আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রবাস জীবনে চুয়েটের যে ২০টি দিন আমার স্মৃতিতে চির অম্লান!!!!!!!!!!!!!!!!!!

মনে হয় এই তো সেদিনের কথা । কিন্তু হয়ে গেল ২টি বছর। সত্যিই সময় কখনও থেমে থাকে না । কোন ফ্রেমে আটকানো যায় না । মনে হয় এই তো সেদিন এডমিশন টেস্টের রেজাল্ট হল।

চুয়েটে ব্যাগ নিয়ে ভর্তি হতে গেলাম ইইই তে। ভর্তিও হলাম মনে অনেক খুশি নিয়ে। সপ্ন দেখতে লাগ লাম চার বছর পর হাটুভাঙ্গা বা ভাল যাই হোক একজন ইঞ্জিনিয়ার হব। কিন্তু কখনও ভাবি নি আমার এই চুয়েট জীবন হবে এত ক্ষনস্থায়ী । ভাবিনি কখনও ক্লাস শুরুর কয়দিন যেতে না যেতেই চুয়েট জীবনের ইতি টানতে হবে।

আসলে বাস্তব বড় কঠিন এক জিনিস। যা সবাইকে ফেইস করতে হয় । যাই হোক কেন আমাকে চুয়েট জীবনের ইতি টানতে হল সে কথাটি বলে নেই – চুয়েটে ক্লাস শুরুর ২০ দিন পরেই আমার একটি ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ হয়ে যায় মালায়শিয়ায় । তাই সপ্নের চুয়েট ছেড়ে চলে আসি মালায়শিয়ায় । যদিও ১ম ৩-৪ টা দিন চুয়েটে খুব বোরিং লাগছিল কিন্তু এক সপ্তাহ পর থেকেই ভাল লাগতে শুরু করেছিল ।

পেয়েও গিয়েছিলাম মনের মত বেশ কয়েকটি বন্ধু । আর আড্ডা মারাও শুরু হয়ে গেয়াছিল। সিট পেয়েছিলাম নিউ হলের এক্সটেনশান এর ১০ নম্বর রুমে। রুমটা ছিল গণরুম। এক্সটেনশান হল থেকে মেইন হলে গিয়ে খেয়ে আসতে খারাপ লাগতো না ।

ভালই লাগতো । চুয়েটের নিউ হল চুয়েটের বিশাল মাঠ, সামনেই পাহাড়তলি বাজার, হলের খুব কাছেই একাডেমিক ভবন সব মিলিয়ে চুয়েট ক্যাম্পাস আমার হ্রদয়ে এক বিশাল স্মৃতির দাগ কেটেছে। আমার এই প্রবাস জীবনে চুয়েটকে আমি কতটুকু মিস করি তা বলে বোঝাতে পারব না। এই সেই মাঠ যেখানে ভর্তি হবার পরদিনেই ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বড় ভাইয়াদের র্যারগ খাওয়ার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ভ্যাগ্যিস বেচে গিয়েছিলাম।

মনে পড়ে একদিন রাত ৯-১০ টার দিকে লেডিস হলের পাশে মাঠে বসে তানভীর আর আশরাফুলদের সাথে আড্ডা দিয়ে ভিষন মজা পেয়েছিলাম । সেই আড্ডার কথাগুলি আমার কানে এখনও বাজে । চুয়েট লাইফের ২০ দিনের মধ্যে অন্যতম ছিল ২ টা দিন। বড় ভাইয়াদের সাথে তবলিগ করতে গিয়েছিলাম কাপ্তাই । এই সুযোগে আকা-বাকা রাস্তা, উচূ-নিচূ পাহাড়ে ঘেরা কাইপ্তাইটাও দেখা হয়ে গিয়েছিল ।

তবলিগ করতে গেলেও ঐ ২ টা দিন ছিল খুব আনন্দেরেই ছিল। যাই হোক ভুলবনা কোন দিন এই ২ টা দিনের কথা । এবার আসি আমার ক্লাসের কথা নিয়ে। একাডেমিক ভবন প্রশাসনিক ভবনের পাশের ভবনেই ০৯ ব্যাচের ক্লাস হত । সানাউল্লাহ স্যারকে তো আমার অসাধারন লাগত ।

আর একজন অবিবাহিত মেডাম ছিল, নামটা ভুলে গেলাম তিনি একটি থিউরিটিক্যাল সাব্জেক্ট এর ক্লাস নিতেন , উনাকে যা লাগত না আমার কাছে তা আর নাই বা বললাম । এত আননন্দের মাঝেই হঠাৎ করে বিদায় ঘণ্টা বেঝে ঊঠেছিল। সবচেয়ে কষ্টের দিনটা ছিল সেইদিন,যে দিন চুয়েট কে ছেড়ে আসব । সত্যিই অনেক কষ্টের ছিল । গোলচত্বরটাতে সার্টিফিকেট গুলি হাতে নিয়ে অনেকক্ষন বসেছিলাম ।

আসতে কিছুতেই ইচ্ছা হচ্ছিল না । আমার বিশ্বাসেই হতে ছিল না সত্যিই আমি চুয়েটকে ছেড়ে ছলে যাচ্ছি । ঐ দিন কেঁদেছিলাম মন্টা ভীষণ খারাপ করে । এত কষ্ট করে চুয়েটে চান্স পেয়ে না পড়েই চলে যাচ্ছি । বড্ড বেশি কষ্ট হচ্ছিল মিজান, সম্রাট, তোহিদুল্লাহ আর রুমমেট গুলি কে ছেড়ে আসতে ।

আমার এক ফ্রেন্ড আমাকে বার বার উঠতে বলছিল কিন্তু কেন জানি আমি গোলচত্বরটা থেকে উঠতে পারছিলাম না । হ্রদয় কেড়ে নেওয়া সেই গোল চত্বর সবকিছু নিয়ে যখন চুয়েটের গেট থেকে বের হলাম তখন বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। অনেক কষ্ট , অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন । আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি চুয়েট, অনেক অনেক । চুয়েট গেট I LOVE YOU VERY MUCH. এখনও চূয়েটের কোন সাফ্যলের কথা শুনলে বা পেপারে পড়লে আমার বুকটা আননন্দে ভরে যায় ।

প্রবাসে সবার সাথে গৌরব করে বলি আমি এই চুয়েটের ছাত্র ছিলাম । চুয়েট নিয়ে যে কোন লেখাই পেপারে আসলে আমি সেইভ করে রাখি । কেন জানি মনে হয় আমি আজ চুয়েটের স্টুডেন্ট । I MISS YOU CUET. তোমার সাথে কাটানো ২০ টি দিন আমার হ্রদয়ে চির অম্লান হয়ে থাকবে । সপ্ন দেখি চুয়েট একদিন বিশ্ব র্যাংমকিং এ খুব কাছের একটি UNIVERSITY হবে ।

গুডলাক চুয়েট, গুডলাক চুয়ুটের সকল স্টুডেন্টকে । ভুলবনা কোনদিন তোমায় । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।