আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনি, আপনার রক্ত এবং পরিশেষে একটুখানি ভালোবাসা!!!

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ ব্লগিং হজমের জন্য ক্ষতিকর। রমজান মাস, রোজার বন্ধ চলছে, তার উপর আকাশটাও মেঘলা, ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল একটা ওয়েদার, এমন দিনে ঘুম কি আর সহজে ভাঙ্গে? তাই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নির্ভেজাল একটা ঘুম দিয়ে উঠলাম। হাতে তেমন কোন কাজ নাই, চা'র কাপটা নিয়ে ধীরে সুস্থে বসলাম একটা মুভি দেখতে। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে রোজার বন্ধে দেখবো বলে এরই মধ্যে হার্ডডিস্ক ভর্তি করে ফেলেছি মুভিতে মুভিতে। রগচটা টাইপের মুভি, প্রতি পাঁচ মিনিট পর পর অ্যাকশান দৃশ্য আর প্রতি পাঁচ সেকেন্ড পর পর গালাগালি।

ধুর শালার, এই বিদেশীগুলান এত গালি পারে কেমনে, মনে হয় 'ফ' বর্গীয় শব্দের সর্বোচ্চ ব্যবহার জানে তারা। যা হোক মুভির এক পর্যায়ে ভোটকা এক বুড়ো আমাদের নায়িকার চুল (!!) ধরে টান দেওয়াতে, নায়িকা ভীছণ রাগান্বিত হয়ে বুইড়াকে গালি দিয়ে বসলো Bloody Rascal বলে!!! এতক্ষণ কোন সমস্যা ছিল না, কিন্তু গালিখান শুনার পর থেকে আমার অত্যন্ত গোবর থুক্কু উর্বর মস্তিষ্ক টইয়ং করে লাফ দিয়ে উঠলো একখান নতুন চিন্তাতে। আইচ্ছা, রাসকেল মানে হইলো বদমাশ, খুব সুন্দর কিউট একখান গালি, No Offense! তয় ব্লাডি শব্দটাতেই যত সমস্যা। বিভিন্ন গালিতে ব্লাডি শব্দটা ব্যবহার হয়ে থাকে, শুধু গালি বললে ভুল হবে, বিভিন্ন প্রশংসাতেও। ব্লাড এর বিশেষণরুপ ব্লাডি, তার মানে হল ব্লাডি শব্দের সাথে আপনি প্রশংসা কুশংসা যাই বসান না কেন, সেই গুণাবলীই আপনার রক্তের সাথে মিশে আছে এরুপ বোঝায়।

এখন প্রশ্নটা হল, রক্ত কি সত্যিই আপনার বাহ্যিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় তুলে ধরে??? এতক্ষণ ঠান্ডা আছিলো তয় এহন মাথাখান কইলাম সেইরম গরম হইয়া গেল। দিলাম গুগল মামুরে খবর। তারপর ধৈর্য্য ধরে কিছুক্ষণ ঘাঁটাঘাঁটি করার পর মস্তিষ্ক কানায় কানায় ভর্তি হয়ে গেল ব্যাপুক জ্ঞানে!! অতঃপর ভাবিলাম অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়খানা (!!) আপনাদিগের সাথে শেয়ার না করিলে ইহজনমে আর শান্তি মিলিবে না। অতএব, আসুন দেখুন আর মিলিয়ে নিন আপনার রক্তের গ্রুপের সাথে আপনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের। পছন্দ না হইলে আমার দোষ নাই কইলাম - ১) "O+" - এই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা স্বচ্ছ দৃষ্টি সম্পন্ন, গভীর মনোযোগী, উচ্চাকাঙ্খী, স্বাস্থ্যবান, বাকপটু, বাস্তববাদী, রোমান্টিক এবং অত্যান্ত বুদ্ধিমান হয়ে থাকে।

২) "O-" - এই গ্রুপের মানুষেরা সাধারণত অন্যের মতামতকে গ্রাহ্য করে না। সমাজে মর্যাদা বাড়াতে আগ্রহী, বড়লোকের সঙ্গপ্রিয় এবং বড় বেশি বাচাল। ব্লাডগ্রুপ 'O' এর ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে ভালো কিছু কর্মক্ষেত্রঃ ** Accountant / হিসাবরক্ষক ** Politician / রাজনীতিবিদ ** Business / Sales / ব্যবসায়ী ** Therapist / ভেষজবিজ্ঞানী ** Minister / মন্ত্রী ব্লাডগ্রুপ 'O' বহনকারী কিছু ব্যক্তিত্বের নামঃ রোন্যাল্ড রেগান, রাণী এলিজাবেথ ৩) "A+" - এই ব্লাডগ্রুপের মানুষেরা গোছগাছ প্রিয়, দক্ষ চাকুরে এবং খুঁতখুঁতে স্বভাবের হয়ে থাকে। এরা আত্নকেন্দ্রিক, সুবিচারক, শান্ত, নিয়মতান্ত্রিক, বিশ্বস্ত, নিয়মানুবর্তী ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ৪) "A-" - এই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা খুব খুঁতখুঁতে স্বভাবের এবং কিছুটা অমনোযোগী।

কিন্তু অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে বেশি মনোযোগী। এদের অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার প্রবণতা বেশি। এদের আছে নিজেকে লুকানোর অভ্যাস এবং একঘেয়েমি জীবন। ব্লাডগ্রুপ 'A' এর ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে ভালো কিছু কর্মক্ষেত্রঃ ** Accountant / হিসাবরক্ষক ** Librarian / গ্রন্থাগারিক ** Attorney / অ্যাটর্নি ** Economist / অর্থনীতিবিদ ** Writer / Novelist / লেখক / ঔপন্যাসিক ব্লাডগ্রুপ 'A' বহনকারী কিছু ব্যক্তিত্বের নামঃ জিমি কার্টার, অ্যালান অ্যালডা ৫) "B+" - এই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা স্বাধীনচেতা, মেধাবী, নমনীয়, মনোযোগী, স্বাস্থ্যবান, সরল, দক্ষ, পরিকল্পনাবাদী, বাস্তববাদী, আবেগপ্রবণ এবং খুব বেশি রোমান্টিক হয়ে থাকে। ৬) "B-" - এই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা অসংযমী, অপরিনামদর্শী, দায়িত্বহীন, অলস, স্বার্থপর, অগোছালো, অবিবেচক এবং স্বার্থান্বেষী হয়ে থাকে।

ব্লাডগ্রুপ 'B' এর ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে ভালো কিছু কর্মক্ষেত্রঃ ** Detective / গোয়েন্দা ** Journalist / সাংবাদিক ** Artist / শিল্পী ** Crafts Person / কারুশিল্পী ** Psychiatrist / মানসিক রোগের চিকিত্সক ব্লাডগ্রুপ 'B' বহনকারী কিছু ব্যক্তিত্বের নামঃ টম সেলল্যাক, মিয়া ফ্যাররো, জ্যাক নিকলসন ৭) "AB+" - এই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা সাধারণত সুবিবেচক, বু্দ্ধি সম্পন্ন, হিসেবী, পরিকল্পনাবাদী, সৎ কৌশলী সংবেদনশীল, নিরেট এবং খুব চমৎকার সাংগঠনিক হয়ে থাকে। ৮) "AB-" - এই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা দুর্বোধ্য, ক্ষমতাহীন, অন্যকে আঘাত করার প্রবণতা বেশি, এনার্জি স্বল্পতা, খুব বেশি রক্ষনশীল ও বড় বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন। ব্লাডগ্রুপ 'AB' এর ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে ভালো কিছু কর্মক্ষেত্রঃ ** Public Relations / জনসংযোগ ** Company Manager / শিল্প প্রতিষ্টানের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তি ** Negotiator / আলাপালোচনকারী ** Teacher / শিক্ষক ** Attorney / অ্যাটর্নি ব্লাডগ্রুপ 'AB' বহনকারী কিছু ব্যক্তিত্বের নামঃ জন এফ. কেনেডি ## উৎসঃ ৯০ এর দশকের মাঝামাঝি প্রকাশিত "You Are Your Blood Type" গ্রন্থে, মানুষের ব্লাডগ্রুপ এর বিশেষজ্ঞ Toshitaka Nomi এবং Alexander Besher এই মতামত ব্যক্ত করেন। আমার ব্লাডগ্রুপ "O+", তো বুঝতেই পারছেন একটু রোমান্টিক প্রকৃতির হওয়াতে যে কোন রচনাতেই রোমান্স/ভালোবাসা বিষয়টা টেনে আনতে খুব ইচ্ছা করে। বলতে পারেন এই কট্টর রচনাতে ভালোবাসা বাসা খুঁজে পাবে কেমনে? আরে ভ্রাতা চিন্তার কিছু নেই, যেহেতু শিরোনামে বলেই দিয়েছি একটুখানি ভালোবাসা তাই শেষ করার আগে আমরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে একটু করে ভালোবাসা চর্চা করেই যাবো।

ভালোবাসাটা কী? এর উৎপত্তিস্থল কোথায়? ভালোবাসার সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম হতে পারে। তবে বিজ্ঞান ভালোবাসার সঠিক সংজ্ঞাটি দিয়েছে। প্রেম বলুন আর ভালোবাসা বলুন প্রতিটি বিষয় হালকা কিংবা ভাসা ভাসা। ভালোবাসা বা প্রেম যুগে যুগে সব দেশেই ছিল। প্রেমের রসায়ন বলে একটি বহুল শব্দ প্রচলিত আছে।

প্রেম বা ভালোবাসা কী শুধুই রসায়নের খেলা? প্রেমের সংজ্ঞা যাই-ই হোকনা কেন, প্রেম-ভালোবাসা একে অন্যের সমার্থক ও পরিপূরক, এর অসীম ক্ষমতা। ভালোবাসা হল কারো প্রতি তীব্র আকর্ষণবোধ বা আসক্তি, তা হতে পারে মস্তিষ্কের কোন সাজানো কারসাজি। তবে ভালোবাসার মানুষের জন্য মানুষ প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জন দেয়। বিজ্ঞানীরা মানুষের ভালোবাসার এই অসীম ক্ষমতাকে অক্সিটোসিন নামক হরমোনের ক্রিয়া বলেই শনাক্ত করেছেন। প্রেমিক বা প্রেমিকাকে দেখে মুগ্ধ হওয়া বা আকর্ষণবোধ করার এই দুরূহ কাজটি করে অক্সিটোসিন।

বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন প্রেমের পরতে পরতে অক্সিটোসিন কীভাবে ইন্ধন জোগায়। প্রেমিক-প্রেমিকার হাত ধরাধরি, আলিঙ্গন, একসঙ্গে বসে সময় কাটানো প্রতি ক্ষেত্রেই অক্সিটোসিনের নানা মাত্রাকাজ করে। প্রেম বা ভালোবাসার আবেগ তৈরীর জন্য কতকগুলো নিউরোট্রান্সমিটার কাজ করে। ডোপইন, সেরোটোনিন নামক হরমোন রোমান্টিক মুড আনার জন্য সহায়তা করে। এপিলেক্সিন - নন এপিলেক্সিন এই দুটি নিউরোট্রান্সমিটার জড়িয়ে আছে ভালোবাসার সঙ্গে।

এই হরমোনটি পিঠের ব্যাথা থেকে মাইগ্রেন পর্যন্ত দূর করে দেয়। অক্সিটোসিন যেমন যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিতে সহায়তা করে তেমনি শরীরের ক্ষত সারাতেও সাহায্য করে। ভালবেসে অনেকে সুইসাইড পর্যন্ত করে। এর কারন কি? আমাদের মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্লান্ড হতে এমফিটামিন নামক একটি হরমোন সিক্রেশন হয়। যা প্রেমে পরার অকারন আনন্দ সৃষ্টি করে মনে।

তখন মনের মানুষের তিলের জন্য প্রেমিক/প্রেমিকা নিজের সমরকন্দও বিলিয়ে দিতে কার্পন্য করে না। সকল মাদকের যেমন নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে, তেমনি এমফিটামিনেরও মেয়াদ আছে যা প্রায় ৩ বছর নয় মাস ২৬ দিন। সমীক্ষা করে দেখা গেছে, বিবাহের চার বছরের মাথায় বিবাহ বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি। চার বছর পর আগের প্রেম আর থাকে না, থাকলেও সেটা সামাজিকতা বা বন্ধুত্ব। যেহেতু আমি মেডিকেলের ছাত্র না তাই বলে রাখা আবশ্যক যে, ভালোবাসা বিষয়ক এসব তথ্য সম্পূর্ণরুপে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে হাতে মিলেছে।

তাই ভালোবাসার দানব থুক্কু এক্সপার্ট ভেবে নিয়ে আমাকে কোনরূপ প্রশ্ন করা যাবে না। তবে এটুকু গবেষণার পর আপনাদের মত আমিও বুঝেছি যে, প্রেম করে বিয়ে করার পর কেন সেই সংসার দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে! অতএব বেচারা প্রেমিক যুগলের দোষ দিয়ে লাভ কি, আসলে সব দোষ যে এই এমফিটামিনের!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.