যখন আমি হবো শুধুই স্মৃতি, আমার এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা গুলো সবার সামনে আমাকে আরো স্মৃতিময় করে তুলবে।
কিছুনা বাংলা শব্দটার ইংরেজী করলে দাঁড়ায় nothing!
এই nothing নিয়েই বিথ্যাত কয়েকজন মনীষীর জীবনকাহিনিতে উঠে আসা কতক মজার ঘটনা নিয়েই তৈরি।
To Define Nothing
স্যার আইজাক নিউটন:
প্রচলিত ঘটনা এটাই যে নিউটন স্যার ছোটবেলায় আপেল গাছের নিচে বসে ছিলেন এবং সেই সময় তার মাথায় আপেল ভেঙে পড়ায় পরবর্তীতে অভিকর্ষজ বল বা ত্বরণ আবিষ্কার করেন। কিন্তু এর আগে আরও একটি কাহিনি ঘটে যা কিনা নিউটন এবং তাঁর মা হান্নাহ নিউটন (Hannah Newton) এর মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকার কথা ছিল।
Sir Isaac Newton's Theory of Gravity and the Falling Apple
কিন্তু না, তা আর থাকলো কই।
এখন সবাই তা জেনে যাবে।
তার মাথায় আপেল ভেঙে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি মাথায় ব্যথা পান। একারণে তিনি আপেলটি নিয়ে মায়ের কাছে নালিশ দিতে যান যে এটা তার মাথার উপর পড়েছে। মা কি বলবেন বুঝতে পারেন না হঠাৎ করে। তিনি সান্তনা দেবার জন্য নিউটন কে বলেন যে, 'ও কিছুনা বাবা।
এখনি ঠিক হয়ে যাবে। "
কিন্তু নাছোড়বান্দা নিউটন তার মায়ের আপেলের প্রতি এই পক্ষপাতিত্ব মেনে নিতে পারলেন না। যার ফলশ্রুতিতে আপেলটি নিয়ে ভাবতে ভাবতে তিনি বেড়িয়ে যান যে কেন সেটা তার ওপর পড়ল। তার কি দোষ থাকতে পারে।
সারাদিন রাত ভেবে ভেবে তার সময় কাটতে লাগল।
এর মধ্যে আপেলটাতে পচন ধরতে শুরু করলো। কিন্তু নিউটন তবু ওটাকে কাছছাড়া করতে রাজি হলেন না।
পচন ধরে যখন আপেলটা দুর্গন্ধ ছড়ানো শুরু করলো তখন ওটাকে নিয়ে বাইরে এলেন নিউটন। রেগেমেগে একটা বড় গাছ একটু দূরে দেখতে পেয়ে তার সবচাইতে উচু ডালটাতে ছুড়ে মারলেন। কিন্তু তার নিশানা ফসকে গিয়ে গাছের ডালের পাশে দিয়ে উরে গেল।
তাড়াতাড়ি তিনি গিয়ে দেখতে পান যে আপেলটার শনির দশা হয়েছে। একথম থেতলেই গেছে। কিন্তু তিনি তো আর আপেলের দশা দেখার জন্য সেখানে যাননি তখন। তার চোখের সামনে যে প্যারাবলিক আকারে আপেলটা ছুটে গেল সেটাতেই আকৃষ্ট হয়ে তার ছুড়ে মারা আপেলটা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি।
এরপর মাপজোক আর সমীকরণ নিয়ে বসে পড়লেন বিজ্ঞানী।
আবিষ্কৃত হলো অভিকর্ষজ ত্বরণ। "কিছুনা" শব্দটার জন্য!
অধ্যাপক হুমায়ূন আহমেদ
বর্ষাকাল।
একবার নিজ বাড়ি নূহাশ পল্লীতে।
আজি ঝড়ো ঝড়ো মুখরো বাদল দিনে
বিকাল বেলা ঝুম বৃষ্টিতে বাসার সামনেটাতে একদম পানি জমে চুপচুপে অবস্থা। সন্ধ্যা থেকে আবার আকাশ একদম পরিষ্কার।
চাদের আলোয় বৃষ্টির জমে থাকা পানিকে একদম অপার্থিব লাগছে। এই বৃষ্টি+চাদ এর ব্যাপার ঘটলে তো লেখকদের জন্য পোয়াবারো। হুমায়ূন স্যার এই সুযোগটা হাতছাড়া করলেন না। কাগজ কলম নিয়ে বাইরে এসে সোফায় বসে পড়লেন নতুন একটা উপন্যাস শুরু করবেন ভেবে। কি একটা কারণে ঢাকা থেকে আসার সময় কয়েকটা প্লাস্টিকের ব্যাঙ নিয়ে এসেছিলেন।
সেগুলো বাসার ভিতরে রাখা ছিল যেখানে তার স্ত্রী শাওন ঘুমাচ্ছিলেন। তিনি ঘুম ভেঙে দেখতে পেলেন যে কয়েকটা ব্যাঙ লাফাচ্ছে তার বিছানার আশেপাশে। চমকে গেলেন। চিৎকার শুরু করলেন। হুমায়ূন আহমেদ তো বুঝতেই পারলেন যে কি দেখে শাওন চেচাচ্ছে।
কিন্তু সোফায় বসেই উত্তর দিলেন যে "ওগুলো কিছুনা, একটু পরেই চলে যাবে, তোমার কোনো ক্ষতি করবেনা। "
শাওন আশ্বস্থ হতে পারলেন না। হবেন কি করে! ওগুলো যে সত্যিই ব্যাঙ এর মতো দেখতে ছিল! বর্ষাকাল বলে কথা।
একটা ছিল সোনার কন্যা
কিছুক্ষণ পর শাওন নিশ্চিত হলেন যে এগুলো আসলেই ব্যাঙ। আবার চিৎকার শুরু করে বাড়ি মাথায় তুললেন তিনি।
এবার হুমায়ূন স্যার নিজেই উঠে এলেন। এসে দেখেন যে আসলেই তো ব্যাঙ। এরপর সবগুলোকে ঘর থেকে বিদায় করে দেয়ার পর তার নিজের আনা প্লাস্টিকের ব্যাঙগুলোকে খুজলেন। কোথাও দেখা পেলেন না। শেষে শাওনকে খুলে বলতেই বাধ্য হলেন ব্যাপারটা।
দেখেছে কিনা প্লাস্টিকের ব্যাঙগুলো। শাওন বললেন, ওমা তাই নাকি। আমি তো ওগুলোকে জানালার বাইরের ফায়ারপ্লেসে ফেলে দিলাম তখন!!"
এখানেও প্রভাবক কিছুনা!
প্রথমেই এই লেখাটার(!) আবেগীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আনিশা আপুর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সে কিভাবে আমাকে আবেগীয় দিকনির্দেশনাগুলো দিয়েছে তা পোস্ট শেষে বর্ণনা করে দিচ্ছি।
লিখতে গিয়ে ইন্টারনেটে প্রচুর খাটাখাটনি করতে হয়েছে।
টাইপিং স্পিড এখনো এত কম যে যত বেশী লিখবো ভেবেছিলাম অর্ধেক লিখতে পারলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।