গ্রামীণফোনের কর্মীরা তাদের ইউনিয়ন গঠনের জন্য আবেদন করেছেন। শ্রম অধিদপ্তরে এ আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে ২৩ জুলাই।
গ্রামীণফোনের ৪ হাজার ৮ শ’ কর্মীর এক তৃতীয়াংশের স্বাক্ষর নিয়ে এ ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শ্রম অধিদপ্তরের একটি সূত্র বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি জানায়, ইউনিয়ন গঠন প্রক্রিয়ার সকল শর্ত মেনেই এ আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ইউনিয়ন গঠন চূড়ান্ত হলে শিগগিরই এর মাধ্যমেই কর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এদিকে, বুধবার গ্রামীণ ফোনের আরও ২১৩ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলনে যাচ্ছেন সাধারণ কর্মীরা।
সূত্র জানায়, নতুন ইউনিয়নের ব্যানারেই হতে যাচ্ছে এই আন্দোলন।
এদিকে কর্মী ছাঁটাইকে আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের সিইও টরে জনসেন ও টেলিনরের প্রেসিডেন্ট জন ফ্রেডরিক বাকসাসকে চিঠি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন (আইটিইউসি)।
চিঠিতে গ্রামীণফোনে গণছাঁটাই কর্মীদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন আখ্যায়িত করেছে আইটিইউসি। চিঠিটির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও)-বাংলাদেশের পরিচালক এন্ড্রি বাগুইকে।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা কাজি মনিরুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে জানান, চিঠি দেওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তিনি বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
বিশ্বের ১৭ কোটি ৫ লাখ কর্মীর সংগঠনের পক্ষ থেকে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের (আইটিইউসি) সেক্রেটারি জেনারেল শরণ ব্যুরো চিঠিতে বলেন, টেলিনরের বাংলাদেশি কোম্পানি গ্রামীণফোনে চাকরিচ্যুতির বিষয়টি উদ্বেগজনক।
এতে শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের অর্ধেক মার্কেট শেয়ারের মালিক। বৃহৎ এই মোবাইল অপারেটর ২০১১ সালেও বিপুল মুনাফা অর্জন করে। ঠিক এর পরের বছর তারা কর্মী ছাঁটাই শুরু করলো।
শরণ ব্যুরো বলেন, “একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে পুনর্গঠন হতে পারে। তবে আমরা উদ্বিগ্ন এ কারণে যে, যেভাবে এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে তা বাংলাদেশের ২০০৬ সালের শ্রম আইনের লঙ্ঘন।
শুধু তাই নয়, গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানে কোনো ইউনিয়ন পর্যন্ত গঠন করতে বাধা দিচ্ছে। ইউনিয়নের স্থলে গ্রামীণফোন বিকল্প একটি কমিটি গঠনে উদ্বুদ্ধ করছে, যার শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে দরকষাকষির কোনো ক্ষমতা নেই। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ২০ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানে এক বছর চাকরি করলে তাকে চাকরিচ্যুত করার যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে কমপক্ষে এক মাসের আগাম নোটিশ দিতে হবে। ওই কর্মীকে ৩০ দিনের বেতন দিতে হবে। ”
তিনি বলেন, “আমরা দেখছি, গ্রামীণফোন এ ধরনের কোনো আইনই মানছে না।
উপরন্তু গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ কর্মীদের চাকরি ছাড়তে চাপ দিচ্ছে। নতুবা চাকরিচ্যুতির শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ইউনিয়ন সদস্য, এমনকি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা নারী কর্মীদেরও চাকরিচ্যুত করছে। এদের মধ্যে অনেক অভিজ্ঞ কর্মী রয়েছে। ইউনিয়ন সদস্যদের চাকরিচ্যুত করে শ্রম আইনের ১৯৫ ধারা লঙ্ঘন করছে।
”
এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি চাকরিচ্যুতি বন্ধ করতে গ্রামীণফোনের সিইওকে তলব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের শুনানি এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের আবেদন উপেক্ষা করায় তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।