মুক্ত চেতনায় বিশ্বাসি। সবার মতকে প্রধান্য দিতে চেশ্টা করি। শাহেদ চৌধুরী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও বিএনপি সহযোগিতা করছে না। তারা ইলিয়াস আলীকে উপলক্ষ করে হরতাল, সন্ত্রাস, মানুষ খুন, অগি্নসংযোগ ও থানা লুটের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। ঘৃণ্য তৎপরতা চালাচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ঠেকাতে নতুন কৌশল নিয়েছে।
শেখ হাসিনা মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপকালে আরও বলেছেন, ২০০৪ সালের একুশ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ অনেক নেতাকর্মী নিহত হওয়ার পরেও হরতাল করেনি আওয়ামী লীগ। অথচ ইলিয়াস আলী উদ্ধারে সময় না দিয়েই হরতাল ডেকেছে বিএনপি। তারা ইস্যু খুঁজতে মরিয়া হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক ১৩তম সম্মেলনে যোগদান শেষে মঙ্গলবার সকালে দেশে ফিরেছেন।
পরে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীসহ দলের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতার সঙ্গে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল রাতে বেগম মতিয়া চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, চার সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, ভূঁইয়া মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন এবং কার্যকরী সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাদের কাছ থেকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপির হরতালসহ ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চান। এ সময় মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়ার বক্তব্য এবং বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েও অল্প-বিস্তর আলোচনা হয়েছে।
ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের সঙ্গেও আলাদাভাবে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি সবার শেষে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের সঙ্গে।
আওয়ামী লীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, হরতালের নামে দেশজুড়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ খুন করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ভাংচুর চালিয়ে জনগণের সম্পদ ধ্বংস করেছে। পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে।
সিলেটের বিশ্বনাথে থানা ভাংচুর ও অগি্নসংযোগ করেছে। তারা ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারে কোনো ধরনের সহযোগিতা না করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
এ সময় নেতারা ইলিয়াস আলীর ছাত্রজীবন ও পরবর্তীকালে সিলেট বিএনপির রাজনীতিতে তাকে ঘিরে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সন্ত্রাসের কারণে ইলিয়াস আলীর বহিষ্কার, ছাত্রদলের একাধিক নেতা হত্যা মামলায় ইলিয়াস আলীর জড়িত থাকা এবং ইলিয়াস আলীকে কেন্দ্র করে সিলেট বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদের কথাও উঠে আসে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষায়, ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা রহস্যজনক।
তা ছাড়া ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার অভিযানে র্যাবের সঙ্গে যাওয়ার পরেও খালেদা জিয়ার ধমকের পর ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনার চুপচাপ থাকার ঘটনাও প্রশ্নবিদ্ধ। এখন ইলিয়াস আলীকে উপলক্ষ করে বিভিন্ন অঘটন ঘটাচ্ছে বিএনপি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ঠেকাতে এটা তাদের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার জন্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে মাহবুবউল আলম হানিফকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
বৈঠকে বলা হয়েছে, পিলখানা হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। অথচ এ হত্যা মামলার আসামিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা। এ নিয়েও দেশকে অস্থিতিশীল করারও ষড়যন্ত্র চলছে।
উৎস....... সমকাল....২৫.০৪.২০১২ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।