আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে কিছু অশালীন ১৮+ নামক বস্তাপচা ফেসবুক পেজ। এসব পেজ চালাচ্ছে কিছু বস্তির ছেলে পেলে। এসব অশ্লীল নোংরা পেজ মেয়েদের অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গী আর পর্ণ সাইটের ছবি ডাউনলোড করে পেজে দিয়ে ১ লাইক= ১ থাপ্পড় এভাবে পোস্ট দিয়ে যেন মেয়েদের অপমান করে দেশ উদ্ধারে নেমেছে !! আর কিছু ফ্যান(ভুদাই!!) গনহারে লাইক দিয়ে যেন ঐ মেয়েকে হেদায়েত দিয়া ফেলতেছে !! যারা লাইক দিচ্ছে তারাও বুঝতেছেও না, তারাও অশ্লীলতার প্রচারক হিসেবেই কাজ করছে। কিভাবে জানেন??? আপনারা বেশিরভাগ ফেসবুক ইউজাররাই জানেন না, ফেসবুকে আপনারা যে ছবিই লাইক করুন না কেন, তা অন্য ফ্রেন্ডদের হোমপেজে চলে যায়, যে আপনি ঐ ছবিতে লাইক/ কমেন্ট করেছেন। এতে আজে বাজে পেজগুলোর প্রসার আরও বৃদ্ধি পায়।
। এতে আপনার ক্ষতি মূলত দুটি। এক তো অশ্লীল পেজের প্রচারক হিসেবে গুনাহরভাগী হলেন, অন্য দিকে আপনার ফ্রেন্ড লিস্ট এ থাকা অন্য মানুষগুলোর কাছে আপনার সম্পর্কে খুবই নিম্নমানের একটা ধারনা চলে যায়। ।
(মুল পোস্টটি দেখতে Click This Link)
তবে অবাক করা বিষয় হলো, এসব পেজে দেওয়া প্রায় সবগুলো ছবিই ইন্ডিয়ান মানুষের, যা বাংলাদেশী বলে চালিয়ে দিচ্ছে !! আমরা সবাই জানি, ইন্ডিয়ানদের লাইফ স্টাইল কেমন।
। ওরা অনেক খোলা-মেলা চলাফেরা করে, কিন্তু আমাদের দেশে এখনো অতটা বাজে অবস্থায় যায় নি। তবে এসব পেজের অশ্লীল পোস্টের কল্যাণে সে অবস্থায় যেতে খুব বেশিদিন লাগবেও না। মিথ্যার এসব প্রোপাগান্ডা আর কতো দিন?? কতো দিন এসব লাইক ব্যাবসা??
ওইসব পেজের এডমিনদের একটা প্রশ্ন করতে চাই, “আচ্ছা আপনারা কি আমাদের পরিবারের মাঝে বসে একটু ফেসবুক ব্যাবহার ও করতে দিবেন না?? “
এই তো সেদিন বাবাকে একটা লেখা দেখাবো বলে ল্যাপটপের সামনে বসালাম। কিছুক্ষণ পর হুট করে “ওমক লাইক ওমক পেজের ছবি ”- এভাবে একটা বাজে ছবি হোমপেজে চলে আসলো।
আমার সম্পর্কে বাবার খুব বাজে একটা ধারনা চলে আসলো। অথচ ঐ পেজ কোন দিন লাইক দেওয়া তো দূরের কথা, ঐ দিনের আগে চোখেও দেখি নাই।
আরেকদিন বোন লন্ডনে থাকে বলে, ফেসবুকে ছবি আপলোড দেওয়ার পর আম্মাকে দেখাচ্ছিলাম। হটাত করে একটু হোমপেজে গেলাম আর একটু নিচে নামতেই চরম বাজে একটা অবস্থার সম্মুখীন হলাম। আম্মার তখন এটাই ধারনা জন্মাল, সারাদিন ফেসবুকে বসে আমি এসব আজে বাজে ছবিই দেখি !!!
হয়তো এমন সমস্যায় আপনারাও পড়েছেন কিংবা পড়তে যাচ্ছেন।
তাই এখনি সময় এসব অশ্লীল পেজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর, সময় এসেছে “জিহাদ” ঘোষণা করার। ফেসবুকে এক সময় মানুষ পেজ খুলতো সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে। আর এখন??
আমাদের সামাজিক জীবনে ফেসবুক এখন একটা পার্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাই একে সুন্দর রাখাও আমাদের নিজেদের স্বার্থেই প্রয়োজন। তবে কিভাবে??
হুম এখন সেটাই জানাচ্ছি।
প্রতিজ্ঞা করুন, এখন থেকে মেয়েদের অপমান করা কোন পেজে লাইক দিবেন না কিংবা আগে লাইক দেওয়া পেজ গুলো আনলাইক করবেন।
আপনারা যদি লাইক না দেন তাহলে এমনিতেই অশ্লীল পেজগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
শুধু আনলাইক করলেই হবে না, সেই সাথে সেই সব পেজগুলো একটু কষ্ট করে “মেগাবাইট খরচ” করে হলেও রিপোর্ট করবেন। সম্ভব হলে ছবিগুলোতেও রিপোর্ট করবেন, যাতে ফেসবুক ছবিটি রিমুভ করে দেয়। মনে রাখবেন, যত বেশি রিপোর্ট হবে, তত তাড়াতাড়ি ফেসবুক থেকেই পেজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
“মডেলদের গোপন ছবি দেখুন, স্কেন্ডাল দেখুন , দুধর্ষ ছবি দেখুন”- এসব টাইপের কোন পেজ ভুলেও লাইক করবেন না।
এবং সাথে সাথে পেজ গুলো রিপোর্ট করে দিবেন। এতে হয়তো আপনার ১ মিনিট সময় নষ্ট হবে, কিন্তু মনে রাখবেন অশ্লীলতার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আপনিও অংশগ্রহন করলেন।
কোন বন্ধু যদি এসব আজে বাজে পেজ/ পেজের পোস্ট লাইক করে তবে সাথে সাথে মেসেজে তাকে ঐ পেজ আনলাইক করে রিপোর্ট করতে বলবেন। এরপর ও যদি কাজ না হয়, তবে সরাসরি স্কিন শট নিয়ে উনাকে ট্যাগ করেই পোস্ট দিয়ে দিবেন। ।
বাঙ্গালীর ইজ্জতে টান না দিলে কাজ হয় না। প্রয়োজনে এসব ফ্রেন্ডদের আইডিতেও রিপোর্ট করতে কার্পণ্য করবেন না।
আপনার ওয়ালে কোন আজে বাজে ছবি আসা মাত্রই কষ্ট করে হলেও রিপোর্ট করবেন। এগুলো আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমরা অন্তুত, ফেসবুকটা সবার সামনে বসে ব্যাবহার করতে চাই।
সব শেষে শুধু একটা কথাই বলবো, আপনারা পেজে লাইক দেন, পেজের পোস্ট গুলোতে লাইক দেন বলেই এসব পেজ কেউ খুলতে চায়। পেজ খোলা খুব সহজ একটি কাজ, এবং কে খুলছে তাও জানা কঠিন। তাই আমাদের এই ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। মনে রাখবেন, এইচএসসি পরীক্ষার পর ও সদ্য এসএসসি পাস করা এই ছেলে-মেয়েগুলোর মধ্যে বড় ধরনের একটা সংখ্যার ছাত্র- ছাত্রী এখন ফেসবুকে একাউন্ট খুলে একটিভ হবে। সদ্য তারুন্যে পা দেওয়া এসব ছেলে-মেয়েদের যৌন আকাঙ্খাকে কেউ যেন খারাপ ভাবে ব্যাবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে এখনি সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং আমার-আপনার ছোট ভাই- বোনদের এসবের হাত থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে।
তবে একটা কথা,এখানেই অনেকে বিজ্ঞ মানুষ চলে আসতে পারেন। তারা বলবে, তবে কি আমাদের দেশে যেসব মেয়েরা খোলা-মেলা চলাফেরা করে তার প্রতিবাদ করবো না?? হুম প্রতিবাদ করবেন। অবশ্যই করবেন। তবে রাস্তায় দাড়িয়ে সিশ দিয়ে নয়। ।
বাজে কথা বলে নয়। প্রতিবাদ শুরু করতে হবে, নিজের বাড়ি থেকেই। নিজের বাড়ি, পাশের বাড়ি। নিজের এলাকা, পাশের এলাকা এভাবেই যেসব মেয়ে অশ্লীল ড্রেস আপ পড়েন, তাদের বুঝাতে হবে সুন্দর ভাবে। তবে মনে রাখবেন, “দিতে গেলাম Shame, হয়ে গেলো প্রেম”- এমন কাজ যেন আবার না হয়।
। আর সেলিব্রেটিরা অনেক খোলামেলা জীবন যাপন করে, তাদের সাথে আর সাধারণ ৮-১০টা মেয়ের তুলনা করলে কোন ভাবেই হবে না। ।
পোস্টটি আপনারা যে কেউ কপি করে কিংবা শেয়ার করে ছড়িয়ে দিতে পারেন। তবে আশা করবো, যতজন পোস্টটি পড়বেন, সবাই শেয়ার করবেন।
আপনি এসব মেনে চললেও শেয়ার করবেন। কিংবা কপি করে স্ট্যাটাস হিসেবে দিয়ে দিবেন। সচেতনতা বৃদ্ধিই আমাদের মূল লক্ষ্য। আপনার ফ্রেন্ড লিস্ট এর সবাই যেন লেখাটা পড়ে সেটাই আমরা চাই। ।
যে করেই হোক, অশ্লীলতার প্রসার এখনি টেনে ধরতে হবে।
“অশ্লীলতার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে সঙ্গী হোন আপনিও, শালীন পেজের সঙ্গে সুস্থ বিনোদন গ্রহন করুন”
এতক্ষণ কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।