আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আনিসুল হকের “দেশ রেন্টাল” জাতিকে কি দিয়াছে?

চোরের বড় গলা। গতকাল ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের টক শো তে এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে গার্মেন্টস মালিক কাম রেন্টাল বিদ্যুৎ ব্যাবসায়ী আনিসুল হক গলা উচু করে বলেছেন তার বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নাকি নিয়মিত ৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়, গতকাল(২৫জুন ২০১২) ও নাকি ৯৬ মেগাওয়াট উৎপাদিত হয়েছে। আজকে পিডিবি’র ওয়েবসাইটে দেশ এনার্জির বিদ্যুৎ উৎপাদনের হিসাব দেখে তো টাস্কি খেলাম, গত ২৫জুন দেশ এনার্জির Siddirgonj (Desh) 96 MW(HSD) নামের রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শূন্য(০) মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে! শুধু ২৫শে জুনই না, গোটা জুন মাসের বেশির ভাগ দিনেই শূন্য(০) মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে!!শুধু জুন মাসই না, এর আগের এপ্রিল-মে মাসেও বেশির ভাগ দিন শুন্য মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। এখানে ২৫জুন ও ১ জুন এর স্ক্রীন শট এবং গোটা জুন মাসে আনিসুল হকের দেশ রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চিত্র তুলে দেয়া হলো। ছবি:১ গত ২৫ জুন ১০০ মেগাওয়াটের দেশ রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শূন্য(০) মেগা্ওয়াট বিদ্যুত উতপাদন ছবি:২ গত ১ জুন ১০০ মেগাওয়াটের দেশ রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শূন্য(০) মেগা্ওয়াট বিদ্যুত উতপাদন ছবি:৩ গোটা জুন মাসে গড়ে ১৫/২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত উতপাদন দেখা যাচ্ছে এ মাসের বেশির ভাগ দিনই এই রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে কোন বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় নি।

গোটা জুন মাসে গড়ে দিনের বেলায় বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে সর্বোচ্চ ১৫ মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যা বেলায় সর্বোচ্চ ২৫ মেগাওয়াট! অথচ রেন্টাল চুক্তি অনুসারে পুরো ৯৬ মেগাওয়াটের ভাড়াই পিডিবির কাছ থেকে পেয়েছেন জনাব আনিসুল হক। ফলে তার তো কুইক রেন্টাল থেকে খুশী হওয়ারই কথা, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নষ্ট থাকুক বা সরকার তেল না দিক, বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলুক আর না চলুক, ভাড়া কিন্তু আনিসুল হকরা ঠিকই পাচ্ছেন! খোজ খবর করে আরো জানা গেল, দেশ এনার্জির Siddirgonj (Desh) 96 MW(HSD) বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরী করা হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে পিডিবি’র জমিতে যেখানে সরকার চাইলে খুব সহজে ৩০০ মেগাওয়াট বেজ লোড বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে পারতো। আবার তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার কথা বলে কুইক রেন্টাল নির্মাণ করার চুক্তি হলেও আনিসুল হকের ডিজেল ভিত্তিক রেন্টাল প্ল্যান্টটি উৎপাদনে আসে নির্ধারিত সময়ের ৪মাস পরে। সিদ্ধিরগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াটের ভাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি হয় ২০১০ সালের ১০ জুলাই, চুক্তি অনুসারে নভেম্বর মাসের শুরুতে উৎপাদনে আসার কথা ছিল কিন্তু চারমাস দেরী করে সাড়ে চার কোটি টাকা জরিমানা দিয়ে ২০মার্চ ২০১১ তারিখে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয়। উদ্বোধনের দিন সর্বোচ্চ ৯১মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও এর পরদিন থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং গড়ে ৬০-৭০ মেগাওয়াট করে এক মাস বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর, এপ্রিল মাসে কখনও কখনও ৩০-৪০ মেগাওয়াট, মে মাসে কখনও ৫০-৫৫ মেগাওয়াট করে উৎপাদন করে আবার কিছুটা বেড়ে ৭০-৮০ মেগাওয়াটে আসে।

তেলের সংকটই হোক বা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকুক- ফলাফল হলো এই বিদুৎ কেন্দ্র থেকে সারাবছর পূর্ণ ক্ষমতায় বিদ্যুৎ জনগণ পায় নি যদিও ক্যাপাসিটি চার্জ ঠিকই পাবলিকের পয়সা থেকে গিয়েছে। সর্বশেষ পরিস্থিতি হলো, গত এপ্রিল,২০১২, মে ২০১২ এবং এই জুন ২০১২ এর প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তেমন কোন বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় নি। আমরা জানতে চাই জনাব আনিসুল হক এভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কত টাকা খেয়ে, কত টাকা মুনাফা লুটে এখন কুইক রেন্টালের পক্ষে দালালি করতে নেমেছেন! আরো দেখুন: কুইক রেন্টাল নিয়ে আনিসুল হকের চিটিংবাজির জবাব কুইক রেন্টাল কি আসলেই অপরিহার্য ছিল? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।