ম্যাচটা জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ। মিউনিখের প্রথম লেগের ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে যাওয়াটাই শেষ পর্যন্ত কাল হলো রিয়ালের। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ঘরের উঠোনে তাই ২-১ গোলে জেতার পরেও টাইব্রেকারে হারের দুর্ভাগ্য বরণ করে নিতে হলো তাদের। বার্সেলোনাকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন লিগের ফাইনালে চেলসি উঠে যাওয়ার পর কাল রিয়ালের বিদায় এবারের ফাইনালটিকে করে তুলল অনেকটাই ‘অন্য রকম।
’
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জোড়া গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। বায়ার্নের পক্ষে একটি গোল ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আরিয়েন রোবেন। অ্যালিয়েনজ এরিনা ও সান্তিয়াগো বার্নাব্যু মিলে দুই দলের দ্বৈরথ অমীমাংসিত হয়ে যায় ৩-৩ গোলে। এরপর টাইব্রেকারের চরম নাটকীয়তা। ম্যাচের নায়ক রোনালদো টাইব্রেকারেই হয়ে ওঠেন ভিলেন।
মিস করে বসেন স্পট কিক। সেই সঙ্গে রিয়ালের আরেক তারকা কাকাও ব্যর্থ হন স্পট কিক থেকে গোল করতে। তাদের দুটি শট ঠেকিয়ে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক ন্যুয়ের। সার্জিও র্যামোস মারেন বারের ওপর দিয়ে। বায়ার্ন মিউনিখের পক্ষে ডেভিড আলাবা ও মারিও গোমেজ রিয়াল গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসকে বোকা বানান দারুণ শটে।
শেষ পর্যন্ত বাস্তেইন শোয়ানস্টাইগারের জয়সূচক স্পট কিক রিয়ালকে ছিটকে দেয় চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের পথ থেকে।
ম্যাচের ছয় মিনিটেই পেনাল্টি পেয়ে তা কাজে লাগায় রিয়াল। অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার শট পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ডেভিড আলাবার হাতে লাগলে প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে গোল করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে বায়ার্ন মিউনিখ। সেই আলাবার দুর্দান্ত একটি ক্রসকে খুব কাছাকাছি জায়গা থেকে গোলে পাঠাতে ব্যর্থ হন আরিয়েন রোবেন।
এর কিছু বাদেই মারিও গোমেজের একটি দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের হাত থেকে বেরিয়ে গেলে সুযোগ পেয়ে যান ফ্রাংক রিবেরি। কিন্তু রিবেরিকে গোলে শট নিতে দেননি স্যামি খেদিরা।
১৪ মিনিটে নিজের ও দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোলটি করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। জার্মান তারকা মেসুত ওজিলের দুর্দান্ত একটি থ্রু থেকে বল ধরে বক্সের মাথা থেকে বায়ার্ন গোলরক্ষক ন্যুয়েরের পাশ দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি।
এর ঠিক ১২ মিনিট পরেই পেনাল্টি পেয়ে যায় বায়ার্ন।
বক্সের মধ্যে ক্রুসের একটি ক্রসের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে পেপে মারিও গোমেজকে অবৈধভাবে বাধা দেন। আর তাতেই বায়ার্নের পক্ষে পেনাল্টির সংকেত দেন রেফারি। সেই পেনাল্টি কাজে লাগান ডাচ তারকা রোবেন। তবে রোবেনকে এ ক্ষেত্রে ভাগ্যবান বলতেই হবে। তাঁর শটটি ক্যাসিয়াস প্রায় ঠেকিয়েই দিয়েছিলেন।
ক্যাসিয়াসের হাতের ছোঁয়া লেগে বলটি জাল স্পর্শ করে।
প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার আগেই গোলের আরও এসেছিল দুই দলেরই সামনে। করিম বেনজেমার শট ঠেকিয়ে দেন ন্যুয়ের। মারিও গোমেজ ও রোবেনের দুটি শট ঠেকান ক্যাসিয়াস।
ম্যাচের স্কোরলাইন ২-১ থাকা অবস্থায় দুই দলই যেন একটু রক্ষণাত্মক হয়ে ওঠে।
কোনো দলই ওপরের দিকে খেলোয়াড় সংখ্যা বাড়াচ্ছিল না। এই সময় কোনো দলই তেমন একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তবে ৪৬ মিনিটের সময় একটি দারুণ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন মারিও গোমেজ। রোবেনের পাস থেকে বক্সের মধ্যে বল পেলেও তার নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হন তিনি। খেলার অতিরিক্ত সময়ের নয় মিনিটের সময় বায়ার্নের বক্সে বল পেয়ে গিয়েছিলেন পেপে।
কিন্তু তাঁর শট ন্যুয়েরের পরীক্ষা নিলেও তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি।
টাইব্রেকারে প্রথম স্পট কিক থেকে গোল করেন বায়ার্নের আলাবা। রিয়ালের প্রথম শটে ব্যর্থ হন রোনালদো। তাঁর শটটি ঠেকিয়ে দেন ন্যুয়ের। গোমেজ বায়ার্নের পক্ষে দ্বিতীয় শটেও গোল করেন।
এর পরপরই কাকার শটটি রোনালদোর শটের মতোই ঠেকিয়ে দেন ন্যুয়ের। বায়ার্নের টনি ক্রুস ও ফিলিপ লামের দুটি শট ঠেকিয়ে রিয়ালকে সম্ভাবনায় ফিরিয়েছিলেন ক্যাসিয়াস। কিন্তু সার্জিও র্যামোস বারের ওপর দিয়ে শট নিলে সেই সুযোগ কাজে লাগানো যায়নি। রিয়ালের পক্ষে টাইব্রেকারের একমাত্র জাবি আলনসো কাজে লাগান নিজের স্পট কিকটি। বাস্তেইন শোয়েনস্টাইগার শেষ স্পট কিকটি জাল ছোঁয়ালে বায়ার্ন পৌঁছে যায় চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।