২৮ এপ্রিল (রেডিও তেহরান) : বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের আনাগোনা ও তৎপরতা বেড়ে চলেছে। এ নিয়ে দেশের বিশিষ্টজনেরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, "বাংলাদেশে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে হঠাৎ তৎপর হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রানজিট, টিফাসহ যেসব চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে, এই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তারা তা নিষ্পত্তি করতে চায়। এ লক্ষ্যেই আগামী ৫ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এছাড়া বিশাল একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল আগামী মাসের শেষ দিকে ভারতের স্পিকার মীরা কুমারের ঢাকা সফরে আসার কথা রয়েছে।
" বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী দিনগুলোতে শীর্ষ নেতাদের সফর আরও বাড়বে।
বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই মার্কিন ও ভারত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা ঢাকা সফরে আসছেন বলে মনে করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। রেডিও তেহরানকে তিনি বলেছেন, "এদেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণকে পাকাপোক্ত করার জন্যই হয়তো বর্তমানে সরকারের বেসামাল অবস্থাকে কাজে লাগাতে চায় তারা। এ অঞ্চলে চীনবিরোধী একটি বলয় গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত বাংলাদেশকে সঙ্গে রাখতে চায়। " তিনি বলেন, "সরকারকে এ সফর সম্পর্কে সবকিছু সুস্পষ্ট করতে হবে।
কেননা দেশের স্বার্থবিরোধী কোন বিষয় জনগণ মেনে নেবে না। " সাইফুল হক আরও বলেন, "সরকার বর্তমানে যে নীতি অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে তাতে মনে হয় না যে, তারা দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান নেবে। নতজানু নীতির কারণে সরকার অনেক আগেই মার্কিনীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। আর ভারত বাংলাদেশের বিষয়গুলো অমীমাংসিত রেখে তাদের স্বার্থ হাসিল করে যাচ্ছে। আর তাই দেশের স্বার্থ নিয়ে মানুষের ভয় ও আতঙ্ক বাড়ছে বলে মনে করেন সাইফুল হক।
হিলারী ক্লিনটন কিংবা প্রণব মুখার্জির বাংলাদেশ সফর নতুন না হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন কলামিস্ট বদরুদ্দিন ওমর। রেডিও তেহরানকে তিনি বলেন, "তারা তো নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই আসবে- এটা জানা কথা। আর এ জন্যই তারা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে বেশি পছন্দ করে কিনা জানি না তবে দেশের সরকারের কার্যক্রমে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সবকিছু দিয়ে দেয়ার প্রস্তুতির প্রমাণ পাওয়া যায়। " তিনি বলেন, "এ দুটি দেশের সঙ্গে ট্রানজিট, টিফা, সমুদ্রসীমা, খনিজ সম্পদ উত্তোলনসহ নানা বিষয় এখনও অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে। আর হিলারী ক্লিনটন বা প্রণব মুখার্জি এসে চাইলেই হবে না, তারা আরও আগেই এ সফরের কার্যক্রম শুরু করেছে।
এখন দরকষাকষি হতে পারে কে কি পাবে তা নিয়ে। "
তবে, বর্তমান সরকারকে দিয়ে দেশের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে মনে করেন বদরুদ্দিন ওমর। তিনি বলেন, সরকার কি স্বার্থ রক্ষা করবে জানি না, তবে তারা বিলিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তারা খুবই উদার ও সিদ্ধহস্ত। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে তারা নিজেদের পকেট ভারী করতে অভ্যস্ত। যার প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে বলেও জানান তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।