আগে কথা হতো গুজবে কান দেবেন না। এখন আর সেটা কেউ বলেন না। কারণ যা কিছু খবর তা কিন্তু গুজবেই। মোবাইল যুগে গুজব ছড়ানো যে কত সহজ তা আশা করি সবাই জানেন এবং বুঝেন। এই মুহূর্তে গুজব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট হয়ে যাচ্ছেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত নাকি এর ওপর ভিত্তি করেই বলেছেন এক মাসের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। ম্যাজিকটা কি? হাসিনা প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেই কি সব সমস্যা চুকে যাবে। এরও জবাব তৈরি। গুজব থেকে পাওয়া গেল দেশে জরুরি অবস্থা জারি হচ্ছে। মুহিত মনে করছেন জরুরি অবস্থা জারি হলে সবাই ভয় পেয়ে বাড়ি ফিরে যাবে।
রাজপথে উত্তাপ থাকবে না। বন্ধ হবে টকশো। সরকারি মহল টকশো নিয়ে চিন্তিত। স্বাভাবিক অবস্থায় তো আর টকশো বন্ধ করা যাবে না। তাই আইনের সুযোগ খোঁজা হচ্ছে।
গুজব তো শুনতে ভাল লাগে। বাস্তবে রূপায়ণ হোক না হোক। শেখ হাসিনা কি প্রেসিডেন্ট হবেন তাহলে? শাসক দলের একজন শীর্ষ নেতা বললেন, স্পিকার হামিদই এই দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন। হাসিনা এ রকম চিন্তা করছেন না। এটা যখন লিখছি তখন দেশের একজন খ্যাতনামা ব্যবসায়ী বললেন কারা নাকি তাকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে গেলেই নাকি দেশ শান্ত হয়ে যাবে।
সেটা আবার কি? বিরোধী নেত্রী বেগম জিয়া ১৮ই এপ্রিলের মধ্যে অন্তরীণ হবেন এটা তো চাউর হয়ে গেছে ফেসবুকে, মোবাইলে এমন কি সংবাদ মাধ্যমে। প্রথমে তাকে হুকুমের আসামি করা হবে। এরপর সেনা উস্কানির অভিযোগে স্থায়ীভাবে তাকে জেলে রাখা হবে। কে এটা অস্বীকার করতে যাচ্ছে। হেফাজত নিয়ে তরতাজা এবং উত্তেজক খবর দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ।
বলেছেন ৪৫ কোটি টাকার বিনিময়ে তারা লংমার্চে এসেছিল। আমার দেশ কার্যালয়ে নাকি এই টাকা লেনদেন হয়েছে। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এর সত্যতা চ্যালেঞ্জ করেছেন। বলেছেন এটা প্রমাণ করতে না পারলে আদালতমুখী হবেন। হেফাজতও তা অস্বীকার করেছে।
এতো বিপুল পরিমাণ টাকা একটা অফিসে বসে লেনদেন হলো সরকার কি করলো তাহলে। কানাডার বেগমগঞ্জ নিয়ে এখন হট আলোচনা সামাজিক নেটওয়ার্কে। সে দেশে নাকি একটা রাস্তার নামই হয়ে গেছে বেগমগঞ্জ। কিভাবে হলো সেটা। সামাজিক নেটওয়ার্ক বন্ধুরা খুঁজে বের করেছেন সে তথ্য।
বাংলাদেশ থেকে টাকা লুটে নিয়ে সেখানে বেগমদের নামে বাড়ি কিনেছেন। অগ্রিম পার্টি হিসেবে বেগমকেও পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাই নাম হয়েছে বেগমগঞ্জ। বুদ্ধি বটে। এটা কি নিতান্তই গুজব! মালয়েশিয়ায় শত শত বাড়ি কিনলো কারা? গুজব রয়েছে বিএনপি ভেঙে যাচ্ছে।
দলের অনেকেই নাকি দল ভাঙার চেষ্টা করছেন। গ্রেপ্তার হননি এমন ক’জন নেতার নাম জড়িয়ে তুফান আলোচনা। বলা হচ্ছে তারা নাকি খালেদা জেলে যাবার পর দলের দায়িত্ব নেবেন। বিএনপির মধ্যেই এই আলোচনা চলছে ক’দিন ধরে। বাস্তবে সেটা কি ঘটবে? ওয়ান ইলেভেনের অভিজ্ঞতা তো সামনে রয়েছে।
তাছাড়া খালেদা মানেই বিএনপি। আর হাসিনা মানেই আওয়ামী লীগ। তাই সে চেষ্টা কতটুকু সফল হবে তা বলা বড় কঠিন। তবে গুজবটা কিন্তু দিন দিন ভারী হচ্ছে। ‘আমার দেশ’ বন্ধ হবে এটা কি আসলেই গুজব? ফাইলপত্র নতুন করে নড়াচড়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের মতও নেয়া হয়েছে। আদালতের আদেশ থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করার পাঁয়তারা স্থগিত হয়েছে এটর্নির যুক্তিতে। তবে নতুন মামলা চালু হচ্ছে এ নিয়ে গুজব সপ্তাহ ধরে।
শেষ কথা: গুজবে কান দেবেন না বলে আসল খবর থেকে আপনাদের বঞ্চিত করতে চাচ্ছি না। গুজবে কান দিন।
দেখবেন আসল খবর পেয়ে গেছেন। গুজবের কারখানা হরতালেও চালু থাকে।
লিংক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।