আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আন্দোলনে হিলারী ব্রেক আর কিছু এলোমেলো কথা

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি বাংলাদেশের একদল রাজনীতিবিদ গলা ফুলিয়ে বলতে শুনতাম - বিদেশে আমাদের কোন প্রভু নাই! কিন্তু দিনকাল মনে হয় বদলাইছে - এখন মোহতারেমা হিলারী ক্লিনটনের আগমনে আমাদের বিরোধীদলের সমূহ জোটের আন্দোলনের ব্রেক চলছে। দেশের সাধারন মানুষের জীবন যাপনের কষ্ট আর ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা কোন ভাবেই উনাদের মনে করুনার উদ্রেগ করতে ব্যর্থ - কিন্তু মোহতারেমা হিলারী আগমনের সংবাদে কেমন যেন সব কিছু কোয়াইট হয়ে গেলো। হতেই হবে - পাগলেও নিজের বুঝ ভাল বুঝে - আর বিরোধী দলের নেতারাও জানেন সকল সুতার গিটটা কোথায়। সরকারী বিরোধী সব দলই অনেকগুলো যায়গায় একসূত্র গাথা - এরা নিজের ছেলে মেয়ে বিয়ে দিয়ে আত্নীয়তা করে - এরা শুল্কমুক্ত গাড়ীর জন্যে সংসদে বিল পাশ করে - এরা উপজেলাকে ক্ষমতায় করতে অনীহ - ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরনে সমান ভাবে বিরোধীতা করে - এমন কি নিজেদের দলের ভিতরে গনতন্ত্র চর্চা বন্ধ করার ক্ষেত্রে এরা সমান ভাবে কাজ করে। সুধুমাত্র দলীয় রাজনীতিকে চাঙ্গা করার জন্যে পরষ্পরে বিরোদ্ধে এরা মারমুখী।

(২) এই নেতারা মজার কাজ করে - এরা নিজেরা নিজেদের পেটায় - যখন একদল সরকারে থাকে তখন আরেকদলকে পেটায় - আবার আরেকদল যখন সরকারে যায় অন্য দলকে পেটায় - এই পেটানো চক্র চলছে ১৯৯১ সাল থেকেই। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এরা আবার সবাই পেটানো খায় আর্মির হাতে। তারপরও এরা নিজেরা চেস্টা করে না এই পেটানো রাজনীতি থেকে বের হতে। আগের দিনে রাজনীতিবিদরা জেলে যাওয়াকে গৌরবের বিষয় হিসাবে গন্য করতো - কিন্তু সুবিধাভোগী বিলাসী জীবনে অভ্যস্থ আধুনা রাজনীতিকরা মামলা দিলেই ভয়ে ইদুরে বন্ধু হয়ে যায়। গত কয়দিন টিভির পর্দায় দেখতাম মির্যা ফকরুলের পাশে সাবেক বিপ্লবী নেতা একসময়ের ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মুস্তাফিজুর রহমান বাবুলকে - হয় ডানে বা বামে চেহারা স্থির করে ধরে রাখতেন যাতে টিভি ক্যামেরা উনানে মিস না করে।

গত দুই দিনে উনাকে দেখছি না - আর মামলার তালিকায়ও উনার নাম নেই। উনি কোন কারনে হাওয়া হয়ে গেলেন - বুঝতে পারছি না। সমাজতন্ত্রের জন্যে জানবাজী রেখে সংগ্রাম করতে করতে রাশিয়া গিয়ে গ্লাসনস্তের চক্করে পড়ে বাবুল ভাই হয়ে গেলেন পুঁজিবাদী - প্রচুর অর্থ আর পানাভ্যাস নিয়ে এসেছিলে টরন্টোয় - থাকবেন বলে - দেখা হলে বললাম - ভাই আপনি এখানে থাকতে পারবে না - কারন উনার সাথে মুসাফা করা সময় উনার নরম হাত অনুভব করে নিম্চিত ছিলাম উনি শাররীক পরিশ্রম করতে পারবেন না। কয়দিন পর শুনেছিলাম উনি বাংলাদেশে ফিরে গেছেন - আর জাতীয়তাবাদী হয়ে গেছেন। এখন উনি ইঁদুর বিপ্লবী।

সুবিধাবাদ কাকে বলে! (৩) গতকাল মন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ানের কথা শুনে সত্যই বিভ্রান্ত হয়েছি। রাজনীতিবিদরা মানুষকে বিভ্রান্ত করে - কিন্তু এই লেভেলে - ভাবতে পারিনি। যারা উনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরী চেষ্টা করছেন - তারা উনার কথার শেষ অংশটা বাদ দিয়ে করছেন। কারন শেষ অংশটা আসলেই কনফিউজিং। বলছেন - আমি জানিনা উনি বেঁচে আছেন কিনা? আল্লাহ জানে।

কিন্তু শুরুতেই উনি ইলিয়ানের স্ত্রীকে বিধবা হিসাবে চিহ্নিত করেই কথা বলেছেন। এই ধরনের পরষ্পরবিরোধী কথা বলার জন্যে হয় একজনকে খুবই চতুর হতে হবে - নতুবা পুরো নির্বোধ হতে হবে। যতটুকু মুন্নুজানের ইতিহাস জানি - উনি খুলনা এলাকার একজন অতিপরিচিত রাজনীতিক এবং সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এমপি - যার শ্রমিক রাজনীতির একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে। তাহলে উনি এই ধরনের পরষ্পর বিরোধী কথা বললেন কেন? আমি জানি না, আল্লাই ভাল জানেন। তবে এদের নিয়েই বাংলাদেশ - এই কথাটা ভুলে গেলে চলবে না।

(৩) বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরেকটা মজার ঘটনা ঘটছে - ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি মওদুদ কালের আবর্তে এখন বিএনপির নীতিনির্ধারক - শুধু নীতি নির্ধারকই নয় - আপাত দৃষ্টিতে দলের কান্ডারীর আসনে বসা। এই সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল শুরু থেকেই দলীয় দৃষ্টিভংগী নিয়ে কাজ করছেন - এবং আওয়ামীলীগের মামলা তুলে রেকর্ড তৈরী করেছেন। মজার বিষয় হলো - কামরুল বিএনপি একমাত্র যেই নেতা মামলা তুলেছেন - সে হলো মওদুদ। মওদুদ একজন বহুরুপী এবং অত্যান্ত ধুরন্ধ মানুষ। যখন বাংলা বই লেখে - তাতে জিয়াউর রহমানকে মহান বানায় - কিন্তু যখন ইংরেজী বই লেখে সেখানে শেখ মুজিবকে মহান বানায়।

গতবছর মুখ ফসকে শেখ মুজিবকে নিয়ে একটা ভাল কথা বলে ফেলেছিলো মওদুদ - তারপর উনার শনির দশা শুরু হলেও - উনি দেশ থেকে বাইরে গিয়ে কুলডাউন পিরিয়ড পার করে আবার দেশে ফিরে আসেন। খুব খেয়াল করে দেখলে দেখা যাবে মওদুদ একটা পরিকল্পনা নিয়ে হাঁটছে - এবং সে সফলতার অনেক কাছাকাছি পৌছে গেছে। (৪) গতকাল এক ব্লগার বিতর্কের এক সময় ৭৫ এর ১৫ ই আগষ্টের নির্মম হত্যাকান্ডের উদাহরন দিয়ে স্মরন করিয়ে দিলেন আওয়ামীলীগের কি পরিনতি হতে পারে। সত্যই কি নির্মম রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে মানুষ বসবাস করে। একটা দেশের প্রেসিডেন্টকে হত্যা করা হলো পরিবারপরিজনসহ।

তার বিচার যাতে না হয় তার জন্যে সংবিধানে বিধান করা হলো - খুনীদের শাস্তি তো দুরের কথা বিদেশে পোষ্টিং দিয়ে পুরষ্কৃক করা হলো। আর একদল সেই ঘটনাকে রাজনীতির বেজলাইন হিসাবে হুমকী দেয়। তবে এই অন্ধ সমর্থকদের নির্মম এবং মানবতাহীন দৃষ্টি ভংগীতে অবাক হই না - কারন বিএনপি এবং ম্যাডাম খালেদা জিয়া ১৫ ই আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডকে প্রতিবছর সবাইকে স্মরন করিয়ে দেন ৬০ পাউন্ডের কেক কেটে উৎসবের নামে এক নির্মম রসিকতার মাধ্যমে। নূন্যতম মানবিক অনুভূতি এবং সহমর্মিতা যাদের মাঝে দেখা যায় না - এরা যখন মানবতার কথা বলে - এরা যখন গনতন্ত্রের কথা বলে - এর চেয়ে বড় তামাশা আর কি হতে পারে! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.