আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভ্রমণ কাহিনী (বনানী টু ধানমন্ডি)

https://www.facebook.com/tanvir.mh অনেক কষ্ট করে তার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হল। তাই সিডর আয়লা ঠাডা যাই হোক তার কাছে যেতেই হবে। ডাক্তারের সাথে ৫০০ টাকায় ৫ মিনিট আড্ডা দিতে ধানমন্ডি রওনা হলাম বৃষ্টির মাঝে। বাসা থেকে এক কদম নিতেই ভাবলাম আজ আমি ফুটবল আর প্রকৃতি রোনালদো। মেইন রোডে গিয়ে বাস খুজতে খুজতে ৫০/৬০ টা জিপের চিপা দিয়া দূরে একটা বাস দেখা গেল।

কয়েকজনকে দেখলাম দরজার হেন্ডেলে পা দিয়ে আরেকজনের শার্টের কলারে ধরে ঝুলে আছে। মহব্বতের সাথে যাওয়া যাকে বলে। এত আদর সোহাগ নিতে নিতে যাওয়া যাবেনা। লা হআওলা লা....... পরতে পরতে হাটা দিলাম। এখন প্ল্যান ২ তে কাজ করব প্ল্যান এ ফেল করছে।

রিকশা দিয়ে ফার্মগেট তার পর আবার রিকশা। মহাখালি রেলগেট পর্যন্ত হেটে রিকসা পেলাম একটা। ভাড়া চাইল ৬০ টাকা ফার্মগেট পর্যন্ত। আস্তে আস্তে বললাম আপনার লস হয়ে যায় না?কিছু না বলে তার লং কাম শর্ট ড্রাইভ শুরু করলো। রিকসাওয়ালার ভাব ছিল দয়া করে আপনারে নিতাছি আপনি রিকশা চালান আমি বইসা থাকি।

যাক এইটা বলেনাই। মনে হয় বংশীয় লোক। ৫ টাকা বাস ভাড়ার জায়গায় ৬০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে ফার্মগেট আসলাম। । ফার্মগেট নেমে মনে হল সরকার ত্রান দিতেছে নাইলে যাকাত শিউর।

তা না হলে এত মানুষ কি করে। একটু পর ভুল ভাঙল তারাও মৃত্যুপথযাত্রি সরি সাধারন যাত্রিও হতে পারে। কোথাও যাবেন কিন্তু পাজারো করলা কিছুই পাইতেছেনা। হটাত চোখে পড়লো একটা বিশাল লাইন আনন্দ সিনেমা হলের সামনে। মনে মনে ভাবলাম খোদা কি খেইল দেখাইল সাকিব খানের সিনেমা দেখতে মানুষের এত ভিড়! টিকেট কাটতে এত লম্বা লাইন!! তার বিগ বাজেট মাই নেম ইজ সুলতান মনে হয় মুক্তি পাইছে।

হটাত এক লোক বলে "নিউমার্কেট গেলে লাইনে খারান নাইলে সরেন" ওহ খারাইতেছি ভাই আপনি আমার সামনে দাঁড়ান আপনি ভাল লোক আমাকে আরও বাজে গালি দিতে পারতেন কিন্তু আপনি দেন নি। শতাব্দীর সেরা উদ্ভট জান লেগুনায় উঠতে হচ্ছে। ভাবিষ্ট কোন রিকশাওয়ালাও পেলাম না। লেগুনার ড্রাইভারের চালানো দেখে বুঝা গেল প্রিন্স উইলিয়ামসের ঘোড়া চালানোর ক্ষমতা নিয়ে ঘুড়েন। রিকশার গায়ে ৫০ কিলোমিটার বেগে চুমু খায় চুমু খায় অবস্থায় ব্রেক করতে পারে।

গরম বেশিনা তেমন তবে হটাত এক টাকা কম দিছে কোন এক কলেজের পরিচয় দিয়া তারপর অবস্থা উত্তপ্ত। ১ টাকার জন্য অনেক খারাপ কিছু হতে পারত তেমন কিছুই হয়নি শুধু বংশের সিনিয়র কয়েকজন লোককে কিছু উপাধি দিল। ডর ডর লাগতেছিল,হেল্পার কয়েক মিনিট পরেই বলে নামেন আইসা পরছেন। বুকে ফু দিয়ে আল্লাহ বাচাইছে বলে নেমে গেলাম। ২ ঘন্টা লেটে ডাক্তারের চেম্বারে যেতেই তার চামচা দিল জারি বলল লেট করছেন বসেন পরে ডাকবো।

বাশের থেকে কন্চি মোটা মানুষ এমনিতেই বলেনা। ইচ্ছে হইতেছিল নিচ থেকে তার শরীর এক ইঞ্চি এক ইঞ্চি করে কাইটা ফেলি। কিন্তু না রোগীদের কোন ইচ্ছে থাকতে নেই। ডাক্তারের সাথে আড্ডা দিতে দিতে অনেক কথা। ১৯৮৩ সালে তিনি ৪০০ টাকা দিয়ে ঢাকায় থাকতেন।

তার অনেক ইতিহাস বলা শেষে আমাকে ১মিনিটে দেখল তারপর হাসি দিয়ে টাটা গুডবাই জানালো। ডাক্তারের হাসিতেই নাকি রোগ সেরে যায় তাই ওষুধের দিকে খেয়াল করিনি । নিচে নেমে ভাবলাম চা খেয়ে নেই,একদম টঙের একটা দোকান চোখে পড়লো। পুর্নেন্দু পত্রীর একটা লাইন মনে পরে গেল "একটু আগে একটা টং-এর দোকানের ছাউনিতে গা বাচিয়ে রিক্সা খুঁজছিলাম। খুব শীত শীত লাগছিলো, তখন চা খেয়েছিলাম ভাঙ্গা কাপে।

আধধোয়া সে কাপে লেগেছিলো অনেক মেহনতি মানুষের ঠোঁটের ছোঁয়া, লেগেছিলো থুতুও যা এখনো আমার ঠোঁটে লেগে আছে। তুমি কি পারবে সেই ঠোঁটে চুমু খেতে?" হটাত মোহ থেকে বের হয়ে চা খেতে খেতে মাথায় এল আবার এই পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ী ফিরতে হবে................ তানভীর মাহমুদুল হাসান(টেনি) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।