আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাথা নষ্ট করা খবরঃ ভেস্তে গেল বেগম জিয়ার ‘ব্ল- প্রিন্ট

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। ভেস্তে গেল বেগম খালেদা জিয়ার ব্ল- প্রিন্ট। নির্বাচিত সরকারকে অপসারণের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এই নীলনকশা। ৪ তারিখে সমাবেশ করে তিনি ‘অবস্থান’-এর হুমকি দিয়েছিলেন। ৫ তারিখে হেফাজতের অবরোধে সেই ‘অবস্থান’ বাস্তবায়ন করতে হেফাজতকে প্ররোচিত করেন।

হেফাজতের নেতা আল্লামা শফীকে শাপলা চত্বরে না পাঠানোর পেছনে সব কলকঠি নাড়ে বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি। জানা গেছে, এক পর্যায়ে হেফাজতকে জানিয়ে দেন, তারা (হেফাজত) যদি বিএনপির কথামতো শাপলাচত্বরে অবস্থান অব্যাহত না রাখে তাহলে, বিএনটি ভবিষ্যতে আর হেফাজতকে সমর্থন দেবে না। লোক সমাগম দেখে ‘মাথা খারাপ’ হয়ে যায় হেফাজতের ধর্মব্যবসায়ীদের। এই তো মওকা। বিএনপির টোপ গিলে ফেলে।

মাঝ রাস্তা থেকে ফিরে যান হেফাজত নেতা আল্লামা শফী। মাদ্রাসার নাবালক ছেলেদের বসিয়ে, হুংকার দেয়া হয় অবস্থান অব্যাহত রাখার। বেগম জিয়ার পরিকল্পিত পাণ্ডুলিপির প্রথম অঙ্ক ঠিকঠাক মতোই মঞ্চস্থ হয়। এরপর হেফাজতদের ‘মুসাফির’ আখ্যা দিয়ে তিনি দলের নেতাকর্মীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। পরের দিন, ৬ মে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডাকেন।

শাপলা চত্বরে হেফাজত, পল্টনে বিএনপি এবং ১৮ দল অবস্থান নেবে। দেশ অচল হয়ে যাবে। ব্যস, সরকারের পতন ঘটবে। এটা ছিল পরিকল্পনার দ্বিতীয় অংশ। বেগম জিয়া আওয়ামী লীগের সৈয়দ আশরাফের কথাকে পাত্তা দেননি।

এত লোকের সমাবেশ পুলিশ ভেঙে দেবে কীভাবে? আর হেফাজত তো এসেছে ‘শহীদ’ হতে, তাই এদের সরাতে হলে ‘গণহত্যা’ চালাতে হবে। তাহলেও সরকারের পতন। পরিকল্পনার দ্বিতীয় অংশের প্ল্যান ‘বি’। কিন্তু বেগম জিয়া দুটি জিনিস বুঝতে ভুল করলেন। প্রথমত. বেগম জিয়া বুঝতে পারেননি, এই হেফাজতের কর্মীরা ‘সাঁচ্চা’ মুসলমান নয়।

এদের নিজেদের জীবনের মায়া অনেক বেশি তীব্র। তাই দিনের বেলা ঘেউ ঘেউ করলেও রাতে এরা মিউ মিউ করেছে। মাত্র ১৫ মিনিটে লেজ গুটিয়ে, কান ধরে চলে গেছে। হেফাজত ইসলাম কায়েমের নামে যে বালকদের মাঠে নামিয়েছিল, তারা এমন বিপন্ন অবস্থায় পড়তে হবে, ভাবতেও পারেনি। নেতাদের পকেট তো ভরেছে দরকষাকষির পরই।

দ্বিতীয়ত. বেগম জিয়া হয়তো জানতেন না, অন্যের উপর ভর করে ‘পরগাছা’ হাওয়া যায়, কিন্তু কোনো কিছু ওলটপালট করে দেয়া যায় না। যাই হোক, না হলো অবস্থান, না হলো গণহত্যা। সরকার পতনের নীলনকশা ভেস্তে গেল। কিন্তু আমার প্রশ্ন অন্য। বেগম জিয়া যে সন্ধ্যায় বিবৃতি দিয়ে বললেন হেফাজতের কর্মীরা ‘মুসাফির’।

তাদের সব ধরনের দেখাশোনার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের তিনি নির্দেশ দিলেন। সেই নেতাকর্মীরা কই? বিএনপির মেহমানদারিতে থাকা অবস্থায় বেরসিক পুলিশ হেফাজতিদের কান ধরে বাড়ি পাঠাল, বিএনপি কেন তাদের পাশে দাঁড়াল না। বিএনপি নেতারা কেন, পুলিশি অভিযানের পর নির্ঘুম রাত কাটানো, প্রায় অভুক্ত, সদ্য কৈশোরে পৌঁছনো নির্বোধ মুসাফিরদের নিজেদের বাড়িতে নিয়ে ডাল-ভাত খাওয়ালেন না? বিএনপি নেতারা মুসাফিরদের শাপলা চত্বরে রেখে নিজেদের বাড়িতে ঘুমালেন, ছিঃ ছিঃ এই হলো মুসাফিরদের মেহমানদারি? যখন পুলিশ অভিযান চালাল, তখন হেফাজতের তেজস্বী বক্তা মুসলমানরা কোথায় পালালেন, তারা তো সন্ধ্যায় বলছিলেন যে তারা ‘শহীদ’ হতে এসেছেন, তারা শহীদও হলেন না, গাজীও হলেন না, হলেন ‘তস্কর’। এই ভীরু ‘তস্কর’দের হাতে কীভাবে ইসলাম হেফাজত থাকবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভিড়মি খাচ্ছি। প্রশ্নের শেষ তো এখানেই নয়, বেগম জিয়া যিনি হেফাজতী ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন।

তিনি কি হেফাজতীদের ১৩ দফা পড়েছেন? বেগম জিয়া কি ১৩ দফা মানেন? আমরা বেগম জিয়া এবং বিএনপির কাছে, ১৩ দফার ব্যাপারে সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চাই। বিএনপি আন্দোলন করছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে। হেফাজতের ১৩ দফায় কোথাও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা নেই, বরং আছে বাংলাদেশকে মধ্যযুগে নিয়ে যাওয়ার কিছু অবাস্তব দাবি। আছে নারীকে অসম্মান করার কিছু কুৎসিত প্রস্তাব। তাহলে হয় বিএনপি হেফাজতের ১৩ দফা দাবি মানে অথবা হেফাজতের ঘাড়ে সাওয়ার হয়ে দেশে একটা নৈরাজ্য তৈরি করতে চায়।

তা না হলে হেফাজতের জন্য বিএনপির এতে উথলেপড়া দরদ কেন? আজকাল দেয়ালে কান পাতলেই অনেক কথা শোনা যায়। হেফাজতকে মাঠে নামিয়েছে আসলে জামায়াত। চট্টগ্রামের অনেক সংবাদকর্মী বলেছেন, জামায়াতের কর্মীরাই এখন হেফাজতের কর্মী। হেফাজতের মূল এজেন্ডা আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা। জামায়াত বিএনপিকে বুঝিয়েছে ‘হেফাজত’ই হলো সরকার অপসারণের আসল দাওয়াই।

তাই বিএনপি হেফাজতী বটিকা সেবন করে, ক্ষমতার দরজায় যেতে চেয়েছে। কিন্তু অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জš§ নেয়া দলটি দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের আলো বাতাসে বড় হয়েও এখনও শেখেনি যে, একটি নির্বাচিত সরকারের অপসারণের একমাত্র পথ কেবল আরেকটি নির্বাচন। সুত্র ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.