আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিমল জয়ধরের পর এবার পান্না মাস্টার : ছাত্রীদের নগ্ন ভিডিও ধারন করে ধারাবাহিক যৌন নিপিড়ন

আমি ডেনজার। মূল সুত্র : Click This Link এফএনএস (কাঞ্চন হালদার; কুষ্টিয়া) : কুষ্টিয়া শহরতলীর এক স্কুল শিক্ষকের নাম পান্না মাস্টার। পুরো নাম হেলাল উদ্দিন পান্না। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধর স্টাইলে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করে গোপন ক্যামেরায় ভিডিওচিত্র ধারণ করেছেন। পরে ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেইল করে ফাঁদে ফেলেছেন আরও অনেককে।

তবে এ দুই ঘটনার পার্থক্য পরিমল জেল খাটলেও পান্না পার পেয়ে যাচ্ছেন। গত শুক্রবার ওই শিক্ষকের এ অপকর্মের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ জনতা পান্না মাস্টারকে গণপিটুনি দেয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাকে রক্ষা করে। ক্ষমতাসীনদলের নেতারা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে যায়। এ নিয়ে পুরো কুষ্টিয়া জেলায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন অভিভাবকরা। একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেছেন, সন্তান নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তবে মান-সম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মামলা বা স্কুল কমিটির কাছে অভিযোগ দিতে ইচ্ছুক নন। এ সুযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক স্কুল কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাময়িকভাবে অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

তবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের পর তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তবে এত বড় ঘটনার কিছুই জানেন না জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১নং হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হাটশ হরিপুর গ্রামের তসলিম উদ্দিনের (কাঠমিস্ত্রী) ছেলে হেলাল উদ্দিন পান্না ২০০৩ সালে কুষ্টিয়া শহরতলীর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর থেকেই প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিদ্যালয়ের ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

একই সঙ্গে সেসব সম্পর্কের বিশেষে মুহূর্তের দৃশ্য গোপনে ভিডিও করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করেন। পরে অবাধে অনৈতিক কাজে মিলিত হতে বাধ্য করতেন। শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষকের কথা না শুনলে জোর করে অনৈতিককাজে বাধ্য করতেন। একাধিক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিওচিত্র ধারণ করার ঘটনা অবশেষে পান্নার ঘনিষ্ঠজনরাই ফাঁস করে দিয়েছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে,শিক্ষক পান্নার আড়াই ঘণ্টার ৬টি নগ্ন ভিডিওচিত্রের কপি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে মেমোরি কার্ড, পেন ড্রাইভের মাধ্যমে বিভিন্ন সাংবাদিক ও স্থানীয় পত্রিকা অফিসে।

সেসব চিত্রে থাকা ১২-১৬ বছরের একাধিক শিশু-কিশোরীর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও ভুক্তভোগীরা সবাই স্কুলছাত্রী। আরও জানা গেছে, পান্না যশোর এলজিডিতে চাকরিরত তার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুর সঙ্গেও ছাত্রীদের যৌনসম্পর্ক করতে বাধ্য করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণিতের শিক্ষক পান্না প্রাইভেট পড়ানোর সুবাদে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাদের গোপন কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন সম্পর্ক করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করতেন। পরে সেসব চিত্র দেখিয়ে দীর্ঘদিন তার সঙ্গে মেলামেশা করতে বাধ্য করতেন।

এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে তার সঙ্গে মেলামেশার চেষ্টা করলে বিষয়টি টের পায় ওই ছাত্রীর আত্মীয়স্বজন। এর জের ধরে ওই ছাত্রীর ফুফাতো ভাই স্কুলশিক্ষকের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ কেড়ে নেয়। পরে উদ্ধার করা হয় সেসব ছবি ও গোপন ক্যামরায় ধারণ করা ৬টি পর্নোভিডিও চিত্র। ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে ওই বিদ্যালয়েরর প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, পান্না মাস্টার মেয়েদের সঙ্গে সখ্য তৈরির পর শহরের একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে অবৈধ মেলামেশা করতেন ও সেসব দৃশ্য গোপন ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখতেন। ওই শিক্ষার্থী জানান, পান্না মাস্টারের টার্গেট ছিল স্কুলপড়ুয়া সুন্দরী ছাত্রী।

অপর এক শিক্ষার্থী জানান,আপত্তিকর দৃশ্যের ছবি তুলে পান্না মাস্টার তাদের সঙ্গে প্রতারণা করতেন। পরে ওইসব অশ্লীল ছবি দেখিয়ে তিনি দিনের পর দিন ছাত্রীদের যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করতেন। এমনকি বিয়ের পরও তার লালসা থেকে রেহাই পায়নি বেশ কয়েকজন ছাত্রী। গড়াইনদীর পাড়ে হাটশ হরিপুর ঘুরে জানা যায়, শিক্ষক পান্নার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কয়েক বছর আগে নিজগ্রামের দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তিনি একাধিকবার যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন।

পরে মেয়েটি গর্ভধারণ করে। এ ঘটনায় স্থানীয় সালিশি বৈঠকে তার জরিমানা করে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করে এলাকাবাসী। প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় দুই তিন বছর পর আবার তিনি গ্রামের ফিরে আসেন। বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেন, স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থীদের জাপটে ধরা, শ্লীলতাহানি করাসহ নানা অশ্লীল আচরণ করতেন পান্না মাস্টার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রী জানায়, স্যারের কাছে পড়তে গেলে তার ল্যাপটপের স্ক্রিনে অর্ধনগ্ন ও নগ্ন ছবি রেখে আমাদের পড়তে বলে বাইরে যেতেন।

এসব ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে আস্তে আস্তে সম্পর্ক গড়তেন তিনি। এদিকে, ফাঁস হওয়া ছবিতে স্কুলের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে তাকে। ছবিগুলোতে ছাত্রীদের স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায় দেখা গেছে। পান্নার কাছ থেকে পাওয়া ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল সেটের মেমোরি কার্ডে একাধিক ছাত্রীর ছবি ও ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়েছে। ছাত্রীদের বিবস্ত্র অনেক অশ্লীল দৃশ্য সেখানে ধারণ করা আছে।

উদ্ধার হওয়া ৬টি ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, পৃথক পৃথক দিনে পৃথক পাঁচ স্কুলছাত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করছেন শিক্ষক পান্না। সেখানে একই বেডরুম। একই অসবাবপত্র। যৌনসম্পর্ক স্থাপনের আগে প্রত্যেক ছাত্রীকে ভালবাসার কথা বলেন ও নিজের করে নেয়ার স্বপ্ন দেখান। ওই ৬টি ভিডিও চিত্রে সুসজ্জিত কক্ষে কুরুচিপূর্ণ যৌনচারে লিপ্ত থাকতে দেখা যায় ওই শিক্ষককে।

একটি সূত্র জানায়, সুসজ্জিত ওই কক্ষটি কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ার সোনালী ব্যাংকের পেছনে অবস্থিত। শিক্ষকতার অন্তরালে নানা ধরনের অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার জন্য ওই কক্ষটি ভাড়া নিয়েছিলেন পান্না। একজন অভিভাবক বলেন, এ রকম শিক্ষক নামের লম্পটদের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার। শিক্ষার নামে এভাবে ছাত্রী নির্যাতন করা হলে মানুষ আর শিক্ষকের কাছে কোনো মেয়েকেই পাঠাবে না। এ ব্যাপারে বারখাদা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুর রহমান বলেন, এ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুর রশীদ বলেন, পান্না শিক্ষক জাতির কলঙ্ক। আমরা তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি। তবে এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে তাকে নির্দোষ বানানোর চেষ্টা করছে একটি মহল। জেলা শিক্ষা অফিসার সায়েদুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলীমুন রাজীব বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। কোনো অভিভাবক যদি এ ব্যাপারে অভিযোগ করে তাহলে দেশের আইনানুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউএনও বলেন, বিষয়টি র্স্পশকাতর হওয়ায় অভিভাবকরা কোনো অভিযোগ না করলেও জননিরাপত্তার অভিযোগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২৮ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.