ফেসবুকে আমারে "বিডি আইডল" নামে সার্চ দিয়া পাওয়া যাবে ক. নীচেরটা দিন দুই আগের আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসঃ
রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনেকেই অনেকরকম অবস্হান নিয়েছে...এই বিষয়ে কয়েকটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য--
১) যে ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা কক্সসবাজারে আশ্রয় নিয়েছে এরা বাংলাদেশের বিষফোড়াঁ। জাতিসংঘের চাপের কারণে এদের নিয়ে কিছু করতে পারেনি সরকার সেভাবে। এদের বড় একটা অংশ মিশে গেছে বাংলাদেশী জনস্রোতে। দেশে এবং বিদেশে (বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে) প্রচুর অপকর্মের হোতা এই রোহিঙ্গা বাংলাদেশীরা
২) বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্হানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার ক্ষেত্রে তারা বাঙ্গালী, মুসলমান ইত্যাদি বিবেচনার সুযোগ নেই। বিবেচ্য বিষয় হলো আশ্রয় দেয়া শুরু করলে এ স্রোত সামাল দিতে পারবে কিনা বাংলাদেশ?
৩) চীনের আর্শীবাদ পুষ্ট মায়ানমারের সামরিক শক্তি প্রায় সবদিক থেকেই বাংলাদেশের উপরে।
রোহিঙ্গা, সমুদ্র ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারকে চাপ দেবার তেমন কোন অবস্হায় নেই।
৪) এই বিষয়ে একমাত্র কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারে জাতিসংঘ। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখবেন মায়ানমারের ব্যাপারে প্রায় সব দেশেই মোটামুটি চুপ থাকে। আর এখন অং সান সুকি মুক্তি পাবার পর পশ্চিমা বিশ্ব সহ সব দেশই মায়ানমার সাধু ধুয়োঁ তুলছে।
৫) যারা বলছেন মানবতার খাতিরে, ১৯৭১ এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইত্যাদিতে বাংলাদেশকে সীমান্ত খুলে দেয়া উচিৎ---দুটো জিনিষ খেয়াল করা উচিৎ--ক) এদের আশ্রয় দিলে ভবিৎষতে এদের কি হবে? এদের দায়িত্ব কে নেবে? খ) বিশ্বের কোন দেশই নিজেদের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক লাভ ছাড়া শরণার্থী আশ্রয় দেয় না
সংযুক্তিঃ মায়ানমারের বৌদ্ধ-মুসলিম বর্তমান দাঙ্গার কারণ নিয়ে কিছু লিখবো না ভেবেছিলাম....কিন্তু আগের স্ট্যাটাসটি নানা জায়গায় ছড়িয়ে যাবার পর নানারকম আক্রমণাত্মক কথা বার্তা হজম করতে হচ্ছে...বেরাদান গন শুনেন তাহলে.....তিন মুসলিম যুবক স্হানীয় এক বৌদ্ধ মেয়েকে গণধর্ষণ করে হত্যা করে....সেই স্হানীয় বৌদ্ধরা এরপর একত্র হয়ে একটি বাস পুড়িয়ে দেয়...আগুনে পুড়ে মারা যায় ১০ জন মুসলিম....এর বাইরের তথ্য হলো বাংলা ভাষী এই মুসলিমদের মায়ানমার সরকারী ভাবে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ কারী হিসেবে ট্রিট করে....
খ. নীচেরটা ব্লগার রিফাত হাসানের একটি মন্তব্যঃ
সরকার রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ করতে দিবে না…অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে এমনিতেই তারা বিপদে……সুতরাং নিশ্চিন্ত থাকেন……রোহিঙ্গারা ঢুকতে পারবে না যদি না কোন মিরাকেল ঘটে…
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারলে মানবিক জাতি হিসেবে ভালো বোধ করতাম, কিন্তু রাষ্ট্রকে অনেক সময় নিজের স্বার্থ রক্ষায় নিশ্চুপ থাকতে হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের না জড়িয়ে পড়ার কিছু কারণ-
-রোহিঙ্গা সমস্যা এই নিয়ে আমরা তৃতীয়বার মোকাবেলা করছি, আ্যমনেস্টি আর জাতিসংঘের উচিত আমাদের উপদেশ না দিয়ে মিয়ানমারকে এই সমস্যা সমাধানে বাধ্য করা
-এটি মিয়ানমারের বিষয়। এটিকে আবারো দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে পরিণত করতে দেয়া ঠিক হবে না।
-অং সান সু চি সহ মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীরাই রোহিঙ্গাদের দেশে থাকতে দিতে রাজি না। সেনাবাহিনী তো নয়ই। তাই তাদের আশ্রয় দিতে শুরু করলে সহিংসতা বেড়ে যেতে পারে, রাখাইন ও সেনারা এই সুযোগে অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে বিপুল উৎসাহে সীমান্ত দিয়ে অধিকাংশ রোহিঙ্গাদের চিরতরে বের করে দেয়ার চেষ্টা করতে পারে।
কিন্তু তাদের অনুপ্রবেশে বাধা দিলে তারা নিজ সীমান্তের ভেতরেই থাকবে আর পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে মিয়ানমার সরকার বাধ্য হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া এক্ষেত্রে আরো বিপদজনক ও হিতে বিপরীত হয়ে উঠতে পারে তাদের জন্যেই।
-এটি একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, স্বাধীনতা যুদ্ধ নয়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দীর্ঘসময় ধরে চলে না, এম্নিতেই থিতিয়ে আসে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই হয়তো দাঙ্গা প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে।
-আমরা ঢাকাবাসী সুশীল সমাজ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলাফল ভোগ করবো না, যেটা করবে কক্সবাজার ও পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ। তাদের জিজ্ঞেস করুন…তারা কেউই আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে রাজি নয়, গত কয়েক দশকে রোহিঙ্গারা সেখানে যেসব সামাজিক ও অর্থনৈতিক জটিলতা তৈরি করেছে তার ফলসরূপ। সুতরাং আমরা মানবিক হতে গিয়ে তাদের উপর শরণার্থী সমস্যা চাপিয়ে দিতে পারি না। স্থানীয় জনগণের সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
-অনেকেই ১৯৭১ সালে ভারতের আমাদের শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার সাথে এই ঘটনা তুলনা করছেন।
কিন্তু, প্রথমত ভারত আমাদের শুধু মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়নি, ভূ রাজনৈতিক স্বার্থ না থাকলে তারাও এই যুদ্ধে জড়াত না, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের এমন কোন স্বার্থ নেই। আমরা যদি চিরতরে ভারতেই থেকে যেতাম, যুদ্ধ না করতাম, তাহলে ভারত কখনোই আমাদের ঢুকতে দিত না…আমি নিশ্চিত। অথচ অধিকাংশ রোহিঙ্গার ফিরে যাবার ইচ্ছাই থাকে না, চিরকালীন শরণার্থী পালা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব না।
-রোহিঙ্গা ইসুতে বাংলাদেশকে জড়ালে মিয়ানমারের অনেক লাভ। সমুদ্র হারানোর পর এখন বাংলাদেশকে শরণার্থীর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেয়া যায়, নানা ইস্যুতে দর কষাকষি করা যায়।
আর একবার লাখ লাখ রোহিঙ্গা তাড়িয়ে দেয়া গেলে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার আগ্রহ যে তাদের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে কারোরই নেই, এটিও প্রমাণিত। আর এই সংঘাত কেন্দ্র করে যে সেনাশাসকগণ মিয়ানমারে আবার গোল দিতে চাইবে না তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই এই খেলায় জড়ালে ফলাফল নিশ্চিত……তবে বাংলাদেশের যে কোনই লাভ নেই তা নিশ্চিত।
আবারো বলি, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারলে মানবিক জাতি হিসেবে হয়তো আমরা ভালো বোধ করতাম। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে রাজনীতি আর কূটনীতিতে মানবিকতা অনেকাংশেই অপ্রাসঙ্গিক!
এখানেই পরার্থপরতার অর্থনীতির প্যারাডক্স......একবার দান করা শুরু করলে নিজের কাপড় পর্যন্ত খুলে দিতে হয়, একবার সীমান্ত খুলে দিলে পরিণাম কী হবে তার ঠিক নাই, আর আলোচনা (!) মিয়ানমারের সাথে করা খুবই কঠিন কাজ...কারণ জাতি হিসেবে এরা পৃথিবীতেই সামাজিক না, এর আগের শরণার্থীদেরই তারা ফিরিয়ে নেয় নাই...এখন বাকিদের বের করে দিতে পারলেই খুশি হয়......
আমরা দ্রুত বিজয় না পেলে কী হত তা আসলেই বলা মুশকিল……আর জাতি হিসেবে নিজেদের স্বার্থপর হতেই হয়, কারণ জাতি কিংবা রাষ্ট্র এই ধারণাগুলোই স্বার্থপর ও সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্যে তৈরি করা হয়েছে… ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।