চোখে আঘাতপ্রাপ্ত ওই শিক্ষার্থীর নাম আখতারুজ্জামান রাজীব। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাড়ি বরগুনায়।
সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রাজীব বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে ভেবে আমিও অন্যান্যদের মতো সেদিন ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। আমি তো ভাবিনি যে আমি এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
“সবাই যখন দৌড়ে পালাচ্ছে, আমিও পালাতে গেলে প্রশাসন ভবনের সামনে হঠাৎ আমার পাশে বিকট শব্দে একটি হাতবোমার বিস্ফোরণ হয়। কিছু বুঝে উঠার আগে ডান চোখে হাত দিয়ে দেখি রক্ত ঝরছে। ”
রাজীব জানান, এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। একমাস চিকিৎসা নেয়ার পর ডাক্তাররা তাকে রাজশাহী চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তর করে।
তিনি বলেন, “সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আমি আর ডান চোখে দেখতে পাব না।
”
সেখানে ডা. লুৎফর রহমানের তত্ত্ববধায়নে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান রাজীব।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরো ভালো চিকিৎসা নিতে পারলে ডান চোখে আবার দেখতে পাবেন রাজীব। আর এজন্য কয়েক লাখ টাকা প্রয়োজন।
দশ ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রাজীব।
তিনি বলেন, “বাবার বয়স একশ’ বছরেরও বেশি।
তিনি ইতোমধ্যেই অর্ধলক্ষাধিক টাকা খরচ করেছেন। ভাই-বোন সবাই আলাদা থাকায় বাবা-মার পক্ষে আর চিকিৎসা ব্যয় চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ”
বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকোর্স বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আয়াতুল্লাহ খোমেনী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসলে এটি দুঃখজনক ঘটনা। রাজীব তো কোন অন্যায় করেনি। সে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
যার ফলে তাকে চোখ হারাতে হলো।
“বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত রাজীবের যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় বহন ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া। ”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি তানভীর আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ ছেলেটি ক্লাসে অনেক ভাল। আমরা ঘটনাটি শুনে খুব মর্মাহত। এক চোখ দিয়ে সে রোববার দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
”
তিনি জানান, বিভাগের শিক্ষকরা তার চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ছাদেকুল আরেফিন মাতিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ওইদিন ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বহনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। এর প্রেক্ষিতে রাজীব রোববার আমার কাছে চিকিৎসা ব্যয় দেয়ার জন্য আবেদন করেছে।
“উপাচার্য ঢাকায় থাকায় কোন সিদ্ধান্ত নিতে না পারলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামর্থ্যমত সাহায্য করা হবে। ”
আহত শিক্ষার্থী রাজীবকে তাকে সাহায্য করতে চাইলে এই ঠিকানায় টাকা পাঠাতে অনুরোধ করেছেন- আখতারুজ্জামান রাজীব খান, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, হিসাব নাম্বার ৩৫-১৫১-৩৪১৭২ ।
এছাড়া কেউ চাইলে রাজীবের মোবাইল নম্বরে (০১৭২-১৫৩২৮৭২)যোগাযোগ করেও সহযোগিতা করতে পারেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।