খোলা চোখে অচেনা কথা ১.
প্রথম দিনের ক্লাস করছিলাম স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার এক পাশে এক চায়নিজ আর একপাশে এক ইরানী সহপাঠী বসা। এখনও ভালভাবে পরিচিত হওয়া হয় নাই। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক তথ্য গঠনের(ডাটাস্ত্রাকচার) সহজ বিষয়গুলো অনেক কঠিন করে বোঝানর চেষ্টা করছিলেন। প্রথম আধা ঘণ্টা অনেক ধৈর্য ধরে শোনার পর মনোযোগ হারিয়ে ফেললাম।
হঠাৎ নিবিষ্টতা ফিরে পেয়ে দেখি শিক্ষক পরের কোন দুর্বোধ্য বিষয়ে চলে গেছেন। এর আগে কি পড়াল বা বোর্ডে কি লিখল তা দেখার জন্য পাশে বসা সহপাঠীদের খাতার দিকে তাকালাম। তাঁদের খাতার দিকে তাকিয়ে তো আমার চক্ষু চড়কগাছ!! ইরানী ছেলেটার খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি ডানদিক থেকে বামদিকে পারশিয়ান ভাষায়(আরবীর মতই) লিখছে আর বাম দিকে বসা চায়নিজের খাতায় তাকিয়ে দেখি কিযেন হিজিবিজি আঁকিবুঁকি করছে!! ক্লাসে মনোযোগ না দেয়ার ফল হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেলাম। এর সাথে এটাও বোঝা হয়ে গেল যে সংস্কৃতিক ভিন্নতা কি জিনিস, আর ভিন্ন সংস্কৃতির সহপাঠীদের সাথে চলাফেরা করাটা কতটা কঠিন হবে?
২.
আমারপাশের রুমেই থাকে এক তিউনিশিয়ান। নাম জিয়াদ।
ব্যাচেলরে ১ম সেমিস্টারে পড়ছে। তিউনিশিয়া উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ, এটা মাথায় আসার পর একটু জটে পড়ে গিয়েছিলাম। সচারচার আফ্রিকানরা যেমন দেখতে হওয়ার কথা এরা তেমন না। আফ্রিকান বলতে তৈল যুক্তকালচে গায়ের রঙ, কোঁকড়ানো চুল এইসব আর কি। এরা দেখতে অনেকটা ইউরোপের লোকদের মতই।
লম্বা। ফর্সা। আফ্রিকান দের সাথে মিল রেখে এদেরকে চেনার একটা সর্বজনীন উপায় খুজতে লাগলাম। পেয়েও গেলাম। এদের চেহারা ইউরোপীয় হলে কি হবে ? চুলগুলো আফ্রিকানদের মত।
কোঁকড়ানো। তাইত বলি, একটা না একটা তো মিল থাকতেই হবে, ওদের মহাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য!! তো ইদানিং দেখি প্রায় সময়ই সে মোবাইলে কথা বলে। না সকাল না বিকাল। আর এত জোরে জোরে আওয়াজ করে কথা বলতে থাকে যেন কারো সাথে ঝগড়া করছে। আমি মনে মনে ভাবি-বাংলাদেশের সাথে সময়ের বিস্তর পার্থকের জন্য আমি দেশে কথা বলার জন্য মানানসই সময়ই বের করতে পারি না।
আর এ কিনা রাত নেই, দিন নেই, সব সময় কথা বলে!! কৌতূহলি হয়ে একটু গুগল মানচিত্র ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখি জার্মানি ও তিউনিসিয়া একই দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত। তার মানে এই দুই দেশের সময়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই! বলার মত আরও কিছুতথ্য পেলাম- তিউনিশিয়াকে আরব দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতিতে সবচেয়ে খোলামেলা দেশ বলাহয়, যেখানে নারীদেরও সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এমনকি তা ইউরোপের নারীদের সাথে তা তুলনা করার মত।
সে যাক গে। একদিন দেখি জিয়াদ কিছু পিঠা পুলি নিয়ে আমার রুমে হাজির।
দেশ থেকে নাকি কুরিয়ার সার্ভিসে করে পাঠানো হয়েছে। হরেক রকমের পিঠা, হালুয়া। তন্নদ্ধে আমাকেও কয়েকটা পরখ করতে দিল। কি আর বলব, পিঠাগুলো স্বাদে অতুলনীয়। মনে মনে ভাবলাম- কে বলে শুধু বাঙ্গালীরা পিঠা পুলি তৈরিতে অনন্য? খেতে খেতে গল্প করছিলাম।
জিয়াদের বড় ভাইয়ের নাকি বিয়ের কথা বার্তা চলছে। তাই খাবারের এত আয়োজন। বিয়ের কথা শুনে ওদের সংস্কৃতি,কৃষ্টি সম্পর্কে জানার আগ্রহটা ধরে রাখতে পারলাম না। জিজ্ঞেস করলাম- “তোমাদের দেশে বিয়ে শাদির অনুষ্ঠান কিভাবে হয়?” জিয়াদ বলল- “মায়েরাই তাঁদের ছেলেদের জন্য বউখোঁজে। মেয়ের মায়ের সাথে যোগাযোগ করে তাঁদের বাড়িতে যায়।
গল্প, আলাপ করে দেখেশুনে ছেলের মায়ের যদি মেয়েকে পছন্দ হয় তাহলে তারা একটা দিন ঠিক করে। নির্দিষ্ট দিনে বরের পরিবারের ছেলেরা বর সহ মেয়ের বাড়ির দিকে রওনা হয়। বাড়ীর দরজায় গিয়ে বরের বাবা বা বড় ভাই(বাবা না থাকলে) তিন বার নক করে এবং বলে আমরা আমাদের ছেলের জন্য আপনার মেয়ের হাত দেখতে এসেছি। তখন দরজার অপর প্রান্ত থেকে মেয়ের বাবা দরজা খুলে দিয়ে বর যাত্রীদের স্বাগত জানায়। তারপর শুরু হয় ভোজন রসিক তিউনিশিয়ানদের খানা-পিনা।
যে কোন অনুষ্ঠানে তাঁদের প্রধান খাবার কুচকুচ। কুচকুচ হল এক ধরনের মোটা গমের সুজি, যা বিভিন্ন প্রকার মসলা দিয়ে রান্না করা হয় এবং মাংস ও সবজির সাথে পরিবেশন করা হয়(কুচকুচ রান্না করা নাকি অনেক কঠিন কাজ। তাই কথিত আছে যে, যেই মেয়ে কুচকুচ রান্না শিখেছে সে বিবাহ উপযুক্ত হয়েছে!!)।
তারপর বর ও বউ পরস্পর আংটি বদলকরে। এখানেই শেষ নয়।
আংটি বদলের আগে বরকে নির্দিষ্ট পরিমান যৌতুক পরিশোধ করতে হয়! মেয়ে যত রুপবতি, গুনবতি তাঁদের যৌতুকের পরিমানও তত বেশি! বলে রাখা ভাল মেয়ের বাবা আংটি বদলের আগে দেখে নেয়, ছেলের নিজস্ব বাড়ী আছে কিনা। কারন বিয়ের দিন থেকেই তারা নতুন বাড়ীতে উঠবে। অন্যথায় মেয়ের বাবা বিয়েতে রাজি হন না। আর এ জন্যই মনে হয় তিউনিশিয়ান পুরুষদের গড় বিয়ের বয়স ৩৪ বছর!!(নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাড়ী করা সময়ের বেপার বৈকি!!) এবং তারা কখনও ২য় বিয়ে করার সাহস দেখাতে পারে না! বেচারারা!! আংটি বদল হয়ে গেলে তারা বিয়ের দিন তারিখ ধার্য করে। ৬ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাঁদের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
”
জিয়াদ অনেক তথ্যই দিল তার দেশ সম্পর্কে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, তাঁদের দেশটি নাকি পৃথিবীর মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত! অর্থাৎ মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে তিউনিসিয়া থেকে পূর্বপশ্চিম, উত্তর-দক্ষিনে দুরত্ত সমান!! জিয়াদের কাছে জানতে চাইলাম তিউনিশিয়ানরা কৌতুক প্রিয় কিনা? উত্তরে সে বলল- না তিউনিশিয়ানরা খুব একটা রসিক নন। তবে তারা লিবিয়ানদের নিয়ে অনেক রঙ্গ-তামাশা করে থাকে। প্রতিবেশী এই দেশটির সাথে তাঁদের সম্পর্কের কোন বৈরিতা নেই। উন্নত শিক্ষা, চিকিৎসা সহজলভ্য হওয়ায় লিবিয়ানরা এখন প্রতিবেশী দেশটিতে ভিড় করছে।
ইদানিং কালে তাঁদের আবির্ভাব এত বেশি হয়ে গেছে যে, লিবিয়ানরা তিউনিশিয়ানদের কাছে কৌতুকের খোরাক বনে গেছে। এমনিএকটি রঙ্গ শোনাল জিয়াদ- তিন দেশের প্রধানমন্ত্রী উড়োজাহাজে করে ভ্রমন করছিলেন। সুইস,জার্মান এবং তিউনিশিয়ান। সুইস প্রধানমন্ত্রী তার হাতঘড়ি টি খুলে চলন্ত উড়োজাহাজ থেকে বাইরে ফেলে দিলেন। তা দেখে বাকি প্রধানমন্ত্রীগণ বললেন- “কি ব্যাপার ঘড়ি ফেলে দিলেন কেন?” প্রতিউত্তরে সুইস প্রধানমন্ত্রী বললেন, “এগুলো আমরা তৈরি করি।
ঘড়ি আমাদের দেশে অনেক আছে। তাই”।
কিছুক্ষণ পর জার্মান প্রধানমন্ত্রী একখানা কারই ফেলে দিলেন ও বললেন- “আমরা অনেক উন্নতমানের কার বানাই এবং এগুলো আমাদের দেশে অনেক আছে। ”
সবশেষে তিউনিশিয়ান প্রধানমন্ত্রী একজন লিবিয়ানকে প্লেন থেকে বাইরে ফেলে দিলেন। সকলে জিজ্ঞেস করলেন- “ওনাকে ফেলে দিলেন কেন?” জবাবে তিউনিশিয়ান প্রধানমন্ত্রী বললেন- “এরা এখন আমাদের দেশে অনেক আছে!!”
৩.
বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃ সংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ চলার সময় এক ফরাসী বন্ধুর সাথে পরিচয়।
এই প্রশিক্ষণে সবাই সবার দেশ নিয়ে কিছু বলার সুযোগ পায়। ইউরোপের দেশ ফ্রান্স কে নিয়ে বলার জন্য এশিয়ান ও আমেরিকানদের দায়িত্ব দেয়া হল যে, কি জানে এরা ফরাসীদের সম্পর্কে ? পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশা শিক্ষার্থীরা ফ্রান্স নিয়ে তাঁদের ধারনা ও কৌতূহলগুলো তুলে ধরল। যেমন কোরিয়ানদের ধারনা ফরাসীরা খুবই অলস হয়ে থাকে। কখনই তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সময়ে যথাস্তানে পৌছতে পারে না। আবার, অস্ট্রেলিয়ানদের ধারনা এরা স্বভাবে খুব রাগী।
এরপর ফরাসী বন্ধুটিকে যুক্তিখণ্ডনের জন্য বলা হল। সে অনায়াসে সবকিছু স্বীকার করে নিল। দুঃখের সাথে আরও জানাল- “একসময় ফরাসীদের মহিমান্বিত অতীত ছিল। বিগত অতীত সম্পর্কে গর্ব করার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু এখন এগুলো দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে।
" বিরতির সময় ফরাসী বন্ধুটির কাছ থেকে তার দেশ সম্পর্কে জানার জন্য কিছু প্রশ্ন করলাম। এই কেমন তাঁদের সংস্কৃতি, প্রচলিত মজার কোন গল্প আছে কিনা? এইসব। তার দেয়া মজার উপাখ্যান গুলো নিচে তুলে ধরলাম।
ফরাসীরা নাকি যুদ্ধপ্রিয় জাতি। আর এর সবচেয়ে বড় উধাহারন হল দুটি বিশ্ব যুদ্ধে তাঁদের বাফার দ্রবনের ভুমিকা।
এ জন্যই আমেরিকান আর্মি জেনারেল নরমান সোয়ারযকফ বলেছিলেন- “ফ্রান্সকে ছাড়া যুদ্ধে যাওয়া মানে, অস্ত্র ছাড়া যুদ্ধে লড়া। ” সে যাই হোক ২য় বিশ্ব যুদ্ধের সময়কার কথা। ফরাসী জেনারেলের সাথে ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আমেরিকান জেনারেল। কথা হচ্ছিলো কার সৈন্যরা বেশি সাহসী এই নিয়ে।
প্রমান দেখানর জন্য আমেরিকান জেনারেল তার সাথের এক সৈন্যকে বললেন- “জাম্প”।
সৈন্যটি সাথে সাথেই ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ল।
তারপর আমেরিকান জেনারাল বলল- “দেখলেন তো আমাদের সৈন্যের কত সাহস?”
এবার ফরাসী জেনারেলও তার এক সৈন্যকে ডেকে নিয়ে বললেন “জাম্প”।
সৈন্যটি নিচের দিকে তাকাল একবার এবং বলল- “মাথা ঠিক আছে আপনার? পারলে নিজে দেন”!!!
এরপর ফরাসী জেনারেল বললেন- “ দেখলেন কত বড় সাহস?!!”
ফরাসীরা নাকি খুব রাগী। তবে আমার বন্ধুটির মতে রাগান্বিত হওয়া কখন কখনও উপকারিও বটে। কারন রাগ থেকে জন্ম নেয়া ঝগড়া দম্পতিদের প্রনয় আরও জোরদার করে থাকে।
এমনি এক রাগান্বিত দম্পতির গল্প শোনাল সে-
স্বামী খুব রেগে-মেগে স্ত্রীকে বলছে- "আমি যখন তোমার উপর রাগ করি, তখন তুমি কোন প্রতিউত্তর কর না। নিজেকে সামলে রাখ কিভাবে তুমি?"
স্ত্রীঃ আমি টয়লেট পরিস্কার করি।
স্বামী আরও রেগে গিয়েঃ এটা তোমাকে কিভাবে রাগ কমাতে সাহায্য করে?
স্ত্রীঃ কেন? আমি তোমার টুথব্রাশ ব্যবহার করি!!!
৪.
এবার প্রতিবেশী দেশের কথা বলি। আমাদের ক্লাসে সংখ্যার দিক দিয়ে চায়নিজদের পর ইন্ডিয়ানদের অবস্থান। ইন্ডিয়ানদের সাথে পরিচিত হতে গেলেই সুলভ প্রশ্ন- “আপকো তো হিন্দি আতা হে না” ? ভাবখানা এমন নেয় যেন বাংলাদেশ মনে হয় ইন্ডিয়ার একটা প্রদেশ।
‘নো নো’ জবাব দিতে দিতে কখনও মনের অজান্তেই বলে ফেলি- “নেহি আতা হে”!! পরক্ষনে ভাবি প্রতিবেশী দেশটির টিভি- চ্যানেল বা চলচ্চিত্র আমাদের মনের অজান্তেই আমাদের সংস্কৃতিকে কতটা আঁচড় কেটে যাচ্ছে!!
সে যাই হোক। একদিন এক ইন্ডিয়ান বন্ধুর সাথে আমাদের দুই প্রতিবেশী দেশের সাম্প্রতিক সম্পর্ক নিয়ে আলাপ করছিলাম। তাতে বাংলাদেশের সাথে ভারতের পানি বণ্টন চুক্তি সহ অনেক বিষয় চলে এলো। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম- “তোমরা এমন কেন ? সব নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ছোট্ট দেশটিকে মরুভুমিতে পরিনত করতে চাইছ। আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে অবৈধ ভাবে তারকাটার বেড়া দিয়ে সীমান্ত ঘিরে নিচ্ছ।
আবার বি এস এফ দিয়ে নিরিহ লোকগুলোকে গুলি করে মেরে ফেলছ। ” সে জবাবে বলল- “আমাদের দেশের পরিস্থিতি ভালনা। একদিকে পাকিস্তানী ঢুকে জঙ্গি হামলা চালাচ্ছে। আর একদিকে চায়নিজরা হুমকি হয়ে আছে। দক্ষিনে তামিল টাইগাররা দিন দিন কপালে চিন্তার ভাজ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আর সাথে তোমরা তো আছই। বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা গুলিতে অবৈধ পাচার বেড়ে গেছে। এসব নিয়ে অনেক সমস্যা। আমার কাছে আলাদিনের চেরাগ থাকলে বলতাম- গোটা ভারতকে যেন বড় প্রাচীরে ঘিরে দেয়। চীনের প্রাচীরের চেয়েও বড়।
তাহলেই এতসব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। ” আমি প্রতিউত্তরে বললাম- “আমারও একটা আলাদিনের চেরাগ থাকলে কি বলতাম জান ? বলতাম- দেয়ালঘেরা জায়গাটা পানি দিয়ে পূর্ণকরে দিতে!!”
৫.
আমার এক আত্মীয় তার ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিতে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছেলেটিকে প্রশ্ন করেছিলেন- “মাছ কোথায় থাকে?” ছেলেটি উত্তরে বলেছিল “ফ্রিজে থাকে!!” সে কিন্তু মিথ্যা বলে নি। সবসময় সে এমনটি দেখে বড় হয়েছে। কিন্তু আমরা তার উত্তরটা নিতেও পারছিনা।
আমাদের পরিবার বা সমাজ এই ছোট্ট শিশুকে শেখাতে পারেনি যে, মাছ পুকুরে থাকে। এভাবে আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সাথে দিনে দিনে নতুন প্রজন্মের একটা দুরত্ত তৈরি হচ্ছে। বিশ্বায়নের ফলে অন্য আর কয়েকটা তৃতীয় বিশ্বের দেশের মত আমাদের দেশেও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। তাই, নতুন বছরের পহেলা বৈশাখ হোক নিজেদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার মোক্ষম হাতিয়ার।
নতুন হালখাতা।
এই লিখাটি বি এস এ- স্টুটগার্ট এর বৈশাখী ম্যাগাজিন "পরবাস" এর জন্য লিখা। যারা কৌতুক প্রিয় তাঁদের জন্য উৎসর্গ কৃত।
শুভ নববর্ষ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।