাকি। ময়-মুরুব্বিরা বলেন: ঘ্রানং অর্ধ ভোজনং। কাজেই লঘুপায়ে কিচেনে এলাম। বেশ বড় পরিসরের খোলামেলা কিচেন।
পারটেক্স বোর্ডের নান্দনিক কিচেন ক্যাবিনেট। তারই নীচে চুলার সামনে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব আর তানিয়া তাবাসসুম মহাভোজের এন্তেজামে ব্যস্ত।
কিচেনের এক কোণে ডাইনিং টেবিল। নাসিরউল্লাহ যন্ত্রের মতন কী যেন-মনে হয় পেঁপের শরবত বানাচ্ছে। মাসখানেক হল প্রফেসর আশরাফি ঘন্টায় ঘন্টায় বিভিন্ন ফলের জুস কি (লেবুর শরবত ছাড়া) শরবত খান।
ডাইনিং টেবিলের ওপর ডাঁই করে রাখা পেয়ারা, আম আর লটকন। এছাড়াও ছাড়াও আছে রসগোল্লার হাঁড়ি, দইয়ের ভাড়, গোল প্লাসটিকের বক্স ভর্তি রসমালাই আর মন্ডার বাক্স।
চ্যানেল ফর্টি নাইন-এর ক্যামেরা পারসন শাহীনূর কাঁটা চামচ দিয়ে স্লাইস করে কাটা দিয়ে ফজলি আম খাচ্ছিল। শাহীনূর কে একসেস দেওয়া ছাড়াও প্রোফেসর আশরাফি তাকে একটা চাকরি দিয়েছেন। দেশজুড়ে বর্তমানে প্রোফেসর আশরাফির ভক্তের সংখ্যা অসংখ্য।
প্রতিদিনই তারা প্রচুর ফলমূল, দইমিষ্টি পাঠায়। কে এত খাবে? অনেক খাবার বাঁচে। প্রোফেসর আশরাফি আবার খাদ্যদ্রব্যের অপচয় না-পছন্দ। ২২/২৩ বছরের এই লিকলিকে চেহারার ক্যামেরা পারসনটি খুব খেতে পারে। কাজেই ... নাসিরউল্লাহ কে দেখলাম একটা ট্রেতে তিন গ্লাস পেঁপের শরবত আর রসগোল্লা-সন্দেশ ভরতি দুটি প্লেট তুলেছে।
ট্রেটা নিয়ে সে ল্যাবে যাচ্ছে। আমিও সময় নষ্ট না করে ল্যাবে চলে এসে সোফায় বসলাম। শান্ত একটা সায়েন্স ম্যাগজিনের পাতা উলটাচ্ছিল। প্রফেসর আশরাফি একা একাই মুচকি মুচকি হাসছেন। আর কাঁচাপাকা ফ্রেঞ্চ কাট দাড়িতে হাত বোলালেন।
আমাকে বলেন, এই যে ফারহান। আমরা হলিউডি মুভিতে আমরা কি দেখি বল তো, না এলিয়েনরা লেজার দিয়ে নিউইর্য়ক শহর ধ্বংস করে দিচ্ছে। পরে ইউএস আর্মি এলিয়েনদের ধ্বংস করে ফেলছে। হুহ, অতই সহজ।
আমি মাথা নাড়ি।
ঠিক বলেছেন স্যার। আগে ‘প্রফেসর আশরাফি’ বললাম। এখন স্যার বলি।
নাসিরউল্লাহ কাঁচের টেবিলের ওপর ট্রেটা রাখল । তারপর শরবতের গ্লাস প্রফেসর আশরাফি কে দিল।
আমি পেঁপের শরবতের গ্লাস তুলে এক নিঃশ্বাসে শেষ করে ফেললাম। কাঁটা চামচে একটা সন্দেশ তুলে মুখে ফেললাম। চিবিয়ে বললাম, আহা। কী বলব অর্পূব স্বাদ।
এক নিঃশ্বাসে পেঁপের শরবত শেষ করলেন প্রফেসর আশরাফি আমাকে বললেন, হবে না অপূর্ব।
এ যে বরিশালের গুঠিয়া সন্দেশ। কাল রাতে বরিশালের মেয়র পাঠিয়েছেন। বলে তারপর শান্তর দিকে তাকিয়ে বললেন, কি হল শান্ত? সন্দেশ নাও, রসগোল্লা খাও। ভোলার বিখ্যাত ঘুইংগারহাটের রসগোল্লা। ভোলার সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান পাঠিয়েছেন।
শান্ত বলল, নিচ্ছি, স্যার। আগে আমি পেঁপের শরবত খেয়ে নিই।
একটু পর শান্ত ভোলার বিখ্যাত ঘুইংগারহাটের রসগোল্লা মুখে ফেলে চিবাতে চিবাতে কিচেনের দিকে চলে গেল। সম্ভবত ঠান্ডা পানির বোতল আনতে।
ঠিক এই সময় প্রফেসর আশরাফির এলজি অপটিমাসটার রিং টোন বাজল।
কয়েক জন বিশিষ্ট ব্যক্তি বাদে প্রফেসর আশরাফি আজকাল যার-তার ফোন ধরেন না। অবশ্য এই ফোনটা তিনি রিসিভ করলেন। বললেন, হ্যালো, মনির? হ্যাঁ। বল। দোস।
হোয়াট ক্যান আই ডু ফর ইউ?
বুঝলাম এয়ার ভাইস মার্শাল শরীফউদ্দীন আহমেদ। দেখতে দেখতে প্রফেসর আশরাফির টকটকে ফরসা মুখটি কেমন কালো হয়ে গেল। তারপর রঙ বদলে মখিটা আবার নীল হল।
আচ্ছা। আমি ... আমি এখনি দেখছি।
প্রফেসর আশরাফি বললেন। কন্ঠস্বর কেমন খসখসে । যেন মৃত্যুদূতের সঙ্গে কথা বলছেন। এলজি অপটিমাস অফ করে আমার দিকে তাকিয়ে প্রফেসর আশরাফি দূর্বল কন্ঠে বললেন, এই ফারহান। আমার হাত ধরে টেনে তোলো তো।
আমি আরেকটি ভোলার বিখ্যাত ঘুইংগারহাটের রসগোল্লা মুখে ফেলতে যাব- ক্যানসেল করে সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। তারপর প্রোফেসরের হাত ধরে টেনে তুললাম। তিনি বললেন, আমার সঙ্গে এসো তো। প্রোফেসরের কন্ঠস্বর কেমন যান্ত্রিক শোনাল। কিন্তু হঠাৎ কী হল বুঝতে পারছি না।
প্রফেসর আশরাফি ততক্ষণে সিঁড়ির কাছে পৌঁছে গেছেন রোবটের মতন হাঁটতে হাঁটতে। সিঁড়ি বেয়ে উঠে কাঁচের স্লাইডিং ডোরটা ঠেলে ছাদে বেড়িয়ে এলেন। আমি তার পিছন পিছন হাঁটছি। আমার মাথায় একটাই প্রশ্ন ঘুরছে-কেন এয়ার ভাইস মার্শাল শরীফউদ্দীন আহমেদ ফোন করেছেন।
ছাদে ঝলমলে রোদ।
পশ্চিম দিকে করলা আর কলমী শাকের ক্ষেত। প্রফেসর আশরাফি এলোমেলো পায়ে হাঁটছেন। ছাদের কিনারে এসে থমকে গেলেন। সংসদভবনের দিকে তাকিয়ে থমকে গেলাম আমিও। ওহ মাই গড! বুঝলাম কেন এয়ার ভাইস মার্শাল শরীফউদ্দীন আহমেদ ফোন করেছেন।
সংসদ ভবনের ওপর একটা ফ্লাইং সসার। শূন্যে স্থির। ঝলমলে রোদ ঠিকরে পড়ছে রূপালি রঙের বিশাল চাকতিটার গায়ে। হলিউডি মুভিতে যেমন দেখা যায়, ঠিক তেমনি চাকতির কিনারে একটা নীল আলোর রশ্মি ঘুরছে। প্রফেসর আশরাফি থরথর করে কাঁপছেন দেখলাম।
কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন, ওটা কোত্থকে আসল ফারহা?
আমি কী বলব। চুপ করে রইলাম।
যাও, ওদের ডেকে নিয়ে আস। আমার ভীষণ খারাপ লাগছে।
আমার ডাকতে হল না।
শাহিনূর ছাড়া সবাই হুড়মুড় করে এসে হাজির হল। সম্ভবত কিচেনের বারান্দা দিয়ে সসারটা দেখে থাকবে। তানিয়া তাবাসসুম সসার দেখে আনন্দে হাততালি দিয়ে বলল, জোশ! আরেকটা অ্যাডভেঞ্চার হবে। সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিবও হাসছেন। আবার ভেলকি দেখা রে শ্যামল।
কেবল শান্তর মুখ কালো। প্রফেসর আশরাফি ভয়ানক ঘামছেন দেখলাম। রুমাল বের করে ঘাড় গর্দানের ঘাম মুছছেন।
কি ব্যাপার ? আপনি এত ঘামছেন কেন স্যার? তানিয়া তাবাসসুম
জিজ্ঞেস করে।
প্রফেসর আশরাফি ধরাস করে কলমির ক্ষেতের ওপর পড়ে গেলেন।
তানিয়া তাবাসসুম আর্ত চিৎকার করে উঠল। ওহ্ মাই গড়। কি হল স্যারের?
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব উবু হবে নাড়ি টিপে ধরে বললেন, শ্যামলের প্রেশার হাই দেখছি। রিচ ফুড খাওয়ার ফল। এখন মাথায় পানি দেওয়া দরকার।
ছাদের উত্তর দিকে ট্যাঙ্কি। সেখানে পানির একটা পাইপ আছে। আমি দৌড়ে যাব-দেখি নাসিরউল্লাহ হাতে নিড়ানি নিয়ে কলমির ক্ষেতের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। বুঝলাম ক্ষেত নষ্ট হল বলে রোবটটা বিগড়েছে। এখর প্রভূর মাথায় নিড়ানির কোপ দেবে।
আমি আর শান্ত ধরাধরি করে অচৈতন্য প্রফেসর কে কলমি কলমি ক্ষেতের বাইরে নিয়ে এলাম। নাসিরউল্লাহ নিড়ানি ফেলে দিল। আমি পানির পাইপের কাছে দৌড়ে গেলাম। পাইপটা টেনে এনে পাইপের মাথা প্রফেসরের মাথায় ধরে রাখলাম। একটু পর প্রফেসর আশরাফি চোখ খুললেন।
ফিসফিস করেবললেন, আমি কোথায়?
তানিয়া তাবাসসুম বলল, এই তো স্যার আপনি ছাদে। কলমিক্ষেতের ঠিক পাশে।
পানি, পানি। আমাকে কেউ পানি দাও। বলে উঠে বসলেন।
শান্ত ছুটল।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বললেন, ভেরি ব্যাড শ্যামল। ভেরি ব্যাড। এই বয়েসে এত রিচ ফুড খেলে চলে?
প্রফেসর আশরাফি তাঁর বাল্যবন্ধুর দিকে কটমট করে চাইলেন।
তানিয়া তাবাসসুম নায়িকাদের মতন নাকি স্বরে বলল, ইস্ স্যার।
আপনার হেল্থ এত ফ্রেজাইল আর ভারনারাবল যে কী বলব ...আপনাকে রোজ হরলিক্স খেতে হবে।
এরই মধ্যে শান্ত ঠান্ডা পানির বোতল নিয়ে আসায় প্রোফেসরের
রিএ্যাকশন দেখা গেল না। শান্ত বলল, এই যে স্যার পানি।
প্রফেসর আশরাফি ঢক ঢক করে পানি খেলেন। আমরা ধরাধরি করে তাকে স্লাইডিং দরজার কাছে নিয়ে এলাম।
এরপর ধীরে ধীরে ধীরে সিঁড়ি পর হয়ে ল্যাবের একটা কাউচের ওপর শুইয়ে দিলাম।
শান্ত টিভি অন করল। এটিএ নিউজ- এ সসারটা সরাসরি দেখাচ্ছে । মানিকমিঞা এভিনিউর ফুটপাতের ওপর সানগ্লাস পরে মুন্নী সাহা দাঁড়িয়ে। তাকে ট্যুরিস্টের মতন লাগছে।
কাঁধ পর্যন্ত ছোট করে ছাঁটা চুল। পরনে গোলাপি রঙের ফ্লানেলের শার্ট। গলায় একটা কমলা মাফলার প্যাঁচানো। তিনি বলছেন, দর্শক, আমাদের এই সুন্দর শহরের আকাশে এ এ এ পুনরায় গ্রহান্তরের আগন্তক তাদের মহাকাশ ... কী বলব ... আনবিক রথ? হ্যাঁ। তাই নিয়ে পুনরায় উদয় হয়েছে।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে এক মাস আগেও এ এ এ ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টে এরকম একটি নিউক্লিয়ার চ্যারিওটের এ এ এ উদয় হয়েছিল। বাংলাদের এক প্রতিভাবান সন্তান এ এ এ প্রোফেসর আশরাফি সেটি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন । আজও উনি যে কোনও মুহূর্তে মানিকমিঞা এভিনিউ তে আবিভূত হবেন। একটু পরই ই. রহমান গার্লস স্কুলে মেয়েরা ... এই যে দেখছেন ... এখানে ... চলে আসবে। তারা ফুলের মালা দিয়ে বাংলাদের এই প্রতিভাবান সন্তান কে অভ্যর্থনা জানাবে।
বাংলাদেশের গর্ব প্রোফেসর আশরাফি অবশ্য এখনও মানিকমিঞা এভিনিউতে এসে পৌঁছান নি। এই ফাঁকে আমরা বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী ডাক্টার মি: এম. রহমান -এর সঙ্গে ফ্লাইং সসার কথা বলব।
মনিটরে ধূসর সাফারি সুট পরা ডাক্টার মি: এম. রহমান কে দেখা গেল। তিনি একটি ঝকঝকে অফিসরুমে বসে আছেন। পিছনে বার্নিশ করা কাঠের প্যানেল।
তিনি কলম ঘোরাতে ঘোরাতে মিষ্টি হেসে বললেন, আমি তো মনে করি মাঝে মাঝে বাংলাদেশে সসার পড়া ভালো।
মুন্নী সাহা জিজ্ঞেস করলেন, কেন স্যার? আপনি এমন অলুক্ষুণে কথা কেন বললেন?
ডাক্টার মি: এম রহমান বললেন, আরে তুমি কী বল। দেশে সসার না পড়লে আমরা প্রফেসর আশরাফির মতন কি একজন কী বলব ... প্রতিভাবান রত্নগর্ভাকে পেতাম কি?
জ্বী স্যার। আপনি ঠিক বলেছেন স্যার। দর্শক আপনারা জানেন ডক্টর মি: এম. রহমান স্যারের জীবনের ব্রতই হল আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির উন্নয়নের জন্য হিরণময় প্রতিভার অন্বেষন।
এরপর ব্যাকগ্রাউন্ডে পিছনে ভেসে এল গান। সব মানুষের স্বপ্ন তোমার চোখের তারায় সত্য হোক/ আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক ... পিছনে হালকা ভেসে উঠল ডক্টর. মি: এম রহমান কোন গ্রামে স্কুলে মাঠের এক ছাত্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন।
প্রফেসর আশরাফি মন দিয়ে টিভি দেখছিলেন। কখন তিনি উঠে বসেছেন। সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বললেন, এত খেলে চলে রে শ্যামল।
আজ এসেই দেখি তোর এক হাতে একটা কাঁটা চামচ অন্য হাতে একটা বাটি। বাটিতে এক হালি সেদ্ধ হাঁসের ডিম আর মরিচের গুঁড়া ।
প্রফেসর আশরাফি বাল্যবন্ধুর দিকে কটমট করে চাইলেন।
নাসিরউল্লাহ এক গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে এল। তানিয়া তাবাসসুম বলল, গুড।
নাসিরউল্লাহ। তুমি না-থাকলে স্যারের সংসারের যে কি ডিজাস্টার হত।
প্রফেসর আশরাফি ঢকঢক করে লেবুর শরবত শেষ করলেন। ঠিক তখনই ইন্টারকম বাজল। আমিই ধরলাম।
নীচে থেকে গার্ড শরিফ বলল, স্যার। মেজর ইফতেখার হায়দার আইছেন । দেরি হইব নাকি জিগাইতে কইলেন।
দাঁড়াও বলছি। বলে, প্রফেসর আশরাফি কে বললাম, স্যার।
মেজর ইফতেখার হায়দার চলে এসেছেন। কী বলব।
প্রফেসর আশরাফি আবার কাউচে উলটে পরে জ্ঞান হারালেন। কাঁচের গ্লাসটা হাত থেকে পড়ে ছত্রখান।
কী করব বুঝতে পারছি না।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব আমায় উদ্ধার করলেন। তিনি ইন্টারকম ধরে বললেন, এই! তুমি মেজর সাব কে একটু দাও তো। হ্যাঁ। মেজর? আমি দৈনিক বাংলারজমিন পত্রিকার জ্যেষ্ট সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বলছি। হ্যাঁ।
হ্যাঁ। উনি অসুস্থ। আপনিই বরং কষ্ট করে উপরে চলে আসুন না। জাস্ট ওয়েট। আমি লোক পাঠাচ্ছি।
শান্ত ছুটল দরজার দিকে। তানিয়া তাবাসসুম উবু হয়ে ভাঙা কাঁচ পরিস্কার করছে। আর বলছে, ধ্যাত! আজকে যে কী হচ্চে সব। কার মুখ দেখে যে উঠেছিলাম। স্যারকে জাফরানি পায়েস খাওনো মাথায় উঠল।
বিস্তর পানি ঢাললাম প্রফেসর আশরাফির মাথায়। মেজর ইফতেখার হায়দার আসার আগেই অবশ্য প্রফেসর আশরাফির জ্ঞান ফিরে এল। জটাধরা চুল ভিজে বিটকেলে দেখাচ্ছে। মুখ ফ্যাকাশে। চোখ বিস্ফারিত।
ইফতেখার হায়দার এসব পাত্তা না দিয়ে বললেন, এলিয়েনরা যে কোনও মুহূর্তে অ্যাটাক করতে পারে।
আমি প্বললাম, কিন্তু উনি কি এখন যেতে পারবেন?
মেজর ইফতেখার হায়দার বললেন, যেতে না পারলে লেজার গানটা আমাকে দাও। আমি ফায়ার করি।
প্রফেসর আশরাফি দূর্বলকন্ঠে বললেন, ওটা, ওটা ... হয়তো বলতে চেয়েছিলেন ব্যাটারি ডাউন ...চার্জ করতে সময় লাগবে ... কিন্তু কিছুই বলতে পারলেন না।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব এবার বিশাল পার্ট নিলেন।
বন্ধুর পিঠে বিশাল এক থাবড়া মেরে বললেন, আরে চল রে শ্যামল চল। আমরা আছি না। তোর আবার ভয় কীসের রে।
চলুন স্যার। আমরা তো আছি।
তানিয়া তাবাসসুম আদুরে গলায় বলল।
কাজেই প্রফেসর আশরাফি কে ব্লু রে গান (বিআরজি) ব্যাগে ভরে কাঁধে তুলে বীরদর্পে নীচে নামতেই হল। তার আগে বিষন্ন মনে বুক পকেটে ছটা স্বর্ণের মেডেল লাগানো থাইল্যান্ড থেকে অর্ডার দেওয়া বিশেষ কোটটি পড়ে নিলেন।
বেইজমেন্টে সাংবাদিক প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের রিপোর্টার আর ক্যামেরা ক্রর থইথই ভিড়। তারা আটঘাঁট বেঁধেই এসেছে।
প্রফেসর আশরাফির ‘নীলরশ্মি অভিযান’ সরাসরি দেখাবে। এদের মধ্যে মুন্নী সাহার রঙিন উপস্থিতি নজর কাড়ে । প্রফেসর আশরাফি কে এখন কিছুটা চাঙা মনে হল। মুন্নী সাহা জিজ্ঞেস করলেন, স্যার আপনি কি অসুস্থ?প্রফেসর আশরাফি কিছু বলার আগে তানিয়া তাবাসসুম বলল, হ্যাঁ তিনি অসুস্থ। ডাক্তার বলেছেন কথা কম বলতে।
মুন্নী সাহা মাইক্রোফোন তুলে বলতে লাগল, দর্শক। হৃদয়ে দেশপ্রেম এ এ এ কতটা গভীর হলে ...
প্রফেসর আশরাফি অসহায় ভঙ্গিতে জিপে উঠলেন। তার পিছনে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব এবং তানিয়া তাবাসসুম। শান্ত কী মনে করে ইয়ামাহা বাইকটা স্টার্ট নিল। আমি আর জিপে না উঠে নীল হেলমেট পরে ওর পিছনে বসলাম।
মেজর ইফতেখার হায়দার জিপটা বেইজমেন্টের বাইরে নিয়ে এলেন। জিপের পিছন- পিছন আট দশটি মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেট কার। মিরপুর রোডে ভীষণ জ্যাম। মিনিট পনের লাগল ফাঁকা মানিক মিঞা আভেনিউতে পৌঁছতে। এ পাশে ব্যারিক্যাড দেখলাম।
ফার্মগেটের দিকেও ব্যরিকেড দিয়েছে মনে হল । অ্যাম্বুলেন্স আর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি নেই। (আজ বিমান বাহিনীর একটা ফাইটার কমবেটও ওড়েনি। ) ব্যরিকেড -এর ওপাশে লোকজনের ভিড় । বেশির ভাগই স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী।
ইংলিশ মিডিয়ামের মনে হল। কী কারণে ব্যারিকেড ভেঙে তারা ভিতরে ঢুকতে মরিয়া। র্যাব ও পুলিশ তাদের প্রাণপন আটকে রেখেছে।
জিপ থামল সংসদ ভবনের ঠিক সামনে। তার পিছনে শান্ত বাইক থামালো।
সাংবাদিক আর টিভি রিপোর্টারদের মাইক্রোবাস আর প্রাইভেট কারও এসে গেছে। আমি বাইক থেকে নামলাম। ই. রহমান গার্লস স্কুলের মেয়েরা ফুলের মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। জিপ থেকে প্রফেসর আশরাফি নামতেই একটি ফুটফুটে মেয়ে ফুলের মালা পড়িয়ে অভ্যর্থনা করল । চারধারে সাংবাদিক গিজগিজ করছে।
বারবার ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ঝলসে উঠছিল।
প্রফেসর আশরাফি সসারটার দিকে অবাক হয়ে দেখছেন। আমি ঠিক তার পাশে দাঁড়ালাম। আমি মুখ তুলে দেখি। চাকতির কিনারে একটা নীল আলোর রশ্মি ঘুরছে।
নীচে অনেক হলুদ আলো। জানালা মনে হল। একপাশে অজস্র ছিদ্র। ওই ছিদ্রগুলি দিয়ে লেজার ছুড়ে মনে হল। আমি শিউরে উঠলাম।
এখন যদি ফায়ার করে তো ... ই. রহমান গার্লস স্কুলের মেয়েদের দিকে তাকালাম। প্রফেসর আশরাফি আমাকে ফিসফিস করে বললেন, এইটা কোত্থ থেকে এল ফারহান?
হাউ ক্যান আই সে? আমি কাঁধ ঝাঁকিয়ে শ্রাগ করলাম। স্যামসং এস থ্রিটা বার করে মাকে ফোন করলাম। মোবাইল জ্যাম।
মেজর ইফতেখার হায়দার বললেন, স্যার আজ তো ট্যাঙ্ক-ট্যাঙ্ক নেই।
আজ কিসের ওপর উঠবেন?
কথাটা শুনে মুন্নী সাহা এগিয়ে এলেন। বললেন, স্যার আপনি না হয় আমাদের এটিএন নিউজের মাইক্রোর ওপরই উঠুন।
প্রফেসর আশরাফি সঙ্গে সঙ্গে রাজি। তানিয়া তাবাসসুম বলার সময় পেল না, ডাক্তার কোনও ধরনের যানবাহন বা মাইক্রোর ওপর উঠতে নিষেধ করেছেন।
আজ প্রফেসর আশরাফির শরীর ফিট না ।
মেজর ইফতেখার হায়দার মিলিটারি কায়দায় এটিএন এর মাইক্রোর ওপর উঠে গেলেন। তারপর হাত বাড়ালেন। নীচ থেকে আমরা প্রফেসরকে ঠেলতে লাগলাম। মুন্নী সাহা মাইক্রোফোন তুলে বলতে লাগল, দর্শক। দেখুন হৃদয়ে দেশপ্রেম কতটা গভীর হলে এ এ এ ...
আজ আর প্রফেসর আশরাফি মাইক্রোর ওপর দু’ পা ফাঁক করে দাঁড়ালেন না।
মেজর ইফতেখার হায়দার কাঁধ থেকে কালো রঙের লেদারের ব্যাগটা নামাতে সাহায্য করলেন। প্রফেসর আশরাফি ধীরে সুস্থে বিআরজিটা বার করে ব্লু রে গানটা ওপরের দিকে তাক করলেন। মেজর ইফতেখার তাঁকে ধরে রাখলেন। কোটি কোটি টিভি দর্শক নিঃশ্বাস বন্ধ করে শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যটা দেখছে। আশে পাশের ক্যামেরার ফ্লাশ বারবার ঝলসে উঠল।
মুন্নী সাহা মাইক্রোর কাছে এসে অতি উৎসাহে নিজেই ক্যামেরা ধরেছেন। প্রফেসর আশরাফি আজ আর বিআরজিটা নামিয়ে কী সব টিপে-টুপে প্যারামিটার ঠিক করলেন না । লেজার গানটা কাঁধে তুলে তাক করে আছেন। যে কোনও মুহূর্তে ট্রিগার টিপবেন প্রোফেসর। ঘন নীল রশ্মি বেরুবে ।
কিন্তু, তার আগেই সসারটাটা এক টানে অনেকটা শূন্যে উঠে এল। দু সেকেন্ড ভেসে রইল। তারপর একটা কেমন পাক খেয়ে দূরে বিন্দুর মতন মিলিয়ে গেল।
আমরা হতভম্ব! দূরে জনতার চিৎকার শোনা গেল। অনেকে হাততালিও দিল।
তবে নীলরশ্মি দেখতে না-পেয়ে জনতার অনেকেই নিরাশ হল। তানিয়া তাবাসসুম আজ আর আনন্দে লাফাচ্ছে না। তাকে কেমন বিমূঢ় দেখাচ্ছে। প্রফেসর আশরাফি তখনও মাইক্রোর ওপর দাঁড়িয়ে। বিদ্যুৎপৃষ্ট ।
সাংবাদদিকরা অবশ্য ছবি তুলে যাচ্ছে । মুন্নী সাহা কার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছেন। সম্ভবত ঐতিহাসিক মাইক্রো নিয়ে তার আইডিয়া ডক্টর মি: এম. রহমানকে বলছেন।
মাইক্রো থেকে মেজর ইফতেখার হায়দার মিলিটারি কায়দায় জাম্প করলেন । তারপর সিধে হয়ে দাঁড়িয়ে ওপরে হাত বাড়ালেন।
মেজরের দিকে ব্লু রে গানটা ছুড়ে দিলেন প্রফেসর আশরাফি। জিনিসটা ক্যাচ ধরলেন মেজর। এরপর হতবিহ্বল প্রফেসর আশরাফি লাফ দিলেন। দিয়েই আমাকে ফিসফিস করে বললেন, ওটা সত্যিকারের ফারহান । এখন কোথায় কার সর্বনাশ করতে গেল খোঁজ নাও।
যা মনে হল প্যাসিফিকের দিকেই গেল। যাও। এখুনি ল্যাবে গিয়ে টিভি ছাড়। আমরা একটু পরেই আসছি।
যাচ্ছি।
বলে শান্ত কে ভিড় থেকে টেনে হিঁচড়ে বার করলাম। তারপর সব বললাম। ও সময় নষ্ট না করে বাইকে উঠেই স্টার্ট নিল। আমি ওর পিছনে উঠলাম। ‘স্পেস গার্ডেন’ -এর ল্যাবে পৌঁছতে দশ থেকে পনেরো মিনিট লাগল।
টিভি অন করলাম। রিমোট টিপছি। ভারতীয় চ্যানেলগুলি গাননাচে ভরপুর। তার মানে সসারটা ভারতে যায়নি। গেলেও টের পায়নি।
দুরুদুরু বুকে রিমোট টিপে যাচ্ছি। সি এন এন- এ চোখ পড়তেই চমকে উঠলাম । সর্বনাশ! ব্রেকিং নিউজ। লস এঞ্জেলেস আন্ডার অ্যাটাক। মধ্যরাতের লস এঞ্জেলেস শহরের আকাশে একটা সসার এর আবছা অবয়ব ।
সসার থেকে নীল কমলা রশ্মি বেড়িয়ে আসছে। নীচে আতশবাজীর খেলা।
আমি বললাম, অল্পের জন্য ঢাকা বেঁচে গেল রে শান্ত।
হুমম। সেই সঙ্গে প্রফেসর আশরাফিও।
আধ ঘন্টা পর প্রফেসর আশরাফিরা ফিরলেন। প্রফেসর আশরাফি কে অত্যন্ত ক্লান্ত আর বিধস্ত দেখাচ্ছে। কোট খুলে সোফার ওপর ধপাস করে বসলেন।
টিভির দিকে চোখ পড়তেই তানিয়া তাবাসসুম চিৎকার করে উঠল, ও মাই গড।
শান্ত্ব জিজ্ঞেস করলে, স্যা? ওরা ঢাকা থেকে চলে গেল কেন?
কে জানে।
প্রফেসর আশরাফি শ্রাগ করলেন।
তানিয়া তাবাসসুম বলল, আমার মনে হয় সংসদ ভবন কে এলিয়েনরা প্রথমে প্ল্যানেট আর্থের স্পেস- সেন্টার ভেবেছিল। আমার তো ওই জায়গাটা অন্যগ্রহের মতনই লাগে। মুনলাইটে একবার আমি পাপার সাথে এসেছিলাম।
প্রফেসর আশরাফির এলজি অপটিমাস রিং বাজল।
তিনি আমাদের ইশারায় চুপ করতে বললেন। বুঝলাম কেউকেটা কেউ। প্রফেসর আশরাফি এলজির স্পিকার অন করে দিলেন। বললেন, জি। আমি এখন ভালো আছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
ও প্রান্তের কন্ঠস্বর বলল, আপনাকে যে কারণে ফোন করলাম। ইউনাইটেড স্টেটস-এর সেক্রেটারি অভ স্টেট হিলারি ক্লিনটন কিছুক্ষণ আগে আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি আমাকে অনুরোধ করেছেন আমি যেন ওদের এই দুঃসময়ে আপনাকে লেজার গান নিয়ে লস এঞ্জেলেসে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।
প্রফেসর আশরাফি বললেন, সে তো খুবই ভালো কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । বিপদগ্রস্থ রাষ্ট্রকে উদ্ধার করা মানবিক কর্তব্য ।
তাই বলে আপনি আমার মতন এক দেশরত্নকে হারাবেন?
কেন? আপনি একথা বলছেন কেন?
প্রফেসর আশরাফি বললেন, আমি যে ধরনের প্রতিভাবান। আমি সিওর, কাজ শেষে এফবিআই নয়তো সিআই -এ আমাকে গুম করে ফেলবে।
প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ওহ্। থাক তাহলে। অন্য এক বিশেষ কারণেও অবশ্য আমি হিলারি ক্লিনটন কে নাই করব ভেবেছিলাম .... আপনি বরং আজই কোথাও লুকিয়ে পড়ুন।
আমি ইউনাইটেড স্টেটস-এর সেক্রেটারি অভ স্টেট বলছি পাকিস্তানি আইএসআই আপনাকে বিমানবন্দর থেকে গুম ... সরি ... কিডন্যাপ করেছে ...বছর খানেক কোথাও গিয়ে লুকিয়ে থাকুন। ওকে, ওকে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি এখনি গায়েব হয়ে যাচ্ছি। প্রফেসর আশরাফি খুশি হয়ে বললেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।