প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা, ধর্ষণ, অগি্নসংযোগ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেছেন। ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের জন্য এ বিচারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিচারের সফল সমাপ্তি যুদ্ধের ক্ষত মুছে দিয়ে বাংলাদেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেবে। বাংলাদেশে যুদ্ধকালীন ক্ষত নিরাময় ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তাৎপর্যের দাবিদার। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের এ দেশীয় সহচর রাজাকার-আলবদর, আলশামস বাহিনী এবং তথাকথিত শান্তি কমিটির সদস্যরা পাকিস্তানি হানাদারদের চোখ ও কানের ভূমিকা পালন করে।
আত্দবিক্রীত এসব ব্যক্তি পাকিস্তানি বাহিনীর লালসা মেটাতে নিজেদের মা-বোন-কন্যাকে ভেট হিসেবে পাঠানোর ঘৃণিত মানসিকতা দেখিয়েছে। লাখ লাখ মানুষের হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী পাকিস্তানি বশংবদরা। ধর্ষণ, অগি্নসংযোগ ও লুটপাটসহ এহেন অপরাধ নেই যা ইয়াহিয়া-টিক্কা খান, নিয়াজি রাওফরমান আলির ভাবশিষ্যদের দ্বারা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিতকারী ঘাতক দালালদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা সেই শাসকরা একাত্তরের কসাই ও ধর্ষকদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে ক্ষমতার সহযোগী হতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশের অস্তিত্বকে গলাটিপে ধরতে যারা শকুনের মতো খাবলে পড়েছিল তাদের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী করারও ঘটনা ঘটে। আশার কথা, মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পর হলেও একাত্তরের ঘাতক দালালদের বিচার শুরু হয়েছে। শীর্ষ অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ক্ষত নিরাময় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ঘাতক দালালদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা দরকার। নিজেদের সভ্যসমাজের মানুষ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার স্বার্থেই খুনি ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে এ ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের কোনো বিকল্প নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।