বাস্তবতা আর কল্পনা সম্পুর্ন ভিন্ন হলেও, কল্পনা বাস্তবে রূপ নিলে তা কিন্তু অসাধারণ একটা ব্যাপার। । পরীক্ষা !! এক্সাম !! এই শব্দ-খান শুনলেই মুখটা কেমুন যেন পাংশুইটা হয়ে যায় । । আর এক্সাম বাবাজীও আমাদের জীবনের সাথে ওত-প্রোত ভাবে জড়িত।
এক্কেরে Till death do us part আরকি !!
"EXAMINATION" word টার সাথে পরিচয় নাই এমন ব্যাক্তি দুনিয়াতে একটাও আছে বইল্লা মনে হয় নাই । ইংলিশ টা না হইলেও বাংলা টা সবাই যানে !! ফ্রম টিচার টু স্টুডেন্ট ইভেন দ্যা রিক্সাওয়ালা মামা ওলসো নো আব্যাউট দিস !! কারণ, পরীক্ষার দিন রিক্সায় উইঠা ফার্স্ট যেই টা রিক্সাওয়ালা রে বলা হয় তা হল," মামা! পরীক্ষা আসে টাইনা/ জোরে/ দ্রুত চালা্ন "
এক্সাম জিনিশ টা বড়ই আজব। । একে বারে বাচ্চা কাল থেকেই এইটা আমাদের লাইফ টারে HELL কইরা দিল । ।
সেই স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা দিয়া শুরু। । বলা যায় ভর্তি পরীক্ষার আগেই বাসাতেই আব্বু-আম্মু এক প্রকার পরীক্ষা নিয়া নিত আর নিজেরাও এক প্রকার পরীক্ষা দিয়া দিত। । আর যাদের আব্বু-আম্মু স্কুল ভর্তির কোচিং করাইসে, তারা তো... থাক আর কইলাম নাহ !!
School এ থাকতে ক্লাস টেস্ট, ফার্স্ট টার্ম, সেকন্ড টার্ম, ফাইনাল টার্ম, ইয়ার্লি আর হাফ ইয়ার্লি এক্সাম ।
টেন এ আসলো প্রি-টেস্ট আর টেস্ট এক্সাম । । তারপর কলেজেও অনেকটা একি রকম ... যদিও ঢাকা কলেজে ক্লাস টেস্ট নামক অদ্ভূত ব্যাপার টা ছিল নাহ! তারপর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা আর সেইটা পার কইরা স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টের যত সব অদ্ভুত কিছিমের এক্সাম !!! মিড, সারপ্রাইজ (আসলেই সারপ্রাইজিং, question দেইখাই সবাই Surprised(!) হয়ে যায়) , টিউটোরিয়াল, ল্যাব-টেস্ট, টেক-হোম টেস্ট, সেমিস্টার ফাইনাল, ইয়ার ফাইনাল আর ডাক্তার দের তো আরও মুসিব্বত । । তাদের তো মাশাল্লাহ প্রত্যেক মাসে ৩০ দিনই আইটেম, কার্ড, টার্ম, প্রফ ... থাকে ।
। আমার প্রায়ই তাদের জিগাইতে ইচ্ছা করে " ভাই এত্ত এক্সাম দেন কেমনে ?? "
এক্সামের আগের রাত একটা গুরুত্বপূর্ণ রাত, এই রাতের গুরুত্ব একজন স্টুডেন্টের কাছে অপরিসীম। কারন এই রাতের উপর তার এক্সামের 50% সাক্সেস দিপেন্ড করে !! এই রাতে অনেকে এমন "পড়া" দেয় যে পুরা সেমিস্টারেও পড়ে নাই !! তাদের তখন আর দেখাই পাওয়া যায় না !! আবার অতি সিরিয়াস স্টুডেন্টদের অনেক সময় এক্সামের আগের রাতে মাথায় গিট্টু লাগে... মানে মস্তিষ্কের স্ক্রু ঢিলা হয়ে যায় আরকি !! গিট্টু ছুটাইতে না পাইরা তারা তখন "থাক ! এইবার আর এক্সাম দিমু নাহ, নেক্সট সেমিস্টারে রিটেক/সাপ্লি দিমু নে" জাতীয় বাণী বলতে শুনা যায় !! অবশ্য অনেকেই রিটেকের পর রিটেক নিতে নিতে রেকর্ড করার প্ল্যান কইরা ফেলান! এইটা প্রাইভেট ভার্সিটি তে কমন হইলেও পাব্লিক ভার্সিটিতে রি-এড (Re-Admission) খুবই কমন টার্ম !!
এক্সামের আগের রাতে অনেকেই শুধুই পড়েন আবার অনেকে কিচ্ছুই পড়েন না। । আবার সাইল্যান্সার (3 Idiots) এর মতন অনেকেই তার ক্লাস মেট-দের এক্সাম সফল(!) করার মহান দায়িত্ব পালন করেন !! সাইল্যান্সারদের Moto হইলঃ Everything is fair in War and Exam !! No Offense, সাধারণত , Engineering আর Applied Physics, Chemistry, অর্থাৎ Science এর ডিসিপ্লিন এ এইরকম সাইল্যান্সার বেশি দেখা যায় ।
। কিন্তু অন্যান্য সাবজেক্টেও এনাদের বিচরণ সাবলিল । ।
কারও যে এক্সাম চলতেসে তা বুঝা যায় ফেসবুকে ঢুকলেই । ।
পরীক্ষার বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই প্রোফাইল ফোটো চেঞ্জ হবেই, আর স্তেটাস আপডেটও হবে এক্সাম রিলেটেড। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্টেটাস পোস্ট গুলা হয় , " কালকে এক্সাম। । কিচ্ছু পড়ি নাই!", "কালকেও বাঁশ খাব !!" "সবাই আমার জন্যে প্রে কইরো !" , "1 gone, 5 more to go" !!
মেডিক্যালে পড়ুয়া আমার এক দোস্ত রে একদিন কল দিসিলাম, জিগাইলাম কি অবস্থা , সে রিপ্লাই দিল, "দোস্ত ! কালকে আইটেম আছে আর এখন শিলা কি জাওায়ানি দেখতেসি !! " আর একবার একজনের স্তেটাস দেখসিলাম , " আজকে আইটেম দিয়া আইসা আইটেম সং-এ নাচতেছি । ।
" যারা প্রফ (প্রফেসিয়নাল) এক্সাম দিতেসে তারা তো ২ মাস আগে থেকেই যাবতীয় সামাজিক যোগাযোগ একেবারে ডিএক্টিভেট কইরা দেয় !! :\ BBA পড়ুয়া আমার এক দোস্তের এক্সামের আগের দিন স্তেতাস ছিল এইরকমঃ "7 days before xam: frantically collecting all kinds of notes nd suggestions dat could possibly be found on mother earth ( or at least on campus)
1 day before xam: ki ase jibone..kheta r balish "
আর প্রোফাইল ফটু গুলান হবে এইরামঃ অথবা,
অনেক অন্যদের কথা হইসে, এইবার নিজের এক্সপেরিএন্স শেয়ার করি। । আমার এক্সামের আগের রাত ভালই কাটে !! স্কুল লাইফে অবশ্য পুরাই Nightmare আসিল !! বাংলা পরীক্ষার আগের রাতে আমার জ্বর আসত !! (বানান ভুল আর ব্যাকারণ ভুলের কারণ টা বুঝতেই পারতেসেন!! ) আগের রাতে পারিবারিক উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী আমার T.V. দেখা খালি রাতের dinner time এ লিমিটেড ছিল ! আপনাদের অনেকের হয়ত TV দেখাই বন্ধ আছিল !! তবে Friday Night একটু ইস্পেশাল আছিল !! পরদিন এক্সাম থাকলেও আগের রাতে CID দেখবার পারতাম !! এক্সাম হলে যাবার আগেও বই ছারতাম নাহ!! অনেকে ঘন্টা পড়ার পরেও পড়ত !! কলেজ লাইফে ফার্স্ট ইয়ারের এক্সামের আগের রাতে পড়তাম ঠিকই মাগার তেমন কিছু মনে থাকত নাহ!!
DU তে ভর্তির পর আগে, ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে কি করসি মনে নাই !! মাগার, KUET এ এক্সাম দিতে যাবার আগের রাতে Train এ কাটাইসিলাম !! পড়াশুনা তো করি নাই কিসসু , পুরাই Journey By Train আরকি ! হেহেহে ...
ভার্সিটি তে যেই এক্সাম-ই হউক না কেন, পড়া টা অই আগের রাতেই হয় !! যতই PL দিক না কেন, বা, ২টা পরীক্ষার আগে ছুটি থাকুক না কেন, যাবতীয় পড়াশুনা অই এক রাতে complete ! আমি অবশ্য দোস্তদের সাথে ফোনে কথা কইয়াই আধা রাত পার কইরা দেই, তারপর মনে হয়, "ও মোর খোদা-গো !! সকালে দেখি এগজ্যাম !!! " একদিন বেস্ট ফ্রেন্ড রে কল দিসিলাম, প্রায় একঘন্টা পর সে কইল, "দোস্ত ! কালকে না তোর এক্সাম !! প্রিপারেশনের কি অবস্থা ??" আমার প্রিপারেশানের অবস্থা তখন সদ্য নতুন কোচ পাওয়া বাংলাদেশ ফুটবল দলের বিদেশে টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার মতন!!
এক্সামের আগের রাত কখনও কখনো খুব স্পেশাল হয় ! ২০০৭ সালের SSC পরীক্ষার্থীদের জন্যে অংক পরীক্ষার আগের রাতটা যেমন ! WC-2007 এ অই রাতে পরীক্ষার preparation ছেড়ে সবাই Bangladesh vs. India এর legendary Cricket match টা দেখতেসিল। আমি দেখতে পারি নাই, তবে আমার সকল বন্ধুরা দেখেছিল টাইগারদের অসাধারণ পারফর্মেন্স । আমি আব্বু-আম্মুর নিষেধাজ্ঞার কারনে দেখতে পারি নাই ।
। কিন্তু, পরদিন সকালে আমদের পরীক্ষাটা বাংলাদেশ ক্রিকেট টীমের মতনই Awesome ছিল !! আবার এই ২০১১ এর ASIA Cup এ Bangladesh vs. Srilanka ম্যাচটাও আমার জন্যে সেইরাম স্পেশাল । । পরেরদিন Crime & Society কোর্সের মিড-টার্ম , কিন্তু আমি আর আমার এক ফ্রেন্ড পুরা ম্যাচটা এক সাথে দেখসি, প্রিপারেশান এর পুরাই খেতা-পুরি দিয়া !! অবশ্যা একসাথে দেখসি বলতে আমরা ফোন কান্নেক্টেড ছিলাম আরকি পুরা ম্যাচ !! বাংলাদেশ রে ম্যাচ জিতাইয়াই আমরা খেলা শেষ করসি আরকি!!
অন্নেক লিখে ফেলসি !! সামনে এক্সাম ! exam এর আগে ব্লগিং করার মজাই দেখি আলাদা ! লিখা তো শেষ-ই করবার পারলাম নাহ!! no problem , next installment আসতেসে !! till then, এক্সামের প্রেপ নেই !! হেহেহে...। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।