আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
“ভাই আমাকে মাফ করে দেন। এ বিষয়ে কথা বলে আমার চাকরিটা খাইয়েন না। সামনে আমার প্রমোশন। অন্য বিষয়ে কথা থাকলে বলেন।
” - বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সার্ভিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইদুর রহমানের
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বড় না প্রমোসন?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্লাইটের খাবার প্রস্তুতকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ক্যাটারিং (বিএফসিসি) সেন্টারে ১১ কর্মী গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। সেই ১১ কর্মীর অন্যতম মো. শাহজাহান এবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে লন্ডন সফরে যাচ্ছেন।
বুধবার সকাল ১০টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি-০১৫) ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী আর তার প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী বিএফসিসি’র প্রধান শেফ মো. শাহজাহানের বাড়ি কুমিল্লা। কিন্তু তিনি স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেখিয়েছেন সিলেট। জানা গেছে, এরই মধ্যে তার ভিসাও হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, শাহজাহানসহ বিএফসিসি’র ১১ কর্মীর স্থায়ী ঠিকানায় গড়মিল পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। যার মধ্যে অন্যতম এই শাহজাহান। ঠিক একইভাবে বাকি ১০ জনের মধ্যে তিনজনের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা। এরা স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়েছেন গাইবান্ধা, নারায়ণগঞ্জ ও পাবনা। এভাবে বাকি সাতজনই যার যে স্থায়ী ঠিকানা তা না দেখিয়ে ভিন্ন জেলাকে স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে বিমানের চাকরি নিয়েছেন।
আর এ কারণেই এই ১১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থা।
এ ধরনের একটি স্পর্শকাতর বিষয়ের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী দলে অন্তর্ভূক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আগামী ২৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন। মো. শাহজাহানও ওই তারিখে দেশে ফিরবেন।
এ বিষয়ে বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সার্ভিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইদুর রহমানের কাছে তার অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “ভাই আমাকে মাফ করে দেন।
এ বিষয়ে কথা বলে আমার চাকরিটা খাইয়েন না। সামনে আমার প্রমোশন। অন্য বিষয়ে কথা থাকলে বলেন। ”
প্রধানমন্ত্রীর জন্য খাবার তৈরিকারী বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) ৩৪ জনের একটি টিম রয়েছে। এর মধ্যে ১১ জনের বাড়ি যে জেলায় তারা দেখিয়েছেন ভিন্ন জেলাতে।
এই ১১ জনের তালিকা থাকা মো. শাহজাহান আবার প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দলের সক্রিয় সদস্য। বিমান সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী বিমানের যে ফ্লাইটে বিদেশ সফরে যান তাকে ভিভিআইপি ফ্লাইট হিসেবে উল্লেখ করা থাকে কাগজপত্রে। আর এই ফ্লাইটের জন্য যে খাবার যায় তা বিএফসিসিই তৈরি করে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইট স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিএফসিসি এজন্য একটি আলাদা তালিকা তৈরি করে থাকে।
সেই তালিকায় যাদের নাম থাকে তারাই খাবার তৈরি করেন। তালিকায় থাকা কর্মীদের সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিও থাকে।
সর্বশেষ গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের ফ্লাইটে তুরস্কে যাওয়ার সময় বিএফসিসি’র কর্মীদের ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর তুরস্কের ফ্লাইটে বিমানের বিএফসিসি’র কর্মী কর্মরত ছিলেন। যার সঙ্গে ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান সদস্য কর্নেল ফারুকের ফ্রিডম পার্টির যোগসূত্র রয়েছে।
এ বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা বিএফসিসিতে প্রধানমন্ত্রীর খাবার প্রস্তুতকারী ৩৪ জনের তালিকার ১১ জনের ভুয়া ঠিকানা খুঁজে পান। এরপর বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করে।
এ বিষয়ে বিএফসিসি’র প্রধান শেফ শাহজাহান বাংলানিউজের কাছে তার স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা বলে স্বীকার করে বলেন, সিলেটে বাবার চাকরির কারণে তিনি ওখানকার ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন। বাবার চাকরির কারণে বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা পাল্টে যায় কিনা না তা জানতে চাইলে মো. শাহজাহান বলেন, আমার বাড়ি-ঘর কোথায় তা তদন্ত করেই বিমানে চাকরি হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।