ইজাজ উদ্দিন কায়কোবাদ
২৪ এপ্রিল আত্মীয়র বাসায় টেলিভিশনে সাভারের ভবনধ্বসের ঘটনা দেখেই দ্রুত খেয়ে রওনা হন সাভারের উদ্দেশ্যে। নিজ বাসাতে জানাননি কিছুই। সেখানে গিয়ে ফোনে স্ত্রীকে জানিয়েছিল সে সাভারে মানুষকে উদ্ধার করতে গেছেন। ২৮ এপ্রিল রাতে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ করে বাসায় ফেরার কথা ছিল কিন্তু সে ফেরা হল লাশ হয়ে ।
রানা প্লাজায় জীবিত শ্রমিক উদ্ধারের শেষ চেষ্টাটি ছিল শাহিনা পারভীনকে নিয়ে।
সে উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল কিন্তু মানবতার জয় হয়েছিল সেদিন। যে জয়ে জীবন দিয়েছিল বীর কায়কোদবাদ।
একমাত্র সম্বল দেড় বছরের শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে নিজেকে উদ্ধারের জন্য বার বার আকুতি জানিয়েছেন শাহিনা। কিন্তু শত চেষ্টাতেও তাকে জীবিত উদ্ধার করা গেল না।
শাহানার নিষ্প্রাণ দেহ ২৯ এপ্রিল বিকেলে থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
শাহানা পারভীনকে জীবিত উদ্ধার করতে ১১ ঘণ্টার মতো অক্লান্ত পরিশ্রম করেন সেনা, ফায়ার সার্ভিস ও সাধারণ উদ্ধারকর্মীরা। সে সাধারণ উদ্ধারকর্মীদের একজন কায়কোদবাদ।
শাহানাকে উদ্ধারের শেষ মুহূর্তে ঘটেছিল এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ২৮ এপ্রিল রোববার রাতে উদ্ধারের আগ মুহূর্তে ড্রিল মেশিনের অগ্নিস্ফূলিঙ্গে সুড়ঙ্গ পথে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তে আগুন ভেতরে থাকা কাপড় ও দাহ্য পদার্থে ধরে গেলে ভেতরের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
পা ফসকে উদ্ধারের গর্তের ভেতরে পড়ে যান কায়কোবাদ নিজেও। ভেতরে থাকা রাসায়নিক গ্যাস প্রবেশ করে তার শরীরের ভেতর। অগ্নিকান্ডের রুমটিতে তখনো আগুন। পুড়ে যায় কায়কোবাদের মুখ শরীরের ৫০ শতাংশের বেশি।
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হয় অগ্নিদগ্ধ ইজাজকে ।
চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হয় তাকে। সরকার তার চিকিৎসা ও যাতায়াত খরচ বহন করে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইজাজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।