কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :)
গারো পাহাড়ের পাদদেশে উত্তরের এই জনপদের উত্তরপ্রান্তে নালিতাবাড়ী উপজেলায় বনবিভাগের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে মধুটিলা ইকো পার্ক। সবুজ বনের ভেতর সুন্দর এই ইকোপার্কটি অবস্থিত। একাধিক স্পটে একাধিক দল একত্রে পিকনিক করতে পারবে সেখানে। স্টার ব্রিজ নামে ছোট জলাশয়ের ওপর সুন্দর একটি ব্রিজ আছে। পাহাড়ের চূড়ায় সাইট ভিউ টাওয়ারে উঠলেই চোখ জুড়িয়ে যায় সীমান্ত পেরিয়ে উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে।
দূরের অরণ্যকে একটু কুয়াশাচ্ছন্ন মনে হলেও এর সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই। গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে যত দূর এগোনো যায়, ততই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ।
পার্কের গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই নজরে পড়বে উঁচু গাছের সারি। সামনে এগিযে গেলে পাহাড়ি ঢালুর আঁকাবাঁকা রাস্তা। পাহাড়ের প্রবেশ পথেই বিশাল শুঁড় উচু করে দাড়িয়ে আছে বিশাল আকারের দুটি পাথরের হাতি ।
পথে হাটতে হাটতে চোখ আটকে যাবে সবুজের সমারোহ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে। পথে বুনো গাছপালার ফাঁকে ফুটে আছে হরেক রকমের বুনোফুল, তাতে বাহারি প্রজাপতির ওড়াউড়ি। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার পথে ঝোপঝাড়ে দেখা মিলবে হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, বানর, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, হ্রদের ধারে কুমির, ব্যাঙ আর মৎস্যকন্যার অতি চমৎকার সব ভাস্কর্য। আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথে ঘন ঘন গাছের সারি গভীর অরণ্যের দিকে চলে গেছে। এখানে উঁচু পাহাড়ের গাছের ছায়ায় বসে কাটানো যাবে দুপুর ও বিকেল।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানে আরও আছে প্যাডেল বোট ঘুরে বেড়ানো সুযোগ। ইকোপার্কে ঢুকতে জনপ্রতি পাঁচ টাকায় টিকিট কাটার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে আলাদা ফি দিয়ে হ্রদে প্যাডেল বোট চালিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে ভারতে অবস্থিত উঁচু উঁচু পাহাড় আর সীমান্তবর্তী সবুজ গারো পাহাড় দেখতে পাবেন। ভাগ্য ভালো হলে ওয়াচ টাওয়ার থেকেই মিলতে পারে বুনোহাতির দলের দেখা।
তারা সাধারণত শেষ বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গভীর অরণ্য থেকে নেমে আসে।
বিভিন্ন রাইড নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা করে গড়ে তোলা হয়েছে শিশুদের খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক। এখানে ভ্রমণপ্রিয়দের দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় মহুয়া রেস্টহাউস। এটি ব্যবহার করতে চাইলে ময়মনসিংহ অথবা শেরপুর বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ডিসপ্লে মডেল, তথ্যকেন্দ্র, গাড়ি পার্কিং জোন, ক্যানটিন, মিনি চিড়িয়াখানা।
ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক প্রজাতির বৃক্ষ, মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগান। রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পটও। পার্কটিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীর সমাহারও চোখে পড়বে।
কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকা থেকে মধুটিলা ইকোপার্কের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুরে আসতে হবে।
শেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী বাজার পর্যন্ত লোকাল বাস সার্ভিস রয়েছে। যাতে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ২০ টাকা করে । নন্নী বাজার থেকে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ভাড়ায় পাওয়া যায়। শেরপুর থেকে ভাড়ায় মাইক্রোবাস, অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেলে মধুটিলা ইকোপার্কে আসা যাবে। এতে জনপ্রতি ২০/৩০ টাকা এবং রিজার্ভ নিলে ১০০ থেকে ১২০ টাকা পড়বে ।
এছাড়া শেরপুর জেলা শহর থেকে সি এন জি চালিত অটোরিকশা কিংবা ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে চলে যেতে পারেন । খরচ পড়বে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা । আর যারা নিজস্ব গাড়িতে আসতে চান তারা ময়মনসিংহ পার হয়ে সরাসরি শেরপুরের নকলা উপজেলা থেকে শেরপুর জেলা সদরে না এসে নালিতাবাড়ি উপজেলা হয়ে মধুটিলা চলে যাবেন ।
পাহাড়ের চূড়ায় সাইট ভিউ টাওয়ারে উঠলেই চোখ জুড়িয়ে যায় সীমান্ত পেরিয়ে উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে। দূরের অরণ্যকে একটু কুয়াশাচ্ছন্ন মনে হলেও এর সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই।
গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে যত দূর এগোনো যায়, ততই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে এই মধুটিলা ইকোপার্কটির অবস্থান।
কোথায় থাকবেন
এখানে ভ্রমণপ্রিয়দের দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় মহুয়া রেস্টহাউস। এটি ব্যবহার করতে চাইলে ময়মনসিংহ অথবা শেরপুর বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে রাত্রি যাপনে নিষেধাজ্ঞা আছে।
কারণ প্রায়ই মেঘালয়ের বনাঞ্চল থেকে হাতির দল নেমে আসে। গারো,কোচ আর স্থানীয় অধিবাসীদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয় হাতির উৎপাতে। জনপ্রতি ভাড়া ২০০ টাকা।
আর রাতে থাকতে হলে শেরপুর শহরে বিভিন্ন ম্যানের আবাসিক হোটেলের ব্যাবস্থা রয়েছে । শেরপুর জেলা শহরে হাতে গোনা তিনটি ভালো ম্যানের আবাসিক হোটেল ছাড়াও ভি আই পি’দের জন্য জেলা সার্কিট হাউজ , জেলা পরিষদ ও এল জি ই ডি’র রেস্ট হাউজ রয়েছে ।
সেগুলোতে রাত্রি যাপন করতে চাইলে অগ্রিম বুকিং দিতে হবে । জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজের প্রতিকক্ষ একরাতের জন্য ভাড়া ৫০ টাকা , এল জি ই ডি’র কক্ষ ৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং সার্কিট হাউজে ৪০০ টাকা নেওয়া হয় । তবে ওইসব রেস্ট হাউজে সরকারী কর্মকর্তাদের নামে মাত্র ২০ থেকে ৫০ টাকায় থাকতে পারবেন । এছাড়া শহরের আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে হোটেল সম্পদ , হোটেল বাগানবাড়ি ও কাকলি গেস্ট হাউজ অন্যতম । এগুলোতে রুম ভাড়া ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ।
তবে এসি রুম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়ে থাকে ।
কোথায় খাবেনঃ
সীমান্ত এলাকায় ভালো মানের খাবার হোটেল নেই । শেরপুর জেলা শহরে ভালো মানের খাবার হোটেল রয়েছে হাতে গোনা মাত্র ২/৩ টি । তবে খাবার দাবারের ব্যাপারে যাদের নাক সিটকানোর অভ্যাস নেই তারা শহরের রাস্তার পাশের হোটেলগুলোতে খেয়ে তৃপ্তি পাবেন । পার্কে আসার পূর্বে শেরপুর হোটেলগুলো থেকে খাবারের প্যাকেট কিনে নিয়ে আসায় শ্রেয় ।
পড়ে পাহাড়ি এলাকায় খাবারের ব্যাবস্থা করতে না পারলে বিপদে পড়বেন কিংবা পার্কের খাবার আপনার পছন্দ নাও হতে পারে ।
অনুমিত খরচ
বাস ভাড়া
ঢাকা-নালিতাবাড়ীঃ ২০০ টাকা জনপ্রতি
বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ
সহকারী বন সংরক্ষক, শেরপুর। ফোন নং-০৯৩১-৬২৪৩৭ বর্তমান বন সংরক্ষকের সেল ফোন নং- ০১৭১২-৯৮৪৫০০
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
গজনী অবকাশ কেন্দ্র
সুত্রঃ ট্রাভেলওবিডি , sherpur.gov.bd , bengalinews24.com , touristguide24 , গুগল ইমেজ , ফ্লিকার ইমেজ ।
প্রয়োজনে নিচের ছবিগুলো বড় করে দেখুন । ট্রাভেল বিষয়ক আমার অন্যান্য পোস্টগুলি আমার ''ট্রাভেল বাংলাদেশ '' বিভাগে পাবেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।