আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উলামায়ে দেওবন্দের প্রতি মিথ্যা অপবাদ এবং আমাদের সংক্ষিপ্ত জবাব - ০১

অপবাদঃ উলামায়ে দেওবন্দের প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয় যে, তাঁরা এ আক্বীদায় বিশ্বাস করেন, আল্লাহ মিথ্যা কথা বলতে পারেন। ফাতওয়া রশীদিয়া প্রথম খণ্ড, পৃ - ১৯। জবাব بسم الله الرحمن الرحيم একটি সতর্কবাণী সাধারণ মুসলমানদের প্রতি সতর্কতার জন্য জানাচ্ছি যে, আমাদের আকাবীরে দেওবন্দ যারা তাদের আজীবন মেহনত দ্বারা এ উপমহাদেশ থেকে বাতিল আক্বিদা, শিরক-বিদআতকে বিতাড়িত করার জন্য সংগ্রাম করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শিরক-বিদআত পূজারীরা যেসব অভিযোগ করেছে তার সব ক’টিই মিথ্যাচার। এ সকল আক্বিদার সাথে আমাদের সামান্যতম কোন সম্পর্ক নেই। অধিকাংশই এতই মিথ্যাচার যে, লিখতে গিয়ে আশ্চর্য হয়ে যাই।

ওরা মুসলমান দাবি করে এমন জঘন্য মিথ্যাচার করে কি করে? কোথাও শব্দের আগে পরের বক্তব্য বাদ দিয়ে খন্ড বক্তব্য উদ্ধৃত করে, কখনো যে বক্তব্যে ধারে কাছেও কোন বক্তব্য নেই তা আছে বলে প্রচার করছে। কখনো শব্দ পাল্টে নিজ থেকে শব্দ বাড়িয়ে, কখনো এক পৃষ্ঠার পর কয়েক পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে আরেক পৃষ্ঠার শব্দ মিলিয়ে তৈরী করে এক মনগড়া প্লাটফর্ম। যা দেখে সাধারণ মুসলমান না বুঝেই স্বীকার হয় বিভ্রান্তিতে। তাই সকল পাঠকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ রেজাখানী গ্রুপ এবং কথিত আহলে হাদীস গ্রুপের পক্ষ থেকে যখনই আমাদের স্বর্ণালী আকাবীরদের বিরুদ্ধে কোন আপত্তিকর মিথ্যা শুনতে পান, তাহলে হক্কানী ওলামাদের কাছে এর সঠিক ব্যাখ্যা বা মূল কিতাব থেকে না পড়ে আন্দাজেই তা প্রচার করে গোনাহগার হবেন না। না জেনে এবং যাচাই বাছাই না করে তা প্রচার করে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ « كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ (سنن ابى داود-كتاب الأدب، باب فِى التَّشْدِيدِ فِى الْكَذِبِ، رقم الحديث-4994) অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যা শুনে তা’ই বলতে থাকা [যাচাই বাছাই ছাড়া] ব্যক্তি মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ঠ। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৯৯৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩০, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৭, মুসনাদে ইবনুল জিদ, হাদীস নং-৬২৭, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৮২০১, মুসনাদুশ শিহাব, হাদীস নং-১৪১৫, মাশকিলুল আসার লিত তাহাবী, হাদীস নং-১৯৮০, মুসনাদে আব্দুল্লাহ বিন মুবারক, হাদীস নং-১৯, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৬১৩১} এবার উত্তরের দিকে খেয়াল করুন- কুতবুল আলম আল্লামা রশিদ আহমাদ গঙ্গুহী (রহঃ) এর ফাতওয়ায়ে রশিদিয়ার বিরুদ্ধে যে মিথ্যাচারের সূচনা বেদআতিরা শুরু করেছিল, যার পূর্ণতা দান করেছে এখন কথিত আহলে হাদীসরা। আশ্চর্যের বিষয় হল এমন কোন কথা ফাতওয়ায়ে রশিদিয়াতে কোনদিন ছিলও না, আজোও নেই। বরং ঠিক উল্টো কথা আছে ফাতওয়ায়ে রশিদিয়াতে।

খোদ ফাতওয়ায়ে রশিদিয়াতে এ ব্যাপারে রশিদ আহমাদ গঙ্গুহী (রহঃ) কে প্রশ্ন করা হয়েছে আর এর উত্তর হযরত নিজে লিখেছেন। { দেখতে পারেন ফাতওয়া রশিদিয়া-১৮ } ফাতওয়ায়ে রশিদিয়া থেকে মূল উর্দুর অনুবাদ দিচ্ছি প্রশ্ন ও উত্তরের প্রশ্ন- উলামায়ে কিরাম কি বলেন এ ব্যাপারে যে, আল্লাহ তায়ালা মিথ্যা বলার গুনে গুনান্বিত কি না? আর আল্লাহ তায়ালা মিথ্যা বলেন কি না? আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে এটা ধারণা করে যে, আল্লাহ তায়ালা মিথ্যা বলেন সে কেমন? দয়া করে বর্ণনা করুন এবং সওয়াবের অধিকারী হোন। উত্তর - রশিদ আহমাদ গঙ্গুহী রহঃ এর নিজের লেখা আল্লাহ তায়ালার সত্বা পবিত্র ও দোষমুক্ত। আল্লাহ তায়ালাকে মিথ্যার গুনে গুনান্বিত করা হবে? নাউজুবিল্লাহ! আল্লাহ তায়ালার কথায় কস্মিনকালেও মিথ্যার সন্দেহও করা যায় না। আল্লাহ তায়ালা বলেন-ومن اصدق من الله قيلا তথা আল্লাহর চেয়ে সত্য কে বেশি বলে? যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে এ আক্বিাদা রাখে, অথবা মুখে বলে সে নিজেই মিথ্যা বলে।

সে ব্যক্তি সুনিশ্চিত কাফের। অভিশপ্ত। আর কুরআন ও হাদীস এবং ইজমায়ে উম্মতের বিরোধী। এ ব্যক্তি কিছুতেই মুসলমান নয়। وَتَعَالَى عَمَّا يَقُولُونَ عُلُوًّا كَبِيرًاতথা জালেমরা যা কিছু বলে আল্লাহ তায়ালা এর চেয়ে অনেক উঁচুতে অবস্থান করেন।

{ফাতওয়ায়ে রশিদিয়া-১৮} এ হল রশিদ আহমাদ গঙ্গুহী (রহঃ) এর নিজের ফাতওয়া এ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে। যা ফাতওয়ায়ে রশিদিয়াতে স্পষ্টই বিদ্যমান আছে। আপনারা নিজেরাই ফাতওয়ায়ে রশিদিয়া খুলে দেখতে পারেন। এরপরও যেসব অসৎ লোক দ্বীন প্রচারের নামে মিথ্যাচার প্রচার করে বেড়াচ্ছে এ পৃথিবী বিখ্যাত বুযুর্গ ও স্বীকৃত আলেমের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষেত্রে শুধু পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতই পেশ করছি- لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ } [آل عمران: 61] অনুবাদ-মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর অভিশম্পাত। {সূরা আলে ইমরান-৬১} والله اعلم بالصواب উত্তর লিখনে লুৎফুর রহমান ফরায়েজী সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা প্রশ্নের জবাবটি এখান থেকে নেওয়া ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।