তাশফী মাহমুদ
নাটের গুরু এই ব্যক্তি শুধু বিএনপি নয়, অনেক দল ঘুরে আবার বিএনপির ঘাড়েই চেপেছেন। তিনি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম পোস্টমাস্টার জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান নিহত হন এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন।
১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়।
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১-এ মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কম্পানীগন্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। "ডিগবাজি বিশারদ" নামে উনি বিপুল্ভাব বিখ্যাত।
তার খায়েস, তিনি হয় বিএনপির মহাসচিব হবেন, নয়তো আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে সরিয়ে রেখে বেশ কিছু নেতাকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিনি হবেন আওয়ামী লীগের বি টিম। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ ওই নেতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সুসর্ম্পক রয়েছে। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই বিএনপির ওই আইনজীবী নেতা কাজ করছেন বলে মনে করছেন সাধারণ নেতা-কর্মীদের অধিকাংশ।
মওদুদ এর কূটকৌশল আর ষড়যন্ত্রের খপ্পরে পড়ে খাবি খাচ্ছে বিএনপি।
টাকা কাচ্ছে আওয়ামী লীগ থেকে আর "পাছাঁ মারা" দিচ্ছে বিনপিকে। এই নেতার কারণেই দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাসভবন ছাড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। সম্প্রতি সিনিয়র নেতাদের কারান্তরীণ হওয়ার পেছনেও নাকি যথেষ্ট কলকাঠি নেড়েছেন তিনি। আগামী ১১ জুনের আগে কারান্তরীণ নেতারা যাতে কিছুতেই মুক্তি না পান সে ব্যবস্থাও তিনি করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। অষ্টম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়নে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী নিযুক্ত হন।
তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর স্থায়ী কমিটির সদস্য। একই মামলার আসামি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জামিন পেলেও অন্য আসামিদের জামিন না হওয়ার রহস্য কি? ব্যারিস্টার মওদুদ এর ষড়যন্ত্রের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি নিজের লোক খোকনকে জেলে যাওয়া থেকে রক্ষা করলেও অন্য নেতাদের জেলে নিতেই আঁতাত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘বিএনপির ভেতরে কি হচ্ছে সব কিছুই দলের প্রধান খালেদা জিয়া জানেন। তার হাত-পা বাঁধা বলেই তিনি মুখ খুলছেন না।
প্রথমত, একদিকে তার দুই সন্তান অসুস্থ অবস্থায় বিদেশে অবস্থান করছেন, দ্বিতীয়ত, সরকারি দলের রোষানলের কারণে পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার। তৃতীয়ত, সিনিয়র নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় খালেদ জিয়া বেকায়দায় আছেন। ’’
এছাড়া মাঠ পর্যায়ের নেতকর্মীদের মধ্যে পদ-পদবী পাওয়া না পাওয়া নিয়ে রয়েছে চরম অসন্তোষ। দলের বিশ্বস্ত নেতার অভাব খালেদা জিয়াকে তাড়া করে ফিরছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।