আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা মাকে সারা বছর ভালবাসবো ।

১৯১১ সাল হতে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালন হয়ে আসছে মা দিবস হিসেবে । সর্ব প্রথম ১৯১১ সালের মে মাসে আমেরিকা জুড়ে পালিত হয় মা দিবস । আমেরিকার সীমানা ছাড়িয়ে মা দিবসটি সর্বজনীন করে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে আসেন আমেরিকার সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্ড । মা দিবসকে রাষ্ট্রীয় মর্ষাদা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৮৭২ সালে জুলিয়া ওয়ার্ড প্রচুর লেখালেখি শুরু করেন এবং একই বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার নিজের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে জুলিযা ওয়ার্ড নিজে মা দিবস পালন করেন । পরিশেষে ১৯১৪ সালে আমেরিকার ততকালীন প্রেসিডেন্ট উর্ডো উইলসন মা দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন ।

পরে পৃথিবীর অনন্য দেশে মা দিবস পালন করা শুরু হয় । উদযাপনের জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বড়দিন এবং ভালোবাসা দিবসের পরই মা দিবসের অবস্হান । সাধারনত সাদা কারনেশন ফুলকে মা দিবসের প্রতীক হিসেবে ধরা হয় । আমরা প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করে থাকি । বাংলা ভাষায় সবচেয়ে কম শব্দ দিয়ে লেখা একটা অর্থ মা ।

মা জিনিস সকল কিছুর ঊর্ধ্বে । কথিত আছে যে মা কথাটি ছোট্র অতি কিন্ত জেনো ভাই ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই । পৃথিবীতে যার মা নেই সে কষ্টটা নীরবে উপলব্ধি করতে পারেন । পৃথিবীতে ছেলে-মেয়েরা মায়ের সাথে সব সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করতে পারে । যা আর কারো সাথে ভাগ করা যায় না ।

এতোটা নিবির সম্পর্ক আর অন্য কারো সাথে করা সম্ভব না । প্রত্যেক মা তার সন্তানকে অনেক আদর স্নেহ দিয়ে মানুষ করেন । মার স্নেহই সন্তানরা বেশি পেয়ে থাকেন । কারন পিতা সর্বদাই তার কর্মস্হল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন । কিন্ত মা বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেন তার নিজ সংসারে ।

মা-বাবা বৃদ্ধ হলে আমরা যেন তাদেরকে ভুলে না যাই, এই প্রার্থনা সৃষ্টিকর্তার কাছে । আমাদের অতি চেনা মাকড়শা । অতি তুচ্ছ একটা প্রানী । কিন্তু একটি মা মাকড়শা তার সন্তানদের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেয় । আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা যে, প্রতিমুহূর্তে আমাদের অজান্তেই কোথাও না কোথাও ঘটছে একটি সত্যি ও আত্নত্যাগের ঘটনা ।

অনেকের কাছেই মাকড়শা মানেই ভয়ের বা ঘৃনার কিছু একটা । কিন্ত এই তুচ্ছ ভয়ংকর মাকড়শার মায়ের কাহিনী যে কাইকে অবাক করে দেবে । মাকড়শার ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় । মা মাকড়শা সেই ডিম নিজের দেহে বহন করে বাচ্চা বের না হওয়া পর্যন্ত । প্রকৃতির নিয়মে এই ডিম ফুটতে শুরু করে ।

নতুন প্রানের স্পন্দন দেখা যায় ডিমের ভেতর । এসেছে নতুন শিশু তাকে ছেড়ে দিতে হবে কিন্ত খাদ্য কোথায় ? ক্ষুধার জ্বালায় ছোট ছোট মাকড়শা বাচ্চারা মায়ের দেহই খেতে শুরু করে । সন্তানের মুখ চেয়ে মা নীরবে হজম করে সব কষ্ট, সব যন্ত্রনা । এক সময় মায়ের পুরো দেহই চলে যায় সন্তানের পেটে । মৃত মা পড়ে থাকে ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে ।

সন্তানেরা নতুন পৃথিবীর দিকে হাটতে থাকে । এই হলো মাকড়শার মায়ের আত্নত্যাগের কাহিনী । আমাদের মায়েরা মাকড়শার মত নিজেদের দেহকে সন্তানের খাদ্য বানায় না সত্য, কিন্ত সন্তান জন্মের আগ থেকে পুরো জীবন সন্তানের জন্য যেভাবে উৎসর্গ করেন তা মাকড়শার চেয়ে কোন অংশে কম নয় । কিন্ত এসব কিছুর জন্য তিনি কখনো কোন প্রতিদানের আশা করেন না । তিনি নিশর্ত ভাবেই নিজের সন্তানকে ভালোবেসে যান ।

মায়ের মতো এমন মমতাময়ী আর কে আছে এই পৃথিবীতে । আজ আন্তর্জাতিক মা দিবস । বিশ্বের অনেক দেশে জাকজমকের সাথে পালিত হবে এই দিবসটি । স্বল্প পরিসরে হলেও আমাদের দেশেও ইদানিং এই দিবসটি পালিত হচ্ছে । আমরা তো সব ক্ষেত্রেই পশ্চিমা বিশ্বকে অনুকরন করি ।

এই ক্ষেত্রে যেন পশ্চিমা বিশ্বে মত শুধু মাত্র বছরে একদিন মা দিবসে মাকে নিয়ে হইচই না করে সারা বছরই আমাদের মাকে খুশি রাখার চেষ্টা করি । মা দিবস বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ প্রতিদিন বাংলার প্রতিটি ঘরে । ধন্যবাদ । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।