জাদুনগরের কড়চা
আলু ব্যবসায়ী কালু খাঁ সকাল হতেই ফোন হাতে বসে আছেন বেজার মুখে। আজ বাজেট ঘোষণার দিন। গুজব আছে, বাজেটে নাকি আলুর উপরে ট্যাক্স কমে যাবে একেবারেই, ইদানিং আবার ভাতের বদলে আলু খাওয়ার একটা আন্দোলন হচ্ছে নানা জায়গায় বলে শোনা যায়। তো যাই হোক, কালু খাঁর গোডউনে ২ টন আলু জমে আছে, সেগুলো নিয়ে কাল থেকেই বসে থাকতে হচ্ছে। বাজেটে ট্যাক্স কমলে আলুর দরও পড়ে যাবে বাজারে।
গুজবটা সত্যি হলেই বাজেট ঘোষণার আগেই আলু বেচে দিতে হবে।
তবে আলুর বেপারি কালু খাঁর সবখানেই লোক আছে। অর্থমন্ত্রীর এপিএসের শ্যালক জালালুদ্দিন হচ্ছে কালু খাঁর গ্রামের লোক। তাকে লাগানো হয়েছে খবর বের করার জন্য। দরকার মতো “চা পানি”র ব্যবস্থাও সে করবে।
খবর পেলেই কালু খাঁকে ফোনে জানাবে, এটাই কথা হয়েছে।
সকাল হ্তেই তাই তসবী টেপার মতো করে কালু খাঁ মোবাইল হাতে বসে আছেন। কখন ফোন আসে জালালের। কিন্তু একী, ফোন আসছে তো ঠিকই অনরবরত, কিন্তু সবই মিস কল বা রঙ নাম্বার! একেকবার ফোন আসে, কালু খাঁ হুড়মুড় করে ধরতে যান, আর উল্টা দিক থেকে খোনা গলায় কেউ বলে, জমিলাকে দেন তো একটু? কিংবা বলে হ্যালো এটা কী জনি প্রিন্ট শাড়ির হেড অফিস? রেগে মেগে রাখলেও উপায় নাই, ফোন আসছেই অনবরত। এমনকি আড়তের টিএন্ডটি ফোনটাও বেজে চলেছে অনবরত।
জালালুদ্দিন কিন্তু খবরটা ঠিকই সময় মতো বের করেছিলো। আর পাওয়ামাত্র মোবাইলে কালু খাঁকে ফোনও করতে চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু যখনই করে, দেখে লাইন বিজি। ঘণ্টা দুয়েক চেষ্টা করেও লাইন পায়নি। ফলে যা হবার তাই হলো, বাজেটে দাম কমে যাওয়ায় ৫ কোটি টাকা লোকসান দিয়ে কালু খাঁ পথে বসলেন।
মাস খানেক পরে বেরুলো আসল ঘটনা, কালু খাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী গোমর আলীই আসলে কলকাঠি নেড়েছে। জালালুদ্দিনের মিশনের খবর জেনে ফেলে গোমর আলী সেদিন ৫০টা আলাদা মোবাইল থেকে অনবরত সারাদিন কালু খাঁকে মিস কল দিয়ে গেছে, যাতে সব সময়েই কালু খাঁর ফোন বিজি থাকে, আর জালালের খবরটা সময়মত কালুর হাতে না যায়। আর সুযোগ বুঝে কালু খাঁর বিশাল লস করিয়ে দিয়ে গোমর আলী আজ হয়ে গেছে সবচেয়ে বড় আলু ব্যবসায়ী, বাজারে তার নাম এখন পটেটো কিং, আর নাম পাল্টে খাতুনগঞ্জের গোমর আলী আজ হয়ে গেছে আহমেদ জি আলী।
কালু খাঁর সর্বনাশ করতে গোমর আলী কী রকম আক্রমণ করেছে? কালু খাঁর সরাসরি কোনো ক্ষতি তো হয়নি, তা সত্ত্বেও পথে বসেছেন তিনি। তাহলে কোন জিনিষটির উপরে আক্রমণ করেছে গোমর আলী?
এই প্রশ্নের জবাব দিতেই আজকের এই পাঠ।
কালু খাঁর যে জিনিষের উপরে এখানে হামলা করেছে গোমর আলী কায়দা করে, সেটা হলো এভেইলেবিলিটি বা প্রাপ্যতা, আর গোমর আলীর হামলার কৌশলটি ছিলো ডিনায়াল অফ সার্ভিস বা সেবা বিঘ্নকারী আক্রমণ।
বিস্তারিত লেকচার নোট ও কুইজ পাবেন যন্ত্রগণক ডট কমে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।