সুইডেনে কর্মরত বাংলাদেশী গবেষক ড. এম সিরাজুল ইসলাম (৩৮) সুইডিশ একাডেমি অব ইনফরমেশন সিস্টেমস (sisa-net.se) থেকে ইনফোরম্যাটিক্স (তথ্য ব্যবস্থাপনা /পদ্ধতি ) বিষয়ে ২০১১ শিক্ষাবর্ষের “বরিয়ে লেন্গেফর্স দ্বিতীয় সেরা ডক্টরাল থিসিস (পিএইচডি গবেষণাপত্র) পুরস্কার ( Börje Langeforspriset)” অর্জন করেন । পুরস্কারটি গত ৯ মে সুইডেনের লিনশপিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেয়া হয়। ড. সিরাজের গবেষণাপত্রের শিরোনাম হলো "সংযুক্তহীনদের সংযুক্তকরণ দ্বারা সুযোগ নির্মাণ : বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য মুঠোফোন ভিত্তিক কৃষি বাজার তথ্য সেবা প্রদান” (Creating Opportunity by Connecting the Unconnected: Deploying Mobile Phone based Agriculture Market Information Service for Farmers in Bangladesh) |
সুইডিশ একাডেমি অব ইনফরমেশন সিস্টেমস (sisa-net.se), সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেতৃস্থানীয় শিক্ষাবিদ এবং গবেষকদের সমম্বয়ে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান যার প্রধান উদ্দেশ হলো সুইডেনে তথ্য বিজ্ঞান, তথ্য পদ্ধতি ও তথ্য-উপাত্ত ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উন্নতর গবেষণা ও শিক্ষার সমন্বয়, প্রচার ও উত্সাহদান করা । 'বরিয়ে লেন্গেফর্স সেরা পিএইচডি গবেষণাপত্র পুরস্কার' SISA প্রদত্ত একটি মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি যা প্রতিবছর অভিজ্ঞ সুইডিশ শিক্ষাবিদদের সমম্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ নির্বাচকমন্ডলীর মাধ্যমে সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পূর্ববছরে সম্পাদিত পিএইচডি গবেষণাপত্রগুলো থেকে সেরা গবেষণাপত্রটি নির্বাচন করা হয়ে থাকে । এই পুরস্কারটির নামকরণ করা হয় সুইডেনের প্রথিতযশা কম্পিউটার প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী অধ্যাপক বরিয়ে লেন্গেফর্সের (১৯১৫ - ২০০৯) স্মরণে যিনি বর্তমান পৃথিবীতে ‘তথ্য-পদ্ধতি উন্নয়ন’ (Information systems development) গবেষণাকে বিজ্ঞান শিক্ষায় পরিনত করতে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন।
ড. সিরাজের পিএইচডি গবেষণাপত্রকে দ্বিতীয় সেরা গবেষণাপত্র হিসাবে নির্বাচন করার কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয় যে - "এই গবেষণাপত্র একটি ডিজাইন-ভিত্তিক বাস্তব কর্ম গবেষণা (design-oriented action research) প্রকল্প, যার প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুঠোফোন প্রযুক্তি গ্রহনের মাধ্যমে টেকসই সামাজিক প্রভাব সৃষ্টি করা । আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন প্রচেষ্টার বিশেষ লক্ষনীয় বিষয়টি হলো যে এই গবেষণাপত্রটি চমত্কারভাবে বর্ণনা করেছে কিভাবে 'তথ্য-প্রযুক্তি বিজ্ঞান' বিষয়ক গবেষণা এবং এর উদ্ভাবনী ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত পেশাজীবিদের অবস্থান মজবুত করা যায় । প্রকল্পটি একটি সুন্দর-পরিকল্পনায় সম্পাদিত হয়েছে যা এই গবেষণাপত্রে ব্যাপক এবং বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে । বিশেষ করে, এই গবেষণাপত্রটি দেখিয়েছে কিভাবে একটি গবেষণা প্রকল্পকে কিছু বাস্তব ও তাত্ত্বিক বিষয়গুলোর ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে তার অভীষ্ঠ লক্ষে পৌছানো যায় । গবেষণাপত্রটির মূল উপজীব্য বিষয় এবং এর সাথে সংযুক্ত বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত গবেষণালব্দ ফলাফলগুলো শুধুই যে একটি বিশেষ অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ তা নয়, এগুলো পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলেও প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা রাখবে বলে আশা করা যেতে পারে।
“
ড. সিরাজ বর্তমানে সুইডেনের অরেব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফোরম্যাটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং 'উন্নয়নের জন্য তথ্য-প্রযুক্তি' (ICT4D) বিষয়ে গবেষণারত স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্য গঠিত একটি নামকরা আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের (IPID) সমম্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন । এছাড়াও তিনি অরেব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের 'উন্নয়নের জন্য তথ্য-প্রযুক্তি (ICT4D)' গবেষণা দলের সদস্য । ড. সিরাজের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকী ও সম্মেলনে ICT4D এবং eGovernment (সয়ংক্রিয় সরকার ব্যবস্থাপনা ) সম্পর্কিত প্রকাশনা রয়েছে । তিনি সিঙ্গাপুরে অবস্থিত নানইয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ICT4D সম্পর্কিত গবেষণাদলের (SIRCA) একজন ফেলো ।
ড. সিরাজের জম্মস্থান নাটোর জেলার স্টেশন-বড়গাছায় এবং তিনি সেখানকার বিশিষ্ট অষুধ ব্যবসায়ী মরহুম রফিকুল ইসলামের কনিষ্ঠ পুত্র।
তথ্যসূত্র-
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।