আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রীকে হিলারির চিঠি
গ্রামীণ ব্যাংকের অখণ্ডতা টিকিয়ে রাখার দাবি
গ্রামীণ ব্যাংকের অখণ্ডতা টিকিয়ে রাখা এবং এর অধিভুক্ত কোম্পানিগুলোর যেকোনো পর্যালোচনা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা একটি চিঠিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানিয়েছেন। আজ বুধবার হিলারির এ চিঠিটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হিলারি ক্লিনটনের বাংলাদেশ সফরকে সফল উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এ সফরের আলোচনার বিষয়াদি নিয়ে কথা বলতেই মজিনা আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় তাঁরা অংশীদারি সংলাপের পরবর্তী ধাপ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) এবং মানব পাচারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
দীপু মনিকে দেওয়া হিলারির চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হিলারি তাঁর সফরে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের দেওয়া উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ ছাড়া চিঠিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি তার ৮০ লাখেরও বেশি জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারীদের জীবনে যে প্রত্যাশার জন্ম দিয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁর ধারণা অতি উচ্চ।
চিঠিতে হিলারি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য একটি কার্যকর উন্নয়ন হাতিয়ার হিসেবে সৃজনশীল সুশাসন এবং মালিকানা কাঠামোসহ ব্যাংকটির অখণ্ডতা টিকিয়ে রাখার নিশ্চয়তা দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রচেষ্টা চালাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা করতে গত মাসে একটি কমিশন গঠন করে সরকার। প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়ন করবে এই কমিশন।
কমিশন আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে। কমিশনের কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিশন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এর প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি, দুর্বলতা ও প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করবে। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকে সুশাসন নিশ্চিত করা, বিশেষ করে ব্যবস্থাপনাগত জবাবদিহি এবং পরিচালনগত স্বচ্ছতার বিষয়ে উপায় বের করার সুপারিশ করবে এই কমিশন। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে এযাবত্ যেসব প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি ও এন্টারপ্রাইজ গঠিত হয়েছে সেগুলোর উদ্দেশ্য, আইনি প্রক্রিয়া এবং পরিচালনা বিষয়ে পর্যালোচনা করবে কমিশন।
হিলারি ক্লিনটন শেখ হাসিনাকে লেখা তাঁর চিঠিতে এই কমিশনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের অধিভুক্ত কোম্পানিগুলোর যেকোনো পর্যালোচনা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হবে বলে তিনি সরকারের কাছে আশা করেন।
চিঠি হস্তান্তরকালে মজিনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারি সংলাপ চুক্তির পরবর্তী ধাপ হিসেবে ওয়াশিংটনে এ-সংক্রান্ত প্রথম সংলাপটি অনুষ্ঠানের যে প্রস্তুতি চলছে, সে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আগামী অধিবেশনের শেষভাগে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ’
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। একপর্যায়ে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে সরকার।
এসব বিষয় নিয়ে মার্কিন সরকার বরাবরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ঢাকা সফরে এসেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি তাঁর জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেন। হিলারি গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্যকে খাটো না করতে সরকারকে সতর্কও করে দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক অন্যতম সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। হিলারি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বিরোধের বিষয়টি আমি ওয়াশিংটন থেকেই নজর রাখছি।
আমি শুধু আশা করতে পারি, এমন কোনো কিছু করা হবে না, যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য খর্বিত হয়। ’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর কাজকে সম্মান করি। আমি আশা করি, তাঁর কাজ অব্যাহত থাকবে এবং সরকারের কোনো কর্মকাণ্ডে তা ব্যাহত হবে না। যদি তা হয়, তাহলে তা হবে দুঃখজনক। ’
Click This Link
******************************
পরিস্থিতি যে সত্যিই গুরুতর এবং ভয়ংকর তা হিলারীর চিঠিই প্রমাণ করে।
একই সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজীনার হুশিয়ারী বলে দিচ্ছে এখন যুক্তরাষ্ট্র ডঃ ইউনুসকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। এতদিন প্রণব বাবু ও দিল্লী ট্যাকেল দিলেও এখন তারাও অসহায়। অনেকেই বলেছিল কানকো-ফিলিপসকে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গ্যাস ব্লক লিজ দেওয়ার কারণও ডঃ ইউনুস। তার মানে দাড়াল হাসিনা নিজ ব্যাক্তিগত আক্রোশের জন্য দেশের গ্যাস খনিও মার্কিনিদের কাছে আমাদের ক্ষতিকারক শর্তে দিয়েছে। এখন গার্মেন্টসকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তারপরেও হাসিনার কোন হুশ হচ্ছে বলে মনে হয় না কারণ গত মাসে হিলারীর সফরে গ্রামীণ বিষয়ে উল্লেখ হলেও তারা আমলে নেয়নি। আর ব্লগে হাসিনার চামচারা উল্টা যুক্তরাষ্ট্রকে যাতা বলছেন। অথচ দেশের ৬০% গার্মেন্টস এবং মোট রপ্তানীর ৪০% মার্কিন মুল্লুকে যায় সেটা বিবেচনায় নিতে নারাজ। তাদের কথা হল দেশ জাহান্নামের চৌরাস্তায় যাক হাসিনা সবার উপরে থাকবে!
এর আগের পোষ্টঃ
হাসিনার ডঃ ইউনুস বিদ্বেষের জের! বাংলাদেশের গার্মেন্টস রপ্তানি হুমকির মুখে পড়তে পারেঃ ড্যান মজীনা
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।