Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience যে কোনও মুল্যে স্নোডেনকে ফেরত চায় যুক্তরাষ্ট্র
এক এডওয়ার্ড স্নোডেনেই এখন মেতে আছে সারা বিশ্ব। মার্কিন ইন্টারনেট গোয়েন্দাগিরির তথ্য ফাঁসকারী স্নোডেনের খোঁজে গত কয়েকদিন ধরেই দিশেহারা যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের ক্ষমতাবান দেশগুলোও পেতে চাইছে স্নোডেনের খোঁজ। যুক্তরাষ্ট্র তো এক ‘বেঈমান’ স্নোডেনের খোঁজে তাদের পুরো শক্তি কাজে লাগিয়েছে। সানডে টাইমসে মঙ্গলবার প্রকাশিত খবর অনুযায়ী স্নোডেন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাবাহিনীগুলোকে বিশেষ (!) নির্দেশনা দেয়া আছে।
এদিকে যাকে নিয়ে এতো সাড়া সেই স্নোডেন লাপাত্তা। গত মঙ্গলবার হংকং থেকে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে বিমানে চড়ার পর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তার। অন্তত হংকং, রাশিয়া ও ইকুয়েডর তার অবস্থান অস্বীকার করেছে। রাশিয়া হয়ে ইকুয়েডরে যাওয়ার কথা ছিল স্নোডেনের।
গত মঙ্গলবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমে তিনি সর্বশেষ রাশিয়ায় অবস্থান করছেন বলে খবর বের হলেও রাশিয়া তা অস্বীকার করে বলেছে, স্নোডেন মস্কোয় ঢুকতে পারেন নি।
আবার অ্যাসাঞ্জকে আশ্রয়দানকারী ইকুয়েডর সরকারও বলছে যে স্নোডেন সে দেশে আসেন নি। এদিকে হংকং বলেছে, সোমবারই স্নোডেনকে নিয়ে একটি বিমান রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। এর আগে ইকুয়েডর সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে যাচ্ছে বলে খবরে বলা হয়। বিবিসি ও রয়টার্স।
জল্পনা চলছে ভেনিজুয়েলা নিয়েও৷কট্টর মার্কিনবিরোধী মনোভাবের জন্য স্নোডেনের আদর্শ আশ্রয়স্থল হতে পারত হুগো শাভেজের দেশও৷ কিন্তু স্বয়ং ‘এল কামানদান্তে’র মৃত্যুর পর আমেরিকার চোখে চোখ রেখে স্নোডেনকে কি আশ্রয় দেওয়ার ঝুঁকি নেবেন সদ্য মতায় আসা নিকোলাস মাদুরো? সংশয় থেকেই যায়৷
বরং, সেই দিক থেকে বিচার করলে ফিদেল কাস্ত্রোর কিউবা হয়তো অনেকটাই নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে এই তরুণ মার্কিন হ্যাকারের৷ সেই উদ্দেশ্যেই হয়তো মস্কো থেকে হাভানা পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল৷কিন্তু মস্কোর দোমো দেদোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে হাভানার হোসে মাতি বিমানবন্দরে পাড়ি দিতে গিয়ে কোথায় বেপাত্তা হলেন তিনি? ধন্ধে শুধু মার্কিনরা নন, সারাবিশ্ব৷ আর আপাতত পলাতকের সন্ধানেই তোলপাড়৷
উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার স্নোডেনকে নিয়ে চীন-রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়া স্নোডেনকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। আর এটা খুব দু:খজনক একটি ঘটনা। ভারত সফরকালে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপের ‘পরিণতি’ অবশ্যম্ভাবী।
এ ঘোষণার পরই রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, স্নোডেন রাশিয়ায় ঢুকতে পারেন নি। চীন ও রাশিয়া স্নোডেনকে হংকং থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করছে এরকম অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে লাভরভ বলেন, রাশিয়া স্নোডেন সম্পর্কিত কোন বিষয়ের সঙ্গে জড়িত নয়।
আমরা তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানি না। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তিনি রাশিয়ায় ঢুকতে পারেন নি। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, তার (স্নোডেন) উধাও হয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করার যে চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র চালাচ্ছে তা ভিত্তিহীন এবং গ্রহণযোগ্য নয়। এদিকে চীনও মার্কিন অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অগ্রহণযোগ্য বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্নোডেন কোথায় অবস্থান করছেন সে সম্পর্কে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
রাশিয়ার কথা অনুসারে তিনি এখন মস্কোয় নেই। ইকুয়েডর বলছে, তিনি এখন পর্যন্ত সে দেশে যান নি। তবে তিনি মস্কো বিমানবন্দরের একটি হোটেলে রাত কাটিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্র চায় রাশিয়া ছাড়ার আগেই স্নোডেনকে হস্তান্তর করা হোক। কেরি মস্কোকে আন্তর্জাতিক আইনের মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে বলেছেন।
প্রত্যেকের স্বার্থেই তা প্রয়োজন বলে জানান তিনি। মস্কো থেকে স্নোডেনের লাতিন আমেরিকার কোনো দেশে যাওয়ার খবর প্রকাশের পর তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিতে বিভিন্ন দেশকে সতর্ক করে ওবামা প্রশাসন।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপ ও জিমেইলসহ সাধারণ নাগরিকদের অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমের যোগাযোগ তৎপরতা জানতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভারে নজর রাখছে বলে এ মাসের শুরুর দিকে তথ্য ফাঁস করেন স্নোডেন; যিনি এর আগে এই সংস্থাটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতেন। তথ্য ফাঁসের পর থেকেই হংকংয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।