মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আব্দুল কাদের মোল্লার রায়ের পরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সোল এজেন্ট হিসেবে নিজেদেরকে জাহির করে মাঠে নামলেন কিছু ব্লগার। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে সরাসরি প্রতিপক্ষ বানিয়ে বিচারকদের যাচ্ছে তাই গালি দিয়ে ফাঁসি দাবি করলো সব অপরাধীদের। চাই সে অপরাধী প্রমাণিত হোক বা না হোক। তার পরের কাহিনী সবার জানা। সে সম্পর্কে নাইবা বললাম।
শাহবাগে প্রথম দিন আন্দোলন শুরু হওয়ার পর মিডিয়ার পূর্ব পরিকল্পিত মাতামাতি শুরু হয়ে গেল। মিডিয়ার অতিরন্জিত প্রচারের ফলে সারা দেশের মানুষের মধ্যে কিছুটা উদ্দীপনাও তৈরি হলো। শুরুর কয়েকদিন হাজার হাজার লোকও হলো। আন্দোলনকারীদের চেয়ে অতি আবেগী কিছু রিপোর্টার, মিডিয়া, রাজনীতিবিদ, সুশীল থেকে তথাকথিত মিট মিট করে বেঁচে থাকা বামদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল এটাকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করল । আবেগে গদগদ অনেকে তথাকথিত তরুনদেরকে বীর হিসেবে আখ্যায়িত করল।
আর শাহবাগের চতুর্মুখি রাস্তা বন্ধ করে রাষ্টীয় নিরাপত্তায় থাকা এ চত্ত্বরের নাম দেওয়া হলো ”প্রজন্ম চত্ত্বর”।
সরকারও নিজেদের দোষ ঢাকতে এটাকে লুফে নিয়ে অনেক নাটক করল । তবে আন্দোলনের তৃতীয় দিন থেকে দৃশ্যপটে হাজির হলো আমার দেশের সম্পাদক,সময়ের সবচেয়ে সাহসী সন্তান মাহমুদুর রহমান। শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি রিপোর্ট করে শাহবাগীদের মুখোশ উম্মোচন করতে শুরু করল আমার দেশ পত্রিকা । রাষ্ট্র যন্ত্রের সব রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে এবং শাহবাগীদের হুংকার, লম্প-ঝম্প মাড়িয়ে সাহসিকতার সাথে স্রোতের বিপরীতে একাই লড়ে গেল আমার দেশ ।
মাহমুদুর রহমানের কল্যাণে দেশবাসী শাহবাগীদের আসল পরিচয় জানতে পেরে প্রজন্ম চত্ত্বর বিমুখ হতে শুরু করে । একজন ব্যক্তির জন্য মাঠে মারা পড়ল শাহবাগীরা। অথচ শত শত লোককে হাজার হাজার এবং হাজার হাজার লোককে লক্ষ লক্ষ লোক বলে নির্লজ্জভাবে প্রচার করতে থাকে তথাকথিত সুশীল নামধারী মিডিয়া। শাহবাগীদের চালাকী আর ভন্ডামী কৌশলে এড়িয়ে মানুষকে জোর করে গলধঃকরণের চেষ্টা করে দালাল কিছু রিপোর্টার।
লোক না হবার ভয়ে এমন দিনে প্রজন্ম চত্ত্বর থেকে প্রোগ্রাম ঘোষণা করা হয় যেদিন শাগবাগসহ ঢাবি ক্যাম্পাসে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়।
২১শে ফেবুয়ারি, ২৬শে মার্চ, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ১লা ফাল্গুন এবং ১লা বৈশাখসহ এমন দিনে সমাবেশ করে যেদিন এমনিতে হাজার হাজার লোক হয় শাহবাগের আশপাশে। শাহবাগীরা যদি জন মানুষের আকাংখার বাস্তবায়ন করতে চায় তবে বিশেষদিন ছাড়া অন্যদিনে সমাবেশ আহ্বান করে নিজেদের জনমানুষের সংগঠন প্রমাণ করার ঝুঁকি নিবে বলে সচেতন মানুষ আশা করে ।
পুলিশের প্রহরায় গুটিকয়েক লোক নিয়ে শহবাগ থেকে শহীদ মিনারে পতাকা মিছিল আর লাঠি মিছিল করে শাহবাগী চত্ত্বর একান্তই মিডিয়ার করুনায় নিভু নিভু ভাবে কোন মতে চলছে।
মিডিয়ার সামনে উমুক-তুমুককে প্রতিহত করার করার ঘোষণা দিয়ে সেলুনে পালানো এ কেমন কাপুরষতা তা বুঝে আসেনা। হেফাজতের যারা একাজ করছে তারা এটা ভাল করেনি।
তাদের বোঝা উচিত ছিল মিডিয়া কাঙ্গাল এ সমস্ত লোক সব সময় স্পটলাইনে থেকে নিজেদের ক্ষয়িঞ্চু শক্তির বল দেখানোর চেষ্টা করে। যে সমস্ত মিডিয়া এই রিপোর্টকে নীতিবাচক উপস্থাপন করেছে তাদের কাছে প্রশ্ন যারা লংমার্চ প্রতিহতের ঘোষনা দেয়, তাদের পলায়নপরতা কাপুরুষতার শামিল। কয়েক হালি লোক নিয়ে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষের বিশাল জনগোষ্ঠীর পায়ের তলায় পিষ্ট হবার কথা । তাদের জন্য এত মায়া কেন? যুদ্ধ ঘোষনা করে যদি বলা হয়, আমায় মারলে কেন? তাদের মত কাপুরুষদের যুদ্ধের ময়দানে না যাওয়া উচিত। পরে তারা হয়ে যায় সন্ত্রাসী! কি সেলুকাস!! প্রতিপক্ষের সাথে না পেরে সন্ত্রাস বলা নতুন এক নাটক।
কথায় কথায় যারা অনেককে খতম করার কথা বলে। তারা পাহলোয়ান না হলেও আপাতত ছোটখাট কারাতে ম্যান হবে। কিন্তু ২য় মুক্তিযুদ্ধের বীরপুরুষেরা যখন শিবির আসছে শুনে গরম তেলের কড়াইতে পড়ে হাসপাতালে যায়, তারা কেমন যোদ্ধা? কাজী ফিরোজ রশিদ সেদিনের এক টকশোতে বলেছিলেন, পুলিশের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিলে কোন শাহবাগী আর ভয়ে সোহরাওয়ার্দীতে প্রস্রাব করতেও যাবে না। এই যদি হয় ২য় মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্মের সাহস তাহলে কিভাবে অন্যদেরকে প্রতিহতের ঘোষনা করার সাহস পায়?
শাহবাগী চত্ত্বরের দাবি অনুযায়ী তাদেরটা তারুন্যের জাগরণ। কিন্তু শাপলা চত্ত্বরে যে তারুণ্য, তাদেরকে কি বলবেন? অনেককে দেখলাম হেফাজতকে সাদা বান্দর বলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে।
তারা যদি শাহবাগীদের প্রভু ভক্ত প্রাণীর সাথে তুলনা করে, তাহলে তাদের কেমন লাগবে? এখন আবার নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার ব্যাপার নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে গেছে। আজ এ ব্যাপারে আলোচনা করবো না, অন্য একদিন করবো। মুলত শাপলা চত্ত্বরের স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ দেখে শাহবাগীদের মাথা গেছে খারাপ হয়ে। তারা প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। কোন মতে খড়-কুটা ধরে বেঁচে থাকতে চায়।
আর সেজন্য দরকার মিডিয়ার করুনা আর নিজেদের চালাকি আর ভন্ডামী! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।