আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা কি খাচ্ছি-৪

তারাঁদের ইসকুলে আমি এক লবন চাষীর ছেলে,ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ! সে আমার মা... ডিসিসিকে দুষছে প্রাণ ঢাকা: জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ভেজাল টমেটো সস বাজারজাত নির্বিঘ্ন করতে ফের আদালতমুখী হচ্ছে প্রাণ আরএফএল গ্রুপ। আদালতের একটি স্থগিতাদেশকে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি এখনো তাদের ভেজাল পণ্য বাজারে সরবরাহ করছে। নতুন করে চলছে আরেকটি রিট পিটিশনের প্রস্তুতি। বাংলানিউজে গত বুধবার প্রাণের ‘টমেটো সসে ভেজাল, বিপজ্জনক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর সে ব্যাপারে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে পাঠানো একটি বিবৃতিতেই আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার কথা জানানো হয়। ওই বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে- ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের মামলা নং ১৯৩/২০১১ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করি যার নং ১৯২১/২০১১।

মহামান্য হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ০৮/০৪/২০১২ ইং তারিখে রুলনিশি জারি করেন এবং মামলার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন এখনও তা বলবৎ রয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের দায়ের করা এ বছরের ৫০/২০১২ মামলাটির বিষয়েও আমরা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ’ বিবৃতিতে তাদের পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি হয় এমন দাবি করলেও ওই সব পণ্য যে ভেজালমুক্ত তার সপক্ষে কোনো যুক্তি তুলে ধরতে পারেনি প্রাণ-আরএফএল। তবে সিটি কর্পোরেশনের ল্যাবরেটরির সক্ষমতা ও তাদের পরীক্ষার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কর্পোরেশন-এর সার্ভিল্যান্স এবং ল্যাবরেটরি টেস্টের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক একটি বিষয় উলে¬খ করতে চাই - পণ্যের গুণগত মান নির্ণয় করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা আমাদের সিটি কর্পোরেশনের ল্যাবরেটরিতে নেই।

কারণ একই পণ্য একেক ধরনের টেম্পারেচারে সংরক্ষণ করলে বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট এসে থাকে। যেসব পণ্য তাদের রিপোর্টে মান উত্তীর্ণ নয়, সেগুলো আবার যুক্তরাজ্যের মতো বাজারে সুনামের সাথে রফতানি হচ্ছে। ’ তবে প্রাণ আরএফএল-এর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে ডিসিসির পরীক্ষণাগার। পাবলিক অ্যানালিস্ট সারোয়ার হোসেন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ‘সস এমন একটি পণ্য যা মানসম্পন্ন ভাবে উৎপাদিত হলে দীর্ঘদিন স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে। এজন্য আলাদা টেম্প্রাচারের প্রয়োজন হয়না।

তা ছাড়া এ ধরনের পণ্যের মান নির্নয় এবং রাসয়নিক পরীক্ষার জন্য সব ধরনের আধুনিক অবস্থাই ডিসিসির পরীক্ষণাগারে রয়েছে। বাংলানিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাজারে বিক্রি হওয়া প্রানের হট টমেটো সস পুরোটাই ভেজাল এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য তা ক্ষতিকারক বলে ল্যাবরেটরি টেস্টে প্রমানিত হয়েছে। জনপ্রিয় এ খাদ্যপণ্যে ভেজাল ধরা পড়ায় দুইটি মামলা হয়েছে এর উৎপাদনকারী সংস্থা প্রাণ এর বিরুদ্ধে। বাংলানিউজের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দেশের একমাত্র বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে এ মামলা দুটি দায়ের করেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (দক্ষিন) ফুড এন্ড স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান। এ মামলা দুটিতে পৃথক পৃথক ভাবে আসামী করা হয়েছে লে. কর্নেল (অব.) মাহতাব চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ হোসেন চৌধুরীকে।

সূত্র জানায়, বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের মামলা নম্বর ৫০/২০১২ ও ১৯৩/ ২০১১ মামলা দুটি এখন বিচারাধীন থাকলেও এখন পর্যন্ত কোম্পানিটি তাদের পণ্যের মান উন্নয়ন করেনি। আদালত সূত্র জানায়, মামলা নং ৫০/২০১২ টির বাদি ফুড ইন্সপেক্টর কামরুল আদালতে যে লিখিত অভিযোগ করেন, তাতে দেখা যায়, কাকরাইলের মুসাফির টাওয়ারের ‘নন্দন মেগাশপ’ নামের এক অভিজাত দোকান থেকে ডিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের নমুনা সংগ্রহকারী নাজিম উদ্দীন প্রাণ হট টমেটো সসের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ডিসিসির (ঢাকার একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত) জনস্বাস্থ্য পরীক্ষানাগারে ল্যাবরেটরি টেস্টের জন্য পাঠান ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর। ওই নমুনা ল্যাব টেস্টের পর ডিসিসির পাবলিক অ্যানালিস্ট সারোয়ার হোসেন একই মাসের ১৮ তারিখে ডিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগে ল্যাবরেটরি প্রতিবেদন জমা দেন। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশুদ্ধ খাদ্য আইনের ৬ এর (১) ও (৭) ধারায় মামলা করা হয় বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে। এ মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান জানান, ল্যাব টেস্টে দেখা গেছে প্রাণ কোম্পানির এ হট টমেটো সসে অম্লতা (এসিটিক এসিড) ১.২ ভাগের জায়গায় আছে মাত্র ০.৩৭ ভাগ।

অন্যদিকে সসে সম্পূর্ণ দ্রবণীয় কঠিন বস্তুর পরিমান ২৫ ভাগ থাকার কথা থাকলেও তাতে আছে ২৪ ভাগ। অপরদিকে মামলা নম্বর ১৯৩/ ২০১১ এ অম্লতা (এসিটিক এসিড) পাওয়া যায় ০.৩৬ ভাগ ও কঠিন বস্তুর পরিমান ৩৮ ভাগ। কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘সসে এ ধরনের উপদানের তারতম্য সম্পূর্ণ ভেজাল হিসেবে পরিগণিত হয়। এরফলে পণ্যের মান নষ্ট হয় এবং পণ্য উৎপাদিতই হয় ভেজাল ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে। তিনি বলেন, বর্তমানে মামলা বিচারাধীন থাকলেও আবার পণ্য পরীক্ষা করে দেখা গেছে পণ্যের মান ঠিক রাখেনি প্রাণ।

মামলার প্রসিকিউটর আদালতে বলেন, বিশুদ্ধ খাদ্য রুলস ১৯৬৭ মতে নির্ধারিত মানের বাইরে উপাদানের সামান্যতম তারতম্যও খাদ্যপণ্যের ভেজাল এবং এ জন্য এ পণ্যের উৎপাদন, মোড়কিকরণ, বাজারজাত ও রপ্তানি দণ্ডনীয় অপরাধ এবং তা ৪৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য। এদিকে প্রাণের আদালতে গিয়ে ভেজাল পণ্য উৎপাদনের অনুমতি নেওয়া বা অপরাধের বিচারকাজের ওপর স্থগিতাদেশ সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি ডিসিসির স্বাস্থ্যবিভাগ। তারা বিষয়টি জনগুরুত্বসম্পন্ন এবং জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার বিষয় হওয়ায় তা আদালতের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন View this link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।